মানুষের জীবন দিন দিন বাঁধা পড়ছে স্মার্টফোনের কাছে। তার সাথে যুক্ত থাকছে নানাধরণের পাসওয়ার্ড। আর এই পাসওয়ার্ড দিয়েই সেজে উঠছে কলকাতা পৌর কর্মচারী সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি (হাজরা পার্ক) পূজামণ্ডপ। জিয়ো বাংলা শারদ সম্মান ২০১৯ অনুষ্ঠান উপলক্ষে জিয়ো বাংলার স্টুডিওতে উপস্থিত ছিলেন এই ক্লাবের তিন সদস্য। পুজোর আড্ডা @জিয়ো বাংলা অনুষ্ঠানে সঞ্চালক শ্রেষ্ঠার সাথে পুজোর আড্ডা দিতে হাজির ছিলেন ক্লাবের সহ সম্পাদক শ্রী সায়নদেব চট্টোপাধ্যায়, ক্লাবের অন্যতম দুই সদস্য শ্রী হিমাদ্রিশেখর ব্যানার্জি এবং সৌভিক মুখার্জি।
আড্ডার ছলে তারা ভাগ করে নিলেন তাদের পুজো সম্পর্কে নানা কথা। তাদের কাছ থেকে জানা গেলো, এই বছর ৭৭তম বর্ষে পদার্পন করলো তাদের পুজো। ১৯৪২ সালে ভারতের গর্ব নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং চিত্তরঞ্জন দাসের হাত ধরে শুরু হয় এই পুজো। সমাজের নিম্নবর্গের মানুষদের জন্য বিশেষভাবে চালু হয় এই পুজো। তারপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ক্লাব কর্তৃপক্ষকে। ৭৭তম বর্ষে এই ক্লাবের থিম 'পাসওয়ার্ড'।
দৈনন্দিন জীবনে মানুষ যেভাবে স্মার্টফোন বা ডিজিটাল হওয়ার কারণে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে বিভিন্ন নম্বরের বেড়াজালে সেই বিষয়টিই মানুষের সামনে তুলে ধরতে চাইছে হাজরা পার্ক। জানা গেছে, এই ক্ষেত্রে নম্বরকে মানুষের জীবনের খলনায়ক হিসেবে দেখানো হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে কলকাতার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হাজরার মোড়ে পুজোটি অবস্থিত হওয়ার কারণে এই ক্লাবটিতে কিরকম ভিড় হয় জানা গেলো ক্লাবের সদস্যবৃন্দের কাছ থেকেই। তারা জানালেন, তৃতীয়ার দিন উদ্বোধনের পর অত্যন্ত বেশি ভিড় সামলানোর জন্য সাহায্য নেওয়া হয় প্রশাসনের। এর সাথেই হাজরা পার্ক দুর্গোৎসবের ক্লাবের নিজস্ব ভলেন্টিয়াররা সমানভাবে কাজ করেন। তাদের আগে থেকেই ফায়ার ট্রেনিং দিয়ে রাখা হয়। এছাড়াও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য মণ্ডপের কোনায় কোনায় সিসিটিভি বসানো থাকছে। আপৎকালীন পরিস্থিতি সামলানোর জন্য সেখানে উপস্থিত থাকবেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যবৃন্দ। ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নবমীর দিন মায়ের জন্য বিশেষ ভোগের আয়োজন করা হয় এবং সেই ভোগ প্রায় ছয় হাজার দলিত শ্রেণীর মানুষদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। নম্বর কিভাবে আমাদের দিনদিন যাঁতাকলে ফেলছে জানতে হলে সকলকে পৌঁছে যেতেই হবে হাজরা পার্ক দুর্গোৎসবের পুজো প্রাঙ্গনে।
তার জন্য নোয়াপাড়া কিংবা কবিসুভাষগামী মেট্রো করে এসে আপনাকে নামতে হবে যতীনদাস পার্ক মেট্রো স্টেশনে। সেখান থেকে কয়েকপা হাঁটলেই দেখতে পাবেন এই ক্লাবের সুসজ্জিত মণ্ডপটি।