ঘরে ফিরলেন নোবেলজয়ী। মঙ্গলবার সন্ধ্যে ৭টা ২০মিনিট নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছন অর্থনীতিতে এ বছর নোবেলজয়ী বাঙালি অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফুলের স্তবক ও উত্তরীয় দিয়ে স্বাগত জানানো হয় তাঁকে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু স্বাগত জানান অভিজিৎবাবুকে। মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দ করা একটি জওহর কোট, শাল ও দেওয়া হয় তাঁকে। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি থেকে গাড়ি পাঠাতে বারণ করেছিলেন, তাই গাড়ি আসেনি। কিন্তু মেয়র তাঁকে নিজের গাড়ি করে একেবারে বাড়ি অব্দি পৌঁছে দেন। বিমানবন্দর ছিল লোকে লোকারণ্য। বিমানের পাইলট তাঁকে ককপিটে বসতে অনুরোধ করেছিল কিন্তু তিনি তা বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাহার করলেও বিমানের বহু মানুষের সঙ্গে সেলফি তোলার আবদার মিটিয়েছেন হাসিমুখেই। বিমানবন্দর থেকে বাড়ি অব্দি আসার রাস্তা জুড়ে ছিল নোবেলজয়ীকে স্বাগত জানিয়ে তাঁর ছবি সহ ফ্লেক্স।
বাড়িতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই মা'কে জড়িয়ে ধরলেন নোবেলজয়ী। যথেষ্ট ক্লান্ত ছিলেন তিনি। নোবেল পাওয়ার পর থেকে বাড়িতে এত মানুষের আগমন ঘটছে তাই মা'ও ক্লান্ত। তাই সেই সময় কেউ কথা বলতে চাইছিলেন না। তবে বালিগঞ্জের আবাসনে ছিল উৎসবের ছোঁয়া। শঙ্খ ধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে। মা এবং ছেলে নিজের মতো কাটাতে চাইছেন এই কয়েক ঘন্টা। বৃহস্পতিবার অভিজিৎ ফিরে যাবেন, তবে পরে স্ত্রী এস্থারকে নিয়ে আবার সময় নিয়ে আসবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার ডিনারে অভিজিতের পছন্দের কাবাব, রুই মাছের কালিয়া, মুড়িঘন্ট, চাটনি এবং পায়েস হয়েছিল। আজ দুপুরে হয়েছে অভিজিতের পছন্দের ইলিশ মাছের পদ। দার্জিলিং-এর বিশেষ চা'পাতা কিনে রেখেছেন অভিজিতের মা তাঁর ছেলের জন্য, উপহার হিসেবে। বৌমার জন্য পাঠাচ্ছেন বালুচরি শাড়ি এবং নাতি-নাতনির জন্য পাঠাচ্ছেন আমসত্ব।
এর আগে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন নোবেলজয়ী। সৌজন্যসাক্ষাৎ হয়েছে এবং কথাও হয়েছে দু'জনের। তাঁদের বিভিন্ন সরকারি নীতি এবং তার প্রণয়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এও জানান, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃতিত্বে তিনি যথেষ্ট গর্বিত। মানবসমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে যে কাজ তিনি করেছেন, তা স্পষ্ট করা যায় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। অভিজিৎবাবুও প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেন, সরকারি নীতি দেখতে পাওয়া যায়না, সেই সব নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে কী মনোভাব কাজ করছে, সেটা জানা যায়না। সেই সব নীতির কার্য-কারণ ও লক্ষণগুলি জেনে যথেষ্ট ভালো লেগেছে অভিজিৎবাবুর। সম্পূর্ণ বৈঠকটি ছিল সদর্থক এবং আনন্দদায়ক বলে জানান, অভিজিৎবাবু।