অবশেষে চালু হতে চলেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প। সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত সাতদিনের একটি কৃত্রিম ট্রায়ালের মাধ্যমে প্রকল্পটির প্রাথমিক পর্যায়ের উদ্বোধন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের বিশেষ পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে, এই সাতদিন ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের সমস্ত বুকিং কাউন্টার খোলা থাকবে এবং প্রতিদিন চার ঘন্টা করে চলবে মেট্রো। বর্তমানে প্রকল্পটির সাথে প্রায় ৯০ জন মেট্রোরেল কর্মচারি নিযুক্ত রয়েছেন।
“প্রায় ৫.৭ কিমি দূরত্বের এই প্রক্রিয়াটি শুরু করার আগে আমাদের একটা ট্রায়ালের প্রয়োজন। প্রতিদিন চার ঘন্টা করে চলবে এই ট্রায়াল। ট্রেনের রেকগুলি লাইনে অথবা প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরিত করার সময় বহির্গত যাবতীয় প্রটোকল খতিয়ে দেখা হবে। সেক্টর ফাইভ, করুণাময়ী, সেন্ট্রাল পার্ক, সিটি সেন্টার, বেঙ্গল কেমিক্যাল, সল্টলেক স্টেডিয়াম- এই ৬টি স্টেশনের যাবতীয় ত্রুটি সম্পূর্ণভাবে পর্যবেক্ষন করা হবে। আমাদের মোটরমেন, নিয়ন্ত্রক দল ও বুকিং কর্মচারীদের এ ব্যাপারে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং অপারেশন শুরু হওয়ার সাথে সাথেই তাদের কাজে নিয়োগ করা হবে,” বিষয়টির বিবৃতি দিতে গিয়ে বললেন মেট্রো রেলওয়ের সিপিআরও ইন্দ্রাণী ব্যানার্জী।
সাতদিনের এই বিশেষ ট্রায়ালে বুকিং স্টাফেরা ‘যাত্রীদের’ টোকেন অথবা স্মার্ট কার্ড প্রদান করবেন, তারপর মেট্রো রেলের কর্মচারীরা ট্রেন অবধি হেঁটে গিয়ে তাদের যাত্রায় অবতীর্ণ হবেন। সময়সূচী প্রস্তুতের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে, প্রত্যেকটি কাজ এই সময়সূচী অনুযায়ী পরিচালন করা হবে। ট্রায়ালের জন্য প্রতিদিন ৩টি করে রেক ব্যবহার করার পরিকল্পনায় রয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। সাধারণত সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পৌঁছতে ১৬-১৭ মিনিট সময় লাগে, তবে ট্রায়াল চলাকালীন সম্পুর্ণ প্রক্রিয়াটি রেকর্ডের স্বার্থে, এ ক্ষেত্রে পুরো ট্রিপ’টি সম্পূর্ণ করতে ২০ মিনিট সময় নেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে।
একেবারে নতুন ও অত্যাধুনিক টেকনোলজি নিয়ে শহর কোলকাতায় প্রবেশ করতে চলেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। ট্রায়ালের সাতদিন মনিটরিং এর মাধ্যমে সমস্ত ট্রেন বিশেষভাবে পর্যবেক্ষন করা হবে। বিভিন্নরকম পরিস্থিতিতে, অ্যাক্সেলারেশন থেকে ব্রেকিং সিস্টেম- সমস্ত কিছুই পরখ করে দেখা হবে মনিটরিং এর মাধ্যমে। পাশাপাশি এমার্জেন্সি ব্রেক কেমন কাজ করছে, সে ব্যাপারেও পরিষ্কার হতে চাইছেন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। তবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো অটোমেটিক ট্রেন অপারেশনে (ATO) সক্ষম হলেও, ট্রেনের দরজা খোলা ও বন্ধ করার দায়িত্বে থাকবেন মোটরমেন। ট্রায়াল চলাকালীন অটোমেটিক ট্রেন প্রটেকশন(ATP) ব্যাবস্থাটি ব্যবহার করা হবে, যেখানে কঠিন ভূমিকা পালনের দায়িত্বে থাকবে মোটরমেন।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগে রয়েছে সেক্টর ফাইভ, করুণাময়ী, সেন্ট্রাল পার্ক, সিটি সেন্টার, বেঙ্গল কেমিক্যাল ও সল্টলেক স্টেডিয়াম স্টেশন। সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম হয়ে ফুলবাগান স্টেশনে প্রবেশ করবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো, এরপর দ্বিতীয় ভাগ তথা ফুলবাগান, শিয়ালদহ, এসপ্ল্যানেড, মহাকরণ, হাওড়া হয়ে হাওড়া ময়দান স্টেশনে গিয়ে শেষ হবে এই রুট। মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ হলেই দ্বিতীয় পর্যায়ের দিকে অগ্রসরের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প।