এবার আরও দ্রুত ছুটবে কলকাতা মেট্রো। যাত্রীদের সুবিধার্থে এবার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিতে চলেছে কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে। পরিষেবা শুরু করার ৩৮ বছর পরে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর পরিকাঠামোয় আসতে চলেছে বড়সড় রদবদল। মাত্র আড়াই মিনিটের ব্যবধানে চলবে এবার মেট্রোরেল। হতে চলেছে কোন নতুন পরিবর্তন?
কলকাতা মেট্রো সূত্রে খবর, উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর থার্ড লাইন এবার স্টিলের পরিবর্তে হতে চলেছে অ্যালুমিনিয়ামের। উত্তর-দক্ষিণ লাইনে দেড়শ সেকেন্ডের উন্নতির জন্য এই পদক্ষেপ করছে মেট্রো। এক্ষেত্রে ৩৮ বছর পর উত্তর-দক্ষিণের এই থার্ড লাইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। কলকাতা মেট্রো জানাচ্ছে দমদম থেকে মহানায়ক উত্তম কুমার মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত বসানো হবে এই অ্যালুমিনিয়ামের লাইন। এর জন্য ইতিমধ্যেই টেন্ডারও জারি করা হয়েছে। ২ বছরের মধ্যে এই কাজ সমাপ্ত হবে। মেট্রো জানাচ্ছে, এতে শক্তির ব্যবহার ৮৪ শতাংশ কমবে, যা বছরে প্রায় ১ কোটি টাকার মতো। এটি বসানোর খরচও স্টিলের থার্ড লাইনের চেয়ে কম। এই কাজ সম্পন্ন হলে সিঙ্গাপুর, বার্লিন, মিউনিখ, ইস্তানবুল লন্ডন, মস্কোর সঙ্গে একই সারিতে চলে আসবে কলকাতা মেট্রোর উত্তর-দক্ষিণ শাখাও।
অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেলে বিদ্যুতের অপচয়
ইস্পাতের তুলনায় অনেক কম। অত্যধিক রোধের কারণে বিদ্যুৎ পরিবহণের সময়ে ইস্পাতের থার্ড রেল গরমে খুব বেশি গরম হয়। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি একটানা বিদ্যুৎ প্রবাহের ক্ষেত্রে আরও রোধ বাড়িয়ে বেশি বাধার সৃষ্টি করে। এর ফলে ইস্পাতের থার্ড রেল থেকে
প্রায়ই স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হয়।তা ছাড়া, ট্রেনের বৈদ্যুতিক মোটরে তড়িৎ প্রবাহ অনিয়মিত হবার ঘটনাও দেখা যায়। তার ফলে মেট্রো চলাচলে ব্যাহত হয়। কলকাতা মেট্রো রেল জানাচ্ছে, এই অসুবিধা দূর করতেই পরের দিকে কলকাতায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ছাড়াও জোকা-তারাতলা এবং নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোয় অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল ব্যবহার করা হয়েছে।
এর ফলে এক কোটি টাকার বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। আর রেল বদলের জন্য যে পরিমান টাকা খরচ করা হবে তা উঠে আসবে তিন বছরের মধ্যেই। পাশাপাশি, কলকাতায় সুড়ঙ্গের মধ্যে আদ্র আবহাওয়ার কথাও মাথায় রাখা হয়েছে। দরপত্রেরও আহ্বান করা হয়েছে।
সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেই দৈনিক পরিষেবায় ব্যাঘাত না ঘটিয়ে এই কাজ করা হবে। দৈনিক ২০০মিটার করে এই ইস্পাত বদলের কাজ হবে।ইস্পাতের মতো অ্যালুমিনিয়াম পাত ঝালাই করে জোড়া লাগানো হবেনা। আলাদা পাত জোড়া হবে তার বদলে।
বর্তমানে, মেট্রোর উত্তর-দক্ষিণ লাইন বা ব্লু লাইনে সব চেয়ে কম পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে মেট্রো চলে। আড়াই মিনিটে এই ব্যবধান নামিয়ে আনতে হলে সিগন্যালিং ব্যবস্থাতেও বদল আনতে হবে। আধুনিক স্বয়ংক্রিয় কমিউনিকেশন বেস্ড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম (সিবিটিসি) পরিকাঠামো শুরু করার জন্য মেট্রোর থার্ড রেল বদলের কাজ করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থা নতুন না হলেও চার দশকের পুরনো ইস্পাতের থার্ড রেল বদলে সেখানে অ্যালুমিনিয়ামের রেল বসানো অবশ্যই অভিনব।