এ শহরের বুকে খোদিত রয়েছে রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-উপেন্দ্রকিশোর-সুকুমার-সত্যজিৎ-শক্তি-শীর্ষেন্দু-সঞ্জীব-সুবিমল-ফাল্গুনী -এঁদের মতো মহৎ সাহিত্যিক-কবি দের নাম। বাংলা-বাঙালি-কলকাতার শিক্ষা-সংস্কৃতি-সাহিত্য চর্চার সুনাম সারা বিশ্বে ছড়ানো। জানা যাচ্ছে, এবার দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ‘সাহিত্যের শহর’ তকমা পেতে পারে তিলোত্তমা। সব ঠিকিঠাক থাকলে ইউনেস্কো (ইউনাইটেড নেশন্স এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন)-এর তরফে ‘সিটি অব লিটারেচার’-এর সম্মান পাবে কলকাতা।
সূত্রের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, যে প্রক্রিয়ায় এই তকমা মিলবে সে ব্যাপারে সাহায্য করতে চেয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে সম্প্রতি একটি চিঠি পাঠিয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। চিঠিতে বলা রয়েছে, কলকাতা শহর ‘সিটি অব লিটারেচার’ সম্মান পাওয়ার যোগ্য। এর জন্য কলকাতা পুরসভাকে আবেদন জানাতে হবে ইউনেস্কোর কাছে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে একটি আবেদনপত্রও পাঠানো হয়েছে পুরসভায়। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে অনলাইনে সেই আবেদন পত্র পূরণ করে পাঠাতে হবে ইউনেস্কোয়।
শুধু কি তাই? ব্রিটিশ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, এ অব্দি সারা বিশ্বে মাত্র ২৮টি শহর ‘সিটি অব লিটারেচার’ বা 'সাহিত্যের শহর' সম্মান পেয়েছে। স্কটল্যান্ডের এডিনবরা শহর প্রথম ওই সম্মান পায়। এই তালিকায় এশিয়ায় একমাত্র শহর হিসেবে নাম রয়েছে বাগদাদের। তালিকায় যুক্ত হলে কলকাতা হবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম শহর।
কলকাতা এই সম্মান পেলে শহরের সুনাম তো বাড়বেই সেই সঙ্গে ইউনেস্কোর একাধিক প্রকল্পে কলকাতাকে যুক্ত করা হবে। সাহিত্য-সংস্কৃতি-শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের যোগাযোগ ঘটানো আরও সহজ হবে।
কোন প্রক্রিয়ায় কলকাতা যুক্ত হতে পারে 'সাহিত্যের শহর'-এর তালিকায়?
জানা যাচ্ছে, এটি একটি বড় প্রক্রিয়া। কলকাতার ঐতিহ্য, ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং সাহিত্যের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে অনলাইনে আবেদনপত্র পাঠাতে হবে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার ব্রিটিশ কাউন্সিলের পরামর্শও নিয়েছে কলকাতা পুর প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছে, কলকাতা শহরের আয়-ব্যয়, লোকসংখ্যা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, লেখক, শিক্ষাবিদ, প্রকাশনা এবং আরও কয়েকটি বিষয়ের উপরে তথ্য দিতে হবে আবেদনপত্রে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের তরফে জানানো হয়েছে, তারা এ ব্যাপারে সব রকম সহায়তা করবে। জুলাই মাসে আবেদনপত্রের উপরে ভিত্তি করে পর্যালোচনা হবে। 'সিটি অফ জয়'-এর মুকুটে 'সিটি অফ লিটারেচার' এর পালক উঠবে কি না, তা জানা যাবে আগামী নভেম্বর মাসে।