জেনে নিন ২০২৩ কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার সব খুঁটিনাটি

আজ থেকে শুরু হল কলকাতার বই পার্বণ। সল্টলেকের করুণাময়ী সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলা প্রাঙ্গনে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে ৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলা। ৩১ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার থেকে বই মেলা খুলে যাবে সকলের জন্য। দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা অবধি খোলা থাকবে মেলা। পাবলিশার্স ও বুকসেলার গিল্ডের আয়োজনে এই বইমেলায় এ বছর মোট ৪০০ স্টল এবং লিটল ম্যাগাজিন কর্নার থাকছে। এবারের স্থিম কান্ট্রি স্পেন। এছাড়াও ২০ দেশ অংশ নিচ্ছে বইমেলায়।

বইমেলার ‘থিম দেশ’ স্পেন এ বার কলকাতায় আনছে সে দেশের প্রথম সারির ২৫ জন লেখককে। স্প্যানিশ চলচ্চিত্রের পৃথক উৎসবও হবে কলকাতায়, ২৯-৩১ জানুয়ারি। এই তিন দিনে মোট ছ’টি স্প্যানিশ সিনেমা দেখানো হবে।

বইমেলায় ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ দিবস এবং ৭ ফেব্রুয়ারি স্পেন দিবস পালিত হবে। স্পেনের সঙ্গীতশিল্পীদের দল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরেও গানবাজনার অনুষ্ঠান করবে। ৯, ১০, ১১ ফেব্রুয়ারি বইমেলার সাহিত্য উৎসব। এবারের বইমেলায় শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হবে।

বইমেলায় আগত দর্শকদের সুবিধা করে দিতে ঢোকা এবং বেরোনোর জন্য মোট ৯ টি গেট রাখা হয়েছে বইমেলা প্রাঙ্গণে। এবছর থিম কান্ট্রি যেহেতু স্পেন, তাই স্পেনের টলেডো গেটের আদলে থাকবে একটি গেট। এছাড়াও বিশ্ব বাংলা গেটের আদলেও থাকবে গেট।

বিদেশি প্রকাশনাগুলির জন্য বরাদ্দ বইমেলার বড় দুটি হলগুলিকে মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং প্যারিচরণ সরকারের নামে নামকরণ করা হয়েছে। তাঁদের দ্বিশতবার্ষিকী জন্ম বছর স্মরণে এই উদ্যোগ। লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়নের নামকরণ করা হবে লেখক-সম্পাদক রমাপদ চৌধুরীর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে। এছাড়াও মৃণাল সেন এবং তরুণ মজুমদারের নামে একটি প্রেস কর্নার এবং দুটি মুক্তমঞ্চ থাকবে।

শিশুদের প্যাভিলিয়নে আবোলতাবোলের ১০০ বছর উপলক্ষ্যে বইয়ের চরিত্রদের দেখা যাবে প্যাভেলিয়নে। এই বছর শিশুদের জন্য সুকুমার রায়ের লেখা আবোল তাবোল-এর প্রায় ২০ হাজার কপি বিতরণ করা হবে। বিশেষভাবে সক্ষম শিশু, গরিব-দুঃস্থ শিশু এবং পথশিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হবে এই উপহার। কোভিডের কড়া বিধিনিষেধ থেকে মুক্তির পর পরে এই বইমেলাতে প্রচুর সংখ্যক বইপ্রেমীদের  সমাগম আশা করছে গিল্ড। বইমেলায় লটারির আয়োজনও থাকবে। সেই লটারির জিতলে ১৫ হাজার টাকার বই উপহার হিসাবে পাওয়া যাবে। রোজ হবে এই লটারি।

বইপ্রেমী মানুষের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত পরিমাণ পার্কিং এবং বাস ও মেট্রোর মত অন্যান্য পরিবহনে যাতায়াতের যাতে অসুবিধা না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে।

বইপ্রেমী জনতার সুবিধায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কড়িডোরে অতিরিক্ত ট্রেন চালাবে কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।  সোম থেকে শনিবার পর্যন্ত শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ এবং সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহের মধ্যে চলবে ১২০ টি ট্রেন। শিয়ালদহ থেকে সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে এবং সেক্টর ফাইভ থেকে সকালে ৭টায় প্রথম ট্রেনটি ছাড়বে।

৫ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি সেক্টর ফাইভ ও শিয়ালদা দু'দিক থেকেই ৪০ টি করে মোট ৮০ টি ট্রেন চলবে। গ্রিন লাইন তথা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোতে ওই দুদিন ১২ মিনিট অন্তর চলবে মেট্রো।

অন্যদিকে শিয়ালদা থেকে দুপুর ১২ টা ৫০ মিনিটে ও সেক্টর ফাইভ থেকে দুপুর ১ টায় ছাড়বে প্রথম মেট্রো ছাড়বে। শিয়ালদা থেকে রাতের শেষ মেট্রো ছাড়বে রাত ৯ টা ৩৫ মিনিটে। আবার সেক্টর ফাইভ থেকে রাতের শেষ মেট্রো ছাড়বে ৯ টা ৪০ মিনিটে।

এই বইমেলা উপলক্ষে রাজ্য সরকারের তরফেও থাকে বিশেষ বাসের বন্দোবস্ত। ময়ূখ ভবন কমপ্লেক্সে অস্থায়ী বাস টার্মিনাস করা হবে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম এবং সাউথ বেঙ্গল স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন কলকাতা বইমেলার সময় দর্শকদের সুবিধার্থে বিশেষ বাস পরিষেবা চালাবে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...