দেওয়ালি তথা কালীপুজোর পর দিল্লিতে যেমন বাতাসে দূষণের পরিমান ভয়ানক হারে বেড়ে গিয়েছিল, কলকাতাতেও বেড়েছিল যথেষ্ট। ৬ নভেম্বরে দিল্লির থেকেও কলকাতার বাতাসে দূষণের পরিমান ছিল বেশি। কালীপুজোর রাতে কলকাতার বাতাসে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা পৌঁছে গিয়েছিল প্রতি ঘন মিটারে এক হাজারের বেশি মাইক্রোগ্রাম। তবে গত দু'দিনের বৃষ্টি আর দমকা বাতাসের জেরে এক ধাক্কায় শহরের বাতাসের মান অনেকটাই উন্নত হয়েছে। রবিবার সারা দেশে যেখানে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছিল ৩২৫, সেখানে কলকাতায় এদিন তার মান ছিল ৪১।
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতে কলকাতার ক্ষেত্রে দূষণের অন্যতম দু'টি দিক, পরিবহন এবং নির্মাণ ক্ষেত্র। বায়ু দূষণের বেশিরভাগই হয় এগুলি থেকে। যানজট নিয়ন্ত্রণ, শহরের রাস্তা ধোওয়া, নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে জল ছেটানোর মত ব্যবস্থাগুলি নিলে বায়ু দূষণের পরিমাণ বেশ খানিকটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এক ধাক্কায় বাতাসের মান উন্নত হওয়ার কারণ হল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া। এ দিন ভিক্টোরিয়া, যাদবপুর, বালিগঞ্জ, ফোর্ট উইলিয়াম, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কেন্দ্রগুলির তথ্য থেকেই দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘন্টায় তার গড় মান ছিল জাতীয় স্তরে নির্ধারিত মানের চেয়ে অনেকটাই কম।
পাশাপাশি অপর এক পরিবেশবিজ্ঞানীর মত, কলকাতায় পিএম ২.৫ এবং পিএম ১০-এর মাত্রা নিশ্চিতভাবেই কমেছে বুলবুলের ফলে। উপকুলবর্তী এলাকা থেকে জলীয় বাষ্প সমেত বায়ু শহরে প্রবেশ করার কারণে কলকাতার বাতাসে ওজোনের পরিমান বেশ খানিকটা বেড়েছে। এর সঙ্গে শহরে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণও বেশ খানিকটা বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, শীতে বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়ে, কারণ এই সময় বাতাস ভারি হয়ে যায় এবং তার গতিবেগও কম থাকে। তবে দূষণের উৎসগুলি কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে, তার ওপর নির্ভর করছে এই দূষণকে কিভাবে স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।