বাতাসে বসন্ত আর সেই হাওয়ায় ভর করে এসে পড়েছে দোল উৎসবও। ক্যালেন্ডারের পাতায় বেশ কয়েকদিন দেরী থাকলেও শুরু হয়ে গিয়েছে রঙের তোড়জোড়। দোল পূর্ণিমা ঋতুচক্রের শেষ উৎসব।
হোলি চৈত্র কৃষ্ণ প্রতিপদে পালিত হয়, ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের পূর্ণিমার পরের দিন এবং হোলিকা দহন বা ন্যাড়াপোড়া ফাল্গুন পূর্ণিমায় প্রদোষ কাল মুহুর্তে করা হয়।
২০২৩-এর দোলযাত্রা ৭ মার্চ, ২২ ফাল্গুন। দোলের পরদিন হোলি। এবছর হোলি পালিত হবে ৮ মার্চ। পূর্ণিমা তিথি পড়বে ৬ মার্চ সোমবার, বিকেল ৪টে ১৮ মিনিট থেকে। তিথি শেষ হবে ৭ মার্চ মঙ্গলবার, সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে।
এই তিথিকে গৌর পূর্ণিমাও বলা হয়। এটি চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মতিথি হিসেবে পালিত হয়। পূর্ণিমার দিন শ্বেত শুভ্র চাঁদ ওঠে, বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মানুষ এই চাঁদকে শ্রী চৈতন্য দেবের প্রতীক মনে করেন। তাই এই উৎসব গৌর পূর্ণিমা উৎসব।
দোলে সব বিভেদ ভুলে মানুষ মেতে ওঠে রঙের উৎসবে, তবে এর কতগুলি পর্ব আছে। সবকটি পর্বের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে নানা কাহিনি।
দোলাযাত্রার আগের দিন হয় ন্যাড়াপোড়া, হোলির আগের দিন হয় হোলিকা দহন। পুরনোকে আগুনে পুড়িয়ে নতুন হয়ে ওঠার বার্তা দেওয়া হয়। ন্যাড়া পোড়া বা হোলিকা প্রথা আসলে অশুভর নাশ হয়ে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠার বার্তা দেয়।
পুরাণ কাহিনি অনুসারে এদিন রাক্ষস রাজা হিরণ্যকশ্যপের বোন হোলিকার হাত থেকে নিজের ভক্ত প্রহ্লাদকে রক্ষা করেছিলেন বিষ্ণু। হিরণ্যকশ্যপকেও এদিনই বধ করেন নারায়ণ। হোলিকা দহনে ভক্তরা নরসিংহের পূজা করে। লোক বিশ্বাস হোলির চাঁচড়ের সময় আগুনে নারকেল দিলে ঋণের বোঝা দূর হয়।
উপবাস করে হোলিকা দহনেরও পুজো করা হয়। ঘুটের মালা, রোলী, গুড় গোটা অন্ন, গুজিয়া, গম নিবেদন করা হয় হোলিকার আগুনে। হোলিকার আগুনকে প্রদক্ষিণ করার নিয়ম ।
ফাল্গুন পূর্ণিমার দিন নারায়ণ আর রাধাকৃষ্ণের পুজো করা হয়। স্নান সেরে শুদ্ধ হওযার নিয়ম রয়েছে। তার পর সাদা বস্ত্র ধারণ করে পুজোয় বসতে হয়। বাড়িতে যজ্ঞ করা যায় এদিন।