কচি ধানের শিষ দুলতে থাকে শরৎ হাওয়ায়। যেদিকে তাকে শুধুই সবুজ। বর্ষা শেষে সদ্য স্নান সেরে উঠেছে প্রকৃতি। ধান্যে, শস্যে এবার তার পূর্ণ হয়ে ওঠার পালা। শেষ রেশ মানুষের মনেও।
প্রতিবছর ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশী বা পার্শ্ব একাদশীর দিন করম পরবে মেতে ওঠে মানভূমের মানুষ । এই উৎসব প্রকৃতির উৎসব। তারুণ্যকে উদযাপনের উৎসব।
পুরাণ এবং প্রবচন বলে পার্শ্ব একাদশীর দিন বাসুকী নাগ ডান থেকে বাম পাশ ফেরেন।
করম পরবে ব্রত রাখে কুমারী মেয়েরা। দুর্গার প্রতিরূপ হিসেবে তাদের সম্মান জানানো হয় এই দিন।
এই উৎসব আসলে কৃষি ভিত্তিক উৎসব। শবর, লোহার, পাহাড়িয়া, মুন্ডা, ওঁরাও, সরাক, মাহালি উপজাতির মানুষরা পালন করে থাকেন।
মূল পূজার প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে কুমারী মেয়েরা এবং বিবাহিতা নারীরাও ব্রত শুরু করেন। ছোট ছোট বাঁশের ডালার মধ্যে নদীর বালি রেখে তার মধ্যে বিভিন্ন রকমের দানা শস্য বপন করা হয়। এই ডালাকে বলা হয় ‘জাওয়া’। প্রতিদিন সকালে জাওয়াতে হলুদ জল দেওয়া হয়। জাওয়া ঘিরে প্রতি সন্ধ্যায়মেয়েরা নাচ ও গান করে থাকে। এই নাচকে বলে জাওয়া নাচ।
করম পরবে প্রকৃতিকে আবাহন করা হয়। নারীই প্রকৃতি। তাই এই উৎসব নারী কেন্দ্রিক। করম দেবতার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য লৌকিক দেবতারও পুজো করা হয়। এই পুজোর আসল বার্তা প্রকৃতির কাছে মানব সভ্যতার মঙ্গল কামনা।