"আমি চির-বিদ্রোহী বীর--আমি বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির!" -পিছিয়ে পড়ার নয়, জীবনে এগিয়ে চলার লড়াইই সবসময় ধরা পড়েছে তাঁর কথায়-গানে। মানুষ এখনও এক বাক্যে তাঁকে চিনে নেন 'বিদ্রোহী' কবি হিসেবে। সেই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন ১১ জ্যৈষ্ঠ। তাঁর ১২০তম জন্মদিনে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায় পরিচালিত ছবি 'কন্ঠ'-এর পক্ষ থেকে তাঁকে 'বিশেষ' ভাবে ট্রিবিউট জানানো হয়েছে।
উইনডোজ প্রযোজিত, শিবপ্রসাদ-নন্দিতা পরিচালিত 'কন্ঠ'-এর লড়াইটা একজন বাচিক শিল্পী- অর্জুন মল্লিকের, যিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে হারিয়ে ফেলেন তাঁর জীবনের রসদ-নেশা-পেশা 'কন্ঠ'কেই। এ অবস্থায় পিছিয়ে না পড়ে লড়াই জিইয়ে রেখে কীভাবে অর্জুন নতুন জীবন আর আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে, সেই গল্পই বলে 'কন্ঠ। ছবিতে অর্জুন মল্লিকের চরিত্রে শিবপ্রসাদ নিজেকে প্রজন্মের অন্যতম যোগ্য অভিনেতা হিসেবে পেশ করেছেন ঠিকই, তবে বাস্তবে এই কাহিনীর নায়ক ছিলেন বিভূতি চক্রবর্তী, তাঁর স্বরে-শ্বাসনালীতে বাসা বেঁধেছিল ক্যান্সার। অস্ত্রোপচারের পর তিনি হারিয়েছিলেন গলার স্বর। দীর্ঘ লড়াই চালিয়ে, খাদ্যনালির সাহায্যে ফের ফিরে পেয়েছিলেন সেই আওয়াজ। নিজে সুস্থ হয়েই থামেননি। শ্বাসনালিতে ক্যান্সার হলে কীভাবে অস্ত্রোপচারের পর খাদ্যনালির মাধ্যমে আওয়াজ ফিরে পাওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে বই লিখেছিলেন। ক্যান্সার আক্রান্তদের থেরাপিও করাতেন। ক্যান্সার ও এর বিরুদ্ধে লড়াই সাধারণ মানুষকে এই দুই বিষয়ে ওয়াকিবহাল করতেই শিবপ্রসাদ-নন্দিতা পর্দায় তুলে ধরছেন বিভূতির জীবন, তাঁর অনুপ্রেরনা আর হাল না ছাড়ার মন্ত্রই 'কন্ঠ'-এ বেজেছে।
এই ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে কাজী নজরুল ইসলামের লেখা 'বিদ্রোহী' কবিতার কিছু অংশ। কবিতাটির সেই অংশ বিশেষ কন্ঠ, বিশেষ ব্যবস্থাপনায় একটি মিউজিক্যালের মাধ্যমে পরিবেশিত হয়েছে, যা ছবির একটি অন্যতম আকর্ষনও। কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিনের উপযুক্ত উপহার বলাই যেতে পারে কন্ঠের এই বিদ্রোহী-'ট্রিবিউট'কে।