কালো পিরামিডের আকারে নির্মিত কান্তজিউ মন্দিরে পূজিত হন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ

বাংলাদেশের প্রাচীন মন্দিরগুলির মধ্যে একটি হল কান্তজীর মন্দির। ওপার বাংলার দিনাজপুরে অবস্থিত এই মন্দিরটির ১৭২২ সালে নির্মাণ কার্য শুরু করেছিলেন মহারাজা প্রাণনাথ। তারপর বাবার ইচ্ছাপূরণ করতে প্রাণনাথের দত্তকপুত্র রাজা রামনাথ রায় মন্দিরের নির্মাণ কার্য শেষ করেছিলেন ১৭৫২ সালে। সম্পূর্ণ মন্দিরটি দেওয়ালে পোড়ামাটির কাজ করা রয়েছে। প্রাচীন মন্দিরটি নবরত্ন মন্দিরগুলোর মধ্যে একটি। অর্থাৎ মন্দিরের শিখরে রয়েছে নয়টি শিখর। যদিও ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে মন্দিরের চূড়া ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কৃষ্ণ বর্ণের পিরামিড আকৃতির মন্দিরটি উপরের দিকে মোট তিনটি  ধাপ রয়েছে। আকারে বর্গাকৃতির মন্দিরটি একটি আয়তাকার প্রাঙ্গনের উপর অবস্থিত। মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ৫০ ফুটেরও বেশি। মন্দিরের নিচতলায় রয়েছে মোট চারটি আয়তাকার বাড়ান্দা। এছাড়াও চার প্রকোষ্ঠের বাইরে রয়েছে মোট ২১ টি খিলান দরজা। মন্দিরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ২৭ ও ৩টি দরজা আছে।

ভক্তদের ধারণা ১৭০৪ সালে এই মন্দিরটি তৈরি করার পর সেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় বৃন্দাবন থেকে ভগবানের মূর্তিটি সেই মন্দিরে আনা হয়েছিল। তবে এখন মন্দির দেবালয় পরিত্যক্ত। মন্দিরের দেওয়াল রামায়ণ, মহাভারতের বিভিন্ন চরিত্রের, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও সেই সময় গ্ৰাম বাংলার পরিস্থিতি কেমন ছিল সেই ছবির আঁকা রয়েছে। ১৯৬০ সালে বাংলাদেশ সরকার এই প্রাচীন মন্দিরটির সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয়।

প্রতিদিন পুজো-অর্চনার পাশাপাশি মন্দির চত্বরে একটি মেলা আয়োজন করা হয়। কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে  শ্রীকৃষ্ণ গোপীদের নিয়ে বৃন্দাবনে রাস উৎসবে মেতে ওঠেন। এই সময় মন্দির প্রাঙ্গনে ঐ মেলা বসে। বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত থেকেও বহু মানুষ ভিড় জমান এই মন্দির চত্বরে। বাংলাদেশের এই ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মন্দিরটি দেখতে আসতে হলে ওপার বাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে বাসে দিনাজপুরে আসার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে কান্তনগর গ্ৰামে ঢেঁপা নদীর তীরে অবস্থিত এই মন্দির।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...