সতীপীঠঃ কামাখ্যাধামে দেবী আদ্যাশক্তি পরম রহস্যময়ী ‘মা কামাখ্যা’

আসামের কামাখ্যা। ‘কামাখ্যা’ এই কথাটি উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনে ভিড় করে অজস্র অলৌকিক অপার রহস্যমাখা গল্পগাথা; যা পূর্বপুরুষ-পরম্পরায় সকলেরই শোনা। আমাদের কারও কাছে এই স্থান তন্ত্রমন্ত্র শাকিনী-ডাকিনী-হাকিনী পিশাচসিদ্ধের দেশ; কারও কাছে এই স্থান ভিনদেশি পুরুষকে ভেড়া বানিয়ে রাখা কুহকিনী নারীদের দেশ; কারও কাছে এই স্থান গূঢ় তন্ত্রসাধনার আদর্শ ভূমি; আবার কারও কাছে এই স্থান পরম পবিত্র পুণ্য শাক্ততীর্থ ‘কামাখ্যাধাম’।

এই যে, এই সব কিংবদন্তি আর গল্পগাথা ছড়িয়ে কামাখ্যাকে পরম রহস্যময় অলৌকিক এক দুর্লভ ভূমি করে রাখার সচেতন প্রচেষ্টা; তার ঐতিহ্য অনেক প্রাচীন। সুপ্রাচীনকালে এই অরণ্য-পর্বতময় অঞ্চল অত্যন্ত দুর্গম ছিল, ভক্তদের মধ্যে গুটিকয়েকজনমাত্র দুর্গমতা জয় করে সেখানে তীর্থ করার সৌভাগ্য অর্জন করতেন, বাকিরা তাঁদের মুখেই শুনতেন তীর্থের মাহাত্ম্যগাথা; ফলে শোনাকথার পরতে পরতে রহস্য বাড়ত এবং তা নির্বিচার বিশ্বাসে ভর করে বংশপরম্পরায় চারিয়ে যেত আমাদের মধ্যে। যা আজও প্রবাহিত হয়ে চলেছে।

যাই হোক, এই যে কামাখ্যার রহস্যময়তা; তার অন্তর্মূলে একজনই আছেন, তিনি দেবী আদ্যাশক্তি। দেবীর পীঠ ভক্তজনের কাছে ‘যোনিপীঠ’ বলে পরিচিত। কেননা, এখানে ভগবান বিষ্ণুর সুদর্শনে কর্তিত হয়ে দেবী সতীর যোনিদেশ পতিত হয়েছিল। এই পীঠ শুধু একান্ন সতীপীঠের অন্যতম পীঠ নয়; যে চারটি পীঠ ‘আদি সতীপীঠ’-হিসেবে স্বীকৃত, এটি তার মধ্যে একটি। ‘কালিকাপুরাণ’, ‘গরুড়পুরাণ’ প্রভৃতি পুরাণগ্রন্থে এই পীঠের মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে।

আসামের যে-স্থানে দেবী সতীর যোনি পতিত হয়েছিল, তা এখন ‘কামাখ্যা’ নামে প্রসিদ্ধ হলেও পৌরাণিককালে ‘কুব্জিকা’ নামে পরিচিত ছিল (তখন আসামও ‘কামরূপ’ কিংবা ‘প্রাগজ্যোতিষপুর’ নামে খ্যাত ছিল)। সেই সময় ব্রহ্মপুত্র নদীর কূলে কচ্ছপের পীঠের মতো বক্র এক বিস্তৃত ভূমি ছিল এই কুব্জিকা। সিদ্ধ-শক্তিপীঠ গড়ে ওঠার জন্য তন্ত্রমতে এমন ভূমিই আদর্শ।

কিন্তু তবুও এই ভূমিতে যখন দেবী সতীর যোনি পতিত হল, তখন তার বিপুল বর্ধমান ‘তেজঃ’ভার মেদিনী সহ্য করতে পারলেন না। কাতরভাবে সাহায্যের জন্য তিনি প্রার্থনা জানালেন ত্রিদেবতার কাছে। তাঁর প্রার্থনায় তুষ্ট হয়ে ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর যথাক্রমে শ্বেত, বরাহ ও নীল নামে পাশাপাশি তিনটি পর্বতের রূপ ধারণ করে পীঠভার মাথায় তুলে নিলেন। কিন্তু আদ্যাশক্তির সেই বর্ধমান তেজ তাঁরাও ধারণ করতে অক্ষম হলেন। তিনটি পর্বত ক্রমশ মাটির অতলে ডুবে যেতে শুরু করলো। তখন মেদিনীর প্রার্থনায় স্বয়ং দেবী জাগ্রত হয়ে আপন ভার আপনিই গ্রহণ করলেন, তিন পর্বতকে রক্ষা করলেন এবং আপন নিবাস নির্দিষ্ট করলেন নীল পর্বতে। এই পর্বত যেহেতু স্বয়ং শিব, তাই এখানে শিব-শক্তি সর্বদা একত্রে অবস্থান করেন বলেই ভক্তজনের বিশ্বাস।

নীল পর্বতে (আকৃতির দিক থেকে এটি পাহাড়) অবস্থিত কামাখ্যাধামের দূরত্ব আসামের গুয়াহাটি শহর থেকে মাত্র আট কিলোমিটার। শহর থেকে পাহাড়ে দেবীমন্দিরের নিকট অব্দি বাঁধানো সুন্দর সড়ক রয়েছে। মন্দির অব্দি পৌঁছনোর জন্য আসলে পাহাড়ের চারিদিকে চারটি পথ রয়েছে। পৌরাণিক কিংবদন্তি অনুসারে এই চারটি পথ কিন্তু ‘নরক’ নামের এক অসুরের তৈরি।

পৌরাণিক কাহিনিতে বলা হয়েছে যে, এখনকার আসাম বা তখনকার কামরূপ বা প্রাগজ্যোতিষপুর গড়ে উঠেছিল এই নরকাসুরের হাতেই। তিনিই ছিল এখানকার রাজা। আসলে একদিন শিকারের সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে তিনি হাজির হলেন অরণ্যে ঢাকা নীল পর্বতের চূড়ায়, দেবীস্থানে। তখন লীলাময়ী দেবী আগন্তুক এই নরকাসুরকে সুন্দরী যুবতী এক কুমারী কন্যারূপে দর্শন দিলেন। কন্যার রূপে মুগ্ধ হলেন নরকাসুর। দিলেন বিবাহের প্রস্তাব। তখন কন্যারূপী দেবী জানালেন যে, এ-প্রস্তাবে তাঁর একটি শর্ত আছে। এক রাতের মধ্যে নরকাসুর যদি পাহাড়ের চারিদিক থেকে চারটি পথ তৈরি করে মধ্যিখানে একটি বিশ্রামস্থান তৈরি করে দিতে পারেন; তাহলে বিবাহে তাঁর আপত্তি নেই।

দেবীর শর্তে রাজি হয়ে সন্ধ্যা নামতেই নরকাসুর লাগে পড়লেন কাজে। তিনি তাঁর তপস্যালব্ধ অমিতশক্তিতে রাত্রি শেষ হবার আগে চারটি পথ তো তৈরি করলেনই; সেইসঙ্গে বিশ্রামস্থানে একটি গৃহের নির্মাণও অনেকদূর এগিয়ে ফেললেন। তাই দেখে দেবী প্রমাদ গুণলেন। তিনি ভেবেছিলেন তাঁর শর্তপূরণ নরকাসুর করতে পারবেন না এবং এভাবেই তাঁর প্রস্তাব উপেক্ষা করা যাবে! কিন্তু কাজে উল্টোটা হতে দেখে দেবী এবার ছলনার আশ্রয় নিলেন, বিশ্রামগৃহ সম্পূর্ণ হবার আগেই মায়ামোরগ নির্মাণ করে তাকে দিয়ে অসময়ে ভোরের ডাক ডাকিয়ে দিলেন। এতে নরকাসুর, কাজ শেষ হবার আগেই ভোর হয়ে গেছে ভেবে হতাশ ও চরম ক্ষুব্ধ হয়ে কাজ বন্ধ করে দিলেন। মায়ার প্রভাবে সত্যমিথ্যা বিচারের ক্ষমতাই তাঁর যেন রইল না। তারপর যখন বিভ্রম দূর হল, বুঝলেন তিনি ছলনার শিকার; তখন অসহায় ক্রোধে মায়ামোরগ হত্যা করে নিষ্ফল ক্রোধে নীল পর্বত ত্যাগ করলেন। যেভাবেই হোক শর্তভঙ্গের ফলে তাঁর আর দেবীকে পাওয়া হল না।

দেবীকে নরকাসুর না-পেলেও দেবীর লীলায় ভক্তজন দেবীর থানে যাওয়ার জন্য চারটি পথ পেল, পেল একটি অসম্পূর্ণ বিশ্রামস্থল। এই পথ বেয়েই আশপাশের জনপদ থেকে ভক্তজন দেবীর লীলার টানে আসতে লাগল তাঁর পীঠে উপাসনার জন্য। ধীরে ধীরে দেবী ভক্তের সমস্ত কামনা পূরণের মধ্য দিয়ে ‘সর্বকামনা পূর্ণকারিণী দেবী’ অর্থাৎ ‘কামাখ্যা’ নামে আরাধিত হতে লাগলেন। দেবীর নামে তাঁর পীঠস্থানও ক্রমে ক্রমে ‘কুব্জিকা’ থেকে কালের কোন এক বাঁকে এসে ‘কামাখ্যা’ হয়ে উঠল। আর দেবী যেহেতু নরকাসুরকে কুমারীরূপে দর্শন দিয়েছিলেন, তাই ভক্তজন তাঁকে শুরু থেকেই 'কুমারী' রূপে আরাধনা করতে শুরু করলেন।

নীল পাহাড়ের উপরে মন্দিরের পাদদেশে যেখানে সড়ক শেষ হয়, গাড়ি এসে থামে; সেখান থেকে মন্দিরে ওঠার জন্য বেশ কিছু প্রশস্ত সিঁড়ি রয়েছে। সিঁড়ির পাশের ঢালে পাণ্ডাদের বাসস্থান ও বাড়ি। সে-সব পেরিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় বেশ প্রশস্ত ভূমিতে মন্দিরের প্রাঙ্গণ। সেখানে রয়েছে অগণিত ভক্তজনের হররা, নাটমন্দির ও মূল মন্দির। দেবীর এই মন্দির গড়ে ওঠার পেছনেও দুটি কিংবদন্তি প্রচলিত রয়েছে। একটি পুরাণঘেঁষা, অপরটি ইতিহাস ঘেঁষা।

পৌরাণিক কিংবদন্তি অনুসারে, দেবীর পীঠস্থানে প্রথম মন্দির তৈরি করিয়েছিলেন স্বয়ং কামদেব। ঘটনাটা ঘটেছিল এই ভাবেঃ

এদিকে দেবী সতী যখন দেহত্যাগ করে হিমালয়ের ঘরে পার্বতীরূপে জন্মগ্রহণ করলেন। বড় হয়ে বিবাহযোগ্যা হলেন। ওদিকে শিব তখনও সতীর স্মৃতিকে আশ্রয় করে উদাসীন হয়ে রইলেন। দেবতারা দুজনের বিবাহ দেবার জন্য নিজেদেরে তাগিদে উদগ্রীব হলেন। এই অবস্থায় শিবের মনে সংসারের কামনা জাগানোর জন্য কামদেবকে পাঠালেন তাঁর কাছে। সেই কাজে কামদেব মদনবাণে শিবকে বিদ্ধ করতেই মহা অঘটন ঘটে গেল; চরম ক্রোধে শিবের তৃতীয় নয়ন খুলে গেল, তাতে দারুণ অগ্নিস্রোতে কামদেবের কায়া ছাই হয়ে গেল। কামদেব কায়াহীন হলে রতি কাঁদতে কাঁদতে শিবের পায়ে পড়লেন। তখন শিব শান্ত হয়ে বললেন যে, কামদেব যদি নীল পর্বতের সতীপীঠে মন্দির নির্মাণ করে দেন, তাহলে পুনরায় কায়া ফিরে পাবেন।

তারপরই শিবের নিদান মেনে দেবী কামাখ্যার পীঠে সুদৃশ্য এক পাথরের মন্দির নির্মাণ করে দিয়ে কামদেব কায়া ফিরে পেয়েছিলেন, মুক্তি পেয়েছিলেন শিবের রোষ থেকে। আর ভক্তজন এভাবেই পেয়েছিল দেবীর প্রথম মন্দির।

কিন্তু এই মন্দির তৈরির পরই মারাত্মক এক সমস্যা দেখা দিল। দেবীর মাহাত্ম্যে সকল ভক্তজন অশেষ পুণ্যে অক্ষয় স্বর্গে বাস করতে শুরু করলো। তখন যমরাজ কর্মহীন হতে শুরু করলেন। যমলোক ছারখারে যেতে লাগল। এই অবস্থায় শিবের চরণে এসে পড়লেন যম। তিনি এই বিপদ থেকে উদ্ধারের নিদান চাইলেন শিবের কাছে। বিপদের গভীরতা বুঝে মহাদেব দেবী উগ্রতারাকে পাঠালেন দেবীর পীঠস্থান থেকে সকল ভক্তদের সরিয়ে দিতে। তাঁর আদেশে উগ্রতারা সকলকে সরিয়ে যখন ঋষি বশিষ্ঠকে সরাতে গেলে তা বশিষ্ঠের সম্মানে লাগল, তখন মহা ক্ষুব্ধ হয়ে বশিষ্ঠ দেবীর পীঠ লুপ্ত হওয়ার অভিশাপ দিলেন! এরপরই এক প্লাবন এসে মন্দির ধ্বংস করে দেবীর পীঠ পলির তলায় ঢেকে ফেলল। এভাবেই সেদিন সাধারণের সামনে থেকে লুপ্ত হয়ে গেল দেবীর জাগ্রত পীঠ।

এবার আসি ঐতিহাসিক কিংবদন্তির কথায়:

কামদেবের মন্দির ধ্বংস হওয়ার কয়েক সহস্র বছর পরের কথা। কোচবিহারের রাজা বিশ্বসিংহ একবার শত্রুদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে আশ্রয় নিলেন নীল পাহাড়ের চূড়ার গহন অরণ্যে। রাজার অসহায় অবস্থা দেখে দেবীর দয়া হল। তিনি বৃদ্ধাবেশে রাজার কাছে এসে ঢিবির মতো আপন পীঠস্থান দেখিয়ে যথাবিধি পূজার উপদেশ দিয়ে বললেন যে, এখানে দেবী অদ্যাশক্তি কামাখ্যার গুপ্ত পীঠ রয়েছে, তিনি সকল ভক্তের মনস্কামনা পূর্ণ করেন। রাজার যদি কোন মনের বাসনা থাকে, তা জানিয়ে তিনি যেন অবশ্যই পূজা করেন।

বৃদ্ধা চলে গেলে রাজা পুষ্প অর্ঘ্য সংগ্রহ করে দেবীর পূজা করলেন। মানত করলেন এই বলে যে, তিনি যদি শত্রুদের পরাজিত করে অধীন করতে পারেন, তাহলে দেবীর পীঠস্থানে সুদৃশ্য মন্দির তৈরি করিয়ে দেবেন। রাজার নিষ্ঠাভরা পূজা গ্রহণ করে দেবী তাঁর ঐকান্তিক মনস্কামনা পূর্ণ করেছিলেন। এর ফলে, অচিরেই রাজা তাঁর মানত পূর্ণ করতে অসম্ভব সুন্দর এক মন্দির গড়ে দিয়েছিলেন।

তারপর মধ্যযুগের মুসলিম শাসনের মধ্যকালে কালাপাহাড়-এর আক্রমণে মন্দিরের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরবর্তীকালে বিশ্বসিংহের ভাই শুক্লধ্বজ সেই ভগ্ন মন্দির মেরামত করে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেন। এই হল মন্দির তৈরির ইতিহাস।

বিস্তৃত প্রাঙ্গণে মন্দিরের তিনটি মণ্ডপ রয়েছে। তাদের নাম যথাক্রমে-- 'চলন্ত', 'পঞ্চরত্ন' ও 'নাটমন্দির'। তিনটি মণ্ডপ পেরোলেই গর্ভগৃহ। মূল গর্ভগৃহে দেবীর কোন মূর্তি নেই। পাথরের ওপর যোনির  আকৃতি খোদাই করা রয়েছে। যোনির চারপাশে খড়ি দিয়ে যোনিরোম আঁকা। যোনির ভেতর থেকে অবিরল জলস্রোত বেরিয়ে আসছে, যা নালার মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে বাইরে। যোনির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা জলে এক এক-সময় যোনিপীঠ কিছুটা ডুবে থাকে। ভক্তজন পূজার অর্ঘ্য নিয়ে এখানে প্রবেশ করলে পাণ্ডা ও পুরোহিতেরা সেই অর্ঘ্য যোনিপীঠে ঠেকিয়ে দেন। ভক্তজনের হাত তাঁরাই ধরে যোনিপীঠ স্পর্শ করিয়ে দেন। তখন কয়েক সেকেণ্ড যোনিপীঠ স্পর্শ করে থাকা যায়, হাত দিয়ে তার আকৃতি অনুভব করা যায়, এই সময় যোনির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা জলের স্রোত স্পষ্ট বোঝা যায়। এখানে দেবীর তথাকথিত মূর্তি না-থাকলেও তিনি পঞ্চধ্যানমূর্তিতে পূজিতা হন--'কামাখ্যা', 'ত্রিপুরা', 'কামেশ্বরী', 'সারদা' ও 'মহোৎসহা' নামে।

দেবীর মন্দিরে নিত্য ছাগবলি হয়। দেবীর মন্দির থেকে প্রসাদের সঙ্গে একখণ্ড রক্তবস্ত্রও পাওয়া যায়। অনেকে সৌভাগ্য লাভের টোটকা হিসেবে এই রক্তবস্ত্র ধারণ করেন বা গৃহে রক্ষা করেন। দেবীর ভৈরব হলেন 'উমানন্দ'। তিনি দেবীমন্দির থেকে কিছুদূরে ব্রহ্মপুত্রের বুকে জলস্রোতের ঠিক মধ্যিখানে ছোট্ট একটি পাহাড়ে লিঙ্গরূপে অবস্থান করছেন।

দেবীর মন্দিরের সবচেয়ে বড় উৎসব অম্বুবাচী মহোৎসব। এই সময় দেবীর মন্দির তিনদিন বন্ধ থাকে। এই তিনদিন দেবীকে অশুচিজ্ঞানে পূজা করা হয় না। কারণ, এই সময় সাধারণ অল্পবয়স্কা নারীর মতো দেবীও রজ:স্বলা হন। শোনা যায়, মন্দির বন্ধের আগে যোনিপীঠ সাদা কাপড়ে মুড়ে দেওয়া হয়, তিনদিন পর মন্দির খুলে দেখা যায় যে, সাদা বস্ত্র রজ:রঞ্জিত বা লাল হয়ে গেছে। এই প্রক্রিয়াটি সাধারণ ভক্তজন দেখার সুযোগ পান না। তাই এই বস্ত্র রঞ্জিত হয়ে ওঠার পেছনে যে দৈবী অলৌকিকতার কথা প্রচার করা হয়, তা অনেকেই বিশ্বাস করতে চান না। তবুও তারই মাঝে অন্য এক অপার্থিব বিশ্বাসে ভর করে এই মহোৎসবের সময় দেবীর মন্দির ও মন্দিরের আশপাশের অরণ্যভূমি সারা ভারতের অজস্র তান্ত্রিক, সন্ত, ভবঘুরে এবং লক্ষ লক্ষ সাধারণ গৃহস্থের ভিড়ে এক রহস্যময় বিভার সৃষ্টি করে, যার আকর্ষণ কিছুতেই অগ্রাহ্য করা যায় না।...

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...