দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের কাছেই আদ্যাপীঠ। কালীপুজোর দিন এখানে পূজিতা হন ছোট মা। আদ্যা মা এখানে বড় মা। তিনি পূজিত হন রামনবমীর দিন। কথিত আছে, অন্নদা ঠাকুর আদ্যাপীঠের পুজোর প্রচলন করেন৷ এরপর থেকে শাস্ত্রীয় রীতি মেনে পূজিত হন শক্তির দেবী। কালী পুজো উপলক্ষে নিয়ম করে দেবীর আরাধনা।সঙ্গে অন্নভোগ।
আদ্যাপীঠ মন্দিরের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা অন্নদাঠাকুর। তাঁর পিতৃপ্রদত্ত নাম অবশ্য অন্নদাচরণ ভট্টাচার্য।১৩২১ সাল নাগাদ চট্টগ্রাম থেকে কলকাতায় কবিরাজি পড়তে এসেছিলেন অন্নদাচরণ। ভেবেছিলেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হবেন। জীবন এগোচ্ছিল সে দিকেই। কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের সাক্ষাৎ বদলে দেয় তাঁর জীবন। তিনি অন্নদা ভট্টাচার্যকে বলেছিলেন কবিরাজি ব্যবসা তোমার হবে না। শোনা যায়, ঠাকুর অন্নদাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ইডেন গার্ডেন্সের ঝিলে আদ্যা মা পড়ে আছেন। ওখান থেকে মাকে নিয়ে এসো।
শোনা যায়, অন্নদা ঠাকুর ঝিলে খোঁজাখুঁজি বিস্তর খোঁজাখুঁজি করার পর সত্যি সত্যিই ১৮ ইঞ্চি আদ্যা মায়ের কষ্টিপাথরের মূর্তি পান।
সেদিন ছিল রামনবমী তিথি। রাতে আদ্যা মা তাঁকে দেখা দিয়ে বলেন, ‘অন্নদা কাল দশমী। তুমি আমায় গঙ্গায় বিসর্জন দিও’।দেবী আদ্যার স্বপ্নাদেশে বিজয়া দশমীতে মূর্তিটি বিসর্জন দেন সেই মূর্তিটির মতোই তৈরি হয়েছে বর্তমান আদ্যামূর্তি। বাংলার ১৩২৫ সালে শ্রীরামকৃষ্ণ অন্নদা ঠাকুরকে স্বপ্নে সন্ন্যাস দীক্ষাও দেন। ১৯১৫ সালে তিনি মন্দির স্থাপন করেন। এই ঘটনার চার বছর পর ১৯১৮ সালে ঝুলন পূর্ণিমার রাতে রামকৃষ্ণদেব অন্নদা ঠাকুরকে হৃষিকেশ যেতে বলেন। সেখানে মন্দির তৈরির আদেশ দেন তিনি।
১৯৬৭ সালে গড়ে ওঠে আজকের আদ্যাপীঠ।