কলকাতায় আছে কালী মা- গোটা দেশ এভাবেও চেনে শহর কলকাতাকে। ‘কালী কলকাত্তাওয়ালী’ বললে এক নামে মনে পড়ে কালীঘাটের মা কালীর কথা। বাংলার মানুষের কাছে তিনি দেবী মহিমার চেয়েও প্রবল মাতৃ মহিমায়।
একান্ন শক্তিপীঠের অন্যতম হিন্দু তীর্থক্ষেত্র এই কালীঘাট মন্দির। পুরাণ কাহিনি অনুসারে, সতীর দেহত্যাগের পর তাঁর ডান পায়ের চারটি (মতান্তরে একটি) আঙুল এই তীর্থে পড়ে। এই তীর্থের পীঠদেবী দক্ষিণাকালী এবং ভৈরব বা পীঠরক্ষক দেবতা নকুলেশ্বর।
দীপান্বিতা অমাবস্যায় গোটা দেশ যখন শক্তি আরাধনায় মগ্ন তখন কালীঘাটে পূজিত হন লক্ষ্মী। আসলে মহাকালীকে পুজো করা হয় মহালক্ষ্মীরূপে।
সারারাত ধরে চলে মা লক্ষ্মীর আরাধনা। নিত্যপূজার সঙ্গে অমাবস্যার রাতে রাজবেশে অপরূপা সাজে সজ্জিতা হন দেবী কালিকা। এদিনও দেবীর নিত্যপূজায় কোনও পরিবর্তন হয় না। খুব ভোরে দেবীকে জাগিয়ে মঙ্গলারতি করা হয়। দুপুরবেলা দেবীকে আরতি করে ভোগ নিবেদন হয়। নিত্যদিনের ভোগ হিসেবে থাকে বেগুনভাজা, পটলভাজা, কপি, আলু ও কাঁচকলা ভাজা, ঘিয়ের পোলাও, ঘি ডাল, শুক্তো, শাকভাজা, মাছের কালিয়া, পাঁঠার মাংস ও চালের পায়েস।
অসংখ্য পাটকাঠি জ্বেলে মন্দিরকে তিনবার প্রদক্ষিণের পর শুরু হয় মায়ের রাত্রিকালীন পুজো। রাতে নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয় লুচি, বেগুনভাজা, আলু ভাজা, জ্বাল দেওয়া দুধ, ছানার সন্দেশ আর রাজভোগ। কালীপুজোর রাতে মায়ের অঙ্গসজ্জায় থাকে রাজবেশ। লাল বেনারসি পরেন তিনি। সোনার অলঙ্কার আর ফুলের সাজেন মা। কষ্টিপাথরের এই মূর্তির জিভ, খাঁড়া, মুণ্ডমালা সোনার। কালীপুজঅয় মাতৃ দর্শনের জন্য নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা আসেন মন্দিরে।