উত্তরপ্রদেশের প্যারা-আর্চার জ্যোতি বালিয়াঁ। ২০২০-প্যারালিম্পিক্সে একমাত্র মহিলা তীরন্দাজ। তাঁকে ঘিরে পদক প্রত্যাশা এই মুহূর্তে তুঙ্গে।
Paralympics 2021 সঙ্ক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য ক্লিক করুন
বাড়ি উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগরে। বাবা পেশায় কৃষক। অত্যন্ত কঠোর পরিস্থিতির মধ্যে লড়াই করে জ্যোতির খেলার ময়দানে সেরা মুখ হয়ে উঠে আসা।
একদিকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, অন্যদিকে দারিদ্র্য। তবে এক মুহুর্তের জন্যও থমকে যাননি জ্যোতি। তাঁর কোচ কুলদীপ বেদওয়ান। তাঁর তত্ত্বাবধানে কড়া অনুশীলনে ডুবিয়ে দিয়েছেন নিজেকে প্রতিদিন।
বাবা চেয়েছিলেন মেয়ে ভলিবল প্লেয়ার হোক। কিন্তু একটা ভুল নষ্ট করে দেয় বাবা-মেয়ে আর পুরো পরিবারের স্বপ্ন। খুব ছোটবেলায় ভুল ইঞ্জেকশনে অকেজো হয়ে যায় জ্যোতির পা। পোলিও রোগের শিকার হতে হয়।
কাটরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে গত চারবছর ধরে নিয়মিত অনুশীলন করছেন। ২০০৯ সালে শুরু হয় তীরন্দাজী জীবন। বারো বছর পেরিয়ে ফেলেছেন নির্ভুল নিশানায় নজর স্থির করা অভ্যাস করতে করতে।
এই মুহূর্তে জ্যোতি বিশ্বের সেরা প্যারা-আর্চারদের একজন। এই বছরের জানুয়ারীতে দুবাইতে ফাজা আর্চারী প্রতিযোগিতায় বিশ্বের সেরা দশ বিশেষভাবে সক্ষম তীরন্দাজকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখানে জ্যোতিও অংশগ্রহণ করেছিলেন।
নেদারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে তাঁর র্যাঙ্ক ছিল ১৭। টোকিও প্যারালিম্পিক্স-এর কোয়ালিফাইং প্রতিযোগিতা ছিল এটি।
গত পাঁচ বছরে পেশাদার ক্রীড়াবিদ হিসেবে জ্যোতির সাফল্য আলাদা করে চোখের পড়ার মতো। তাঁকে ঘিরে তৈরী হওয়া প্রত্যাশার পারদ যে এতটুকু বাড়তি নয়, সে কথাই বলে।
২০১৭-তে বেজিং-এ রূপো জিতেছিলেন। তামিলনাড়ুতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় সোনা এসেছিল তাঁর ঝুলিতে। এশিয়ান প্যারা গেমস, প্যারা চ্যাম্পিয়ন প্রোগ্রাম ২০১৮-১৯-এ দুরন্ত সাফল্য পেয়েছেন।
তাঁর জেতার খিদে আর মাঠের লড়াই হারিয়ে দিয়েছে সব চাপকে। অর্থনৈতিক সঙ্কটে এমন প্রতিভা যাতে হারিয়ে না যায় তার জন্য পাশে থেকেছে জেলা প্রশাসন। এখন ঘরের মেয়ের সাফল্য দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছে জ্যোতির গ্রাম গোয়েলা।
খেলার ফলাফল যাই হোক না কেন, যে লড়াই লড়ে জ্যোতি টোকিওর মঞ্চে পৌঁছেছেন, নাছোড় সেই জেদকেই কুর্নিশ জানাচ্ছে তাঁর পড়শীরা। জ্যোতির জয় দেখতে চাইছে গোটা দেশ...