জনজট সমৃদ্ধ এভারেস্ট

বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। ছোট থেকে ভূগোল বইয়ের পাতায় এইসব পড়েই বড় হয়েছি আমরা। সেই এলাকার আবহাওয়া সম্পর্কেও সকলের কমবেশি ধারণা রয়েছে। এই এলাকায় তুষার ঝড় থেকে শুরু হয়ে কি কি না হয়। পৃথিবীর বিপদসংকুল স্থানগুলির মধ্যে এই জায়গাটি অন্যতম। তাই আজও নবীন পর্বতারোহীরা স্বপ্ন দেখে এভারেস্টের শৃঙ্গ ছোঁয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণ করার উদ্দেশ্যেই প্রতিবছর প্রচুর পর্বতারোহী ভিড় জমান এভারেস্টের পথে। সেই পথেই সম্প্রতি ঘটে গেছে একটি দুর্ঘটনা। সম্প্রতি এভারেস্টের শৃঙ্গে পৌঁছানোর শেষ সীমায় জমায়েত হতে দেখা যায় প্রায় শ'খানেক মানুষকে। শেষ সীমার সেই অঞ্চলকে এলাকার 'মৃত্যু অঞ্চল' বলা হয়।

এভারেস্টের এই অঞ্চল থেকে সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা ভারতীয় পর্বতারোহী 'আমিশা চৌহান' জানান, এই অঞ্চলে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। কিন্তু আজকাল যারা এভারেস্টের চূড়ায় উঠছেন তাদের সকলের প্রশিক্ষণই নেওয়া নেই ঠিকমতো। সেইদিন সেই অঞ্চলে যেসব মানুষ উপস্থিত ছিলেন তারা সকলেই ফ্রস্টবাইটের শিকার হয়েছেন। সেই সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় ১০০ জনের মতো মানুষ সেদিন দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার মধ্যে মৃত্যু ঘটে প্রায় ১১ জনের। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা আমিশা চৌহান জানান, পাহাড় থেকে নামার সময়েই সেখানে অপেক্ষা করতে হয় ২০ মিনিট। কিছু কিছু মানুষকে তার থেকেও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।

জানা গেছে,  প্রতিকূল পরিবেশ এবং অক্সিজেনের অভাব থাকা সত্ত্বেও সেই জায়গায় বেশ অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয় সেই সমস্ত পর্বতারোহীকে। এই মরসুমে নেপাল, এভারেস্টে ওঠার জন্য ৩৮১ টি পারমিট দিয়েছিলো। কিন্তু জানা যাচ্ছে, তাদের কোনো প্রশিক্ষণই ছিল না। আমিশা জানান,  এইভাবে বিনা প্রশিক্ষণে পাহাড়ে চড়ার ফলে তাদের সাথে সাথে শেরপাদেরও যথেষ্ট বিপদে পড়তে হয়। অনেকে আছেন যারা শুধুমাত্র শেরপাদের উপর নির্ভর করেই অনেক উঁচুতে চলে যান। কিন্তু সঠিক প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে বিপদে পড়ে সকলেই। এই ঘটনার ফলে আগামী বছরগুলিতে যে এভারেস্ট অভিযান আরও কঠিন হয়ে যাবে মানছেন বহু শেরপা।

অন্যদিকে, গতকালই এভারেস্টের চূড়া থেকে ১১ টনের আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকেই এভারেস্টের উপর থেকে এই আবর্জনা সরানোর কাজ শুরু হয়েছিল। সেখানেও ১২ জন দক্ষ শেরপাকে নিয়ে শুরু হয়েছিল এই অভিযান। জানা গেছে, বেসক্যাম্প এবং এভারেস্টমুখী গ্রাম লুকলা এবং নামছে বাজার থেকে মোট ১১ টন আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়ে গেছে।  

 

 

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...