কারাগার বা জেল বা সংশোধনাগার যে নামেই ডাকি না কেন ওই উঁচু পাঁচিলের ভিতরের মানুষগুলোর জীবনযাত্রা সম্পর্কে পাঁচিলের বাইরের মানুষের আগ্রহ কিন্তু কম নয়, তা দেশ, ভাষা নির্বিশেষে। বিভিন্ন দেশে একাধিক ওয়েবসিরিজ তৈরী হচ্ছে সংশোধনাগারের বন্দীদের জীবন নিয়ে, আশ্চর্যের ব্যাপার তার চাহিদা কিন্তু বিপুল। অতএব বিষয়টির প্রতি আগ্রহ যে একটু অন্য পর্যায়ে তা বলাই বাহুল্য। যাই হোক, ওয়েবসিরিজের দৌলতে তার প্রেক্ষাপট খানিক বোঝা গেলেও, পাঁচিলের ভিতরে বাস্তবিক জীবনকে প্রত্যক্ষ করার যদি সুযোগ মেলে! না, কোনো দুস্কর্মের প্রয়োজন নেই। এ রাজ্যেই এবার চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা পরখের সুযোগ মিলবে। সেই সন্ধানই দেব।
আর এই সুযোগ দিচ্ছে বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। মাত্র এক হাজার টাকার বিনিময়ে কারাবাসকে কাছ থেকে দেখা, সেখানে রাত্রিবাসের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের এমন অভিনব উদ্যোগ রাজ্যে প্রথম। যদিও এর আগেই তিহার জেলে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে, আর সেই প্রকল্প 'ফিল লাইক জেল' ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কেমন হয় বন্দীদশা? কীভাবে কাটে সেখানে রাত-দিনের জীবন? এবার সেখানেই বন্দী সেজে সেই যাবতীয় উত্তর পেতে চলেছে রাজ্যবাসী। এমনকি, মিলবে রাত্রিবাসের সুযোগও। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার এই সংশোধনাগারের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য ডিজির কাছে এই বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, ছাড়পত্র মিললেই প্রকল্প শুরু করা হবে। তবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেই সমস্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।
সংশোধনাগারের ভিতরে ২৪ঘণ্টা যেভাবে বন্দীরা থাকে, সেভাবেই পর্যটকরা থাকতে পারবেন। সুযোগ থাকবে বন্দীদের খাবার চেখে নেওয়ার। এমনকি, যেমন সেলে রাখা হয় বন্দীদের তেমনই নির্দিষ্ট কিছু সেল থাকবে এই অতিথি পর্যটকদের জন্য, পর্যটকরা সময়ের আগে বেরিয়ে আসতে চাইলে দিতে হবে জরিমানা। নিরাপত্তার স্বার্থে মোবাইল ফোনের ব্যবহার থাকবে নিষিদ্ধ। উদ্যোগ নিঃসন্দেহে অভিনব তাতে সন্দেহ নেই।
অভিযুক্ত না হয়েই এমন অভিজ্ঞতার সুযোগ– দক্ষিণ দিনাজপুরের এই অভিনব কারা পর্যটনে যে অনন্য মাত্রা আনতে চলেছে তা আশা করাই যায়।