ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ট্রান্সজেন্ডার (তৃতীয় লিঙ্গ) পড়ুয়া, শিক্ষক অথবা ক্যাম্পাসে আগত যে কোনো ব্যক্তির জন্য আলাদা টয়লেট তৈরী করার আবেদন মঞ্জুর করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। একজিকিউটিভ কাউন্সিলের অনুমোদন পেলেই তা বাস্তবায়িত হবে বলে জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ ট্রান্সজেন্ডার বোর্ডের আবেদনের ভিত্তিতে রাজ্য সরকার সমস্ত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশ দিয়েছিল, তাদের ক্যাম্পাসে একটি করে ট্রান্সজেন্ডার টয়লেট তৈরী করার। উত্তর ২৪ পরগণার একটি মাত্র কলেজে সেই মতো কাজ হলেও বাকি আর কোনও কলেজ ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য আলাদা করে কিছু ভাবেনি বলে জানা গেছে বিকাশ ভবন সূত্রে। যাদবপুরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন অনেক পড়ুয়ারা আছেন, যাঁরা নিজেদের তৃতীয় লিঙ্গ শ্রেণীভুক্ত হিসেবে পরিচয় দিতে চান। এমনকি, ভর্তির সময়েও তাঁরা সেই মতোই প্রমান দাখিল করেন। তাঁদের জন্য এই উদ্যোগ যথেষ্ট সুবিধাজনক হবে। জাতীয় তথা রাজ্য ট্রান্সজেন্ডার বোর্ড এবং অ্যাসোশিয়েশন অফ ট্রান্সজেন্ডার হিজড়া পশ্চিমবঙ্গে'র সদস্য রঞ্জিতা সিনহা জানান, যদিও ১৮ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর তৃতীয় লিঙ্গের পড়ুয়ারা নিজেদের ব্যতিক্রম হিসেবে পরিচিত করতে চান, তবুও তাঁরা কলেজ তথা বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেননা। তাঁদেরকে একপেশে করে রাখা হয়। এমনও দেখা গেছে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে ওই সমস্ত পড়ুয়াদের অনেকেই পুরো কোর্স শেষ না করেই মাঝ পথে পড়া ছেড়ে দেন।
৩০-৫০ জন এমন পড়ুয়া রয়েছে যাদবপুর ক্যাম্পাসে। তবে সকলেই নিজেদের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রমাণপত্র দাখিল করেননি। কিন্তু যদি আলাদা টয়লেট তৈরী করা হয়, ওই সমস্ত পড়ুয়াদের জন্য, তাহলে প্রত্যেকেরই সুবিধে হবে বলে জানালেন আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি দেবরাজ দেবনাথ। তিনি আরও জানান, ক্যাম্পাসের দুই জায়গায় ওই টয়লেট বানানোর কথা আছে। একটি হবে আর্টস ফ্যাকাল্টির কাছে এবং অপরটি হবে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির কাছে। ক্যাম্পাসে উপস্থিত সকল ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি যাতে সেই টয়লেট ব্যবহার করতে পারেন সেই আর্জি জানানো হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।