যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় একটি শৌচালয়কে বদলে এলজিবিটিকিউআইএ+ শিক্ষার্থীদের জন্য, ক্যাম্পাসে একটি লিঙ্গ-নিরপেক্ষ শৌচালয় স্থাপন করেছে। এলজিবিটিকিউআইএ সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইংরেজি বিভাগে শৌচালয়টি স্থাপন করা হয়েছে।
ছেলে হলে রয়েছে ‘মেল টয়লেট’, মেয়ে হলে ‘লেডিজ টয়লেট’, কিন্তু কেউ যদি তৃতীয় লিঙ্গ পরিচিতি নেন, তা হলে তিনি কোন শৌচালয়ে যাবেন? অনেক ক্যাম্পাস, শপিং মল, সিনেমা হল, রেস্তরাঁ, অফিসে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ শৌচালয়ের দাবি উঠছে অনেক দিন ধরেই। নিদেনপক্ষে রূপান্তরকামীদের জন্যে আলাদা একটি টয়লেটের ব্যবস্থার দাবিতে অনেকেই লড়ছেন। গত সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩-এ এই লড়াইয়ের প্রথম স্বীকৃতি এল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ইংরেজি বিভাগে।
ইংরেজি বিভাগের প্রধান মনোজিৎ মণ্ডল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যে এই লিঙ্গ-নিরপেক্ষ শৌচালয় স্থাপনের দাবিটিকে ছাত্রদের, সহপাঠীদের পাশাপাশি ছাত্র ইউনিয়নের দ্বারা সমর্থন করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন যে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ শৌচালয় হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, কারণ সবাই এটি ব্যবহার করতে পারবে। যারা পুরুষ বা মহিলাদের জন্য তৈরি শৌচালয় ব্যবহার করতে অস্বস্তি বোধ করেন; ইংরেজি বিভাগের লিঙ্গ-নিরপেক্ষ শৌচালয় কলা অনুষদের সম্প্রদায়ের সদস্যদের সাহায্য করবে। পরে রেজিস্ট্রার স্নেহামঞ্জু বসু জানান, বিভিন্ন ব্লকের হাউজিং কলা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে আরও শৌচালয় তৈরি করা হবে। যাদবপুরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রেসিডেন্সি, রবীন্দ্রভারতী, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অনেকে।
তুলনামূলক সাহিত্যের ছাত্র এলজিবিটিকিউআইএ+ কর্মী শিবদ্যুতি মন্ডল জানিয়েছেন, সম্প্রদায়ের জন্য জয়। তাদের দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত দাবিপূরণ। এআইএসএ সেক্রেটারি বর্ষা বড়াল বলেন, লিঙ্গ-নিরপেক্ষ তুলনামূলক সাহিত্যের ছাত্র সমাজের প্রচলিত বাইনারি কাঠামো ভেঙে দিয়েছে। এসএফআই এবং পিজি ছাত্র জুলফিকার আহমেদ বলেছেন যে তাঁরা খুশি যে বিশ্ববিদ্যালয় একটি লিঙ্গ-নিরপেক্ষ শোউচালয় বানিয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য আশিস চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, তাঁরা কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ শৌচালয় তৈরি করছেন এবং চাহিদা অনুযায়ী বাকি ক্যাম্পাসেও করা হবে। প্রেসিডেন্সির এক ছাত্রী অনুযোগ করেন যে তাদের ক্যাম্পাসে এখন অনেক রূপান্তরকামী পড়ুয়া রয়েছেন। মেন বিল্ডিংয়ের একটি শৌচালয়কে কর্তৃপক্ষ জেন্ডার নিউট্রাল বলে দাবি করেন কিন্তু ক্যাম্পাসে এ নিয়ে কোনও প্রচার নেই এবং অনেকেই ওই শৌচালয়ের কথা জানেনও না।