খেতে সেলফি। বসতে সেলভি। ঘুম ভেঙে সেলফি। ঘুমাতে যাওয়ার আগে সেলফি। সেলফিই আসলে আয়না। সারাক্ষণ অন থাকে মুঠোফোনের ক্যামেরাখানা। একটু ভাল ব্যাকগ্রাউন্ড দেখলেই ক্লিক। শুধু একা দেখে খুশি থাকা নয়, দেখাতে হবে গোটা দুনিয়াকে।
পাড়ার রেস্তোরা থেকে বিদেশের শহর যেখানেই পা পড়ুক না কেন চলতে থাকে ক্লিক...ক্লিক...
কী ভাবছে চারপাশ, সেলফি তোলার চক্করে অসুবিধা হচ্ছে কি পাশের সহনাগরিকের সেদিকে খেয়াল যেমন থাকে না তেমন এই ডিভাইসবন্দী হওয়ার খেয়ালে বাদ পড়ে যায় চোখে দেখার সৌন্দর্য। চোখের সামনে উদার প্রকৃতি, অজানা নগর, গ্রাম তবু আমি আমার মধ্যেই মোহিত। মনোবিদরা বলেন এ আসলে এক আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতার প্রকাশ। যাকে বলা যায় নার্সিসিজম, মানে আত্মপ্রেম।
ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে সেলফি না তুললে আজকাল পিছিয়ে পড়তে হয়। এই প্রবণতা এখন আর বয়স মানে না। ছোট বড় সকলেই এই স্বভাবের শরিক।
সেলফি নাও আর পোস্ট করো সোশ্যাল মিডিয়ায়- সবাই বোধহয় এই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসায় না। যেমন এই ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় পোরতোফিনো শহরটি। এই শহরে ঘুরতে গিয়ে সেলফি তুললে জরিমানা গুনতে পর্যটকদের।
গোটা পৃথিবীর পর্যটকদের কাছে অতি প্রিয় শহর পোরতোফিনো। প্রতিবছর দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটক এই শহরে বেড়াতে আসেন। সম্প্রতি শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পোরতোফিনোয় ঘুরতে গেলে পর্যটকেরা সেলফি তোলার জন্য ভিড় করতে পারবেন না। এমন করলে গুনতে হবে ২৭৫ ইউরো।
জনপ্রিয় একটা পর্যটন শহরে এমন কঠিন নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হঠাৎ কেন শহর কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ছোট শহরটির পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় প্রচণ্ড ভিড় হয়। ভিড়ের মধ্যেও মানুষ সেলফি তোলার জন্য এক জায়গায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন।
পোরতোফিনোর মেয়র মাত্তে ভিয়াকাভা জানান, এই সমস্যা সমাধানের জন্য শহরে ‘নো ওয়েটিং জোন’ চালু করা হয়েছে। অর্থাৎ শহরের নির্দিষ্ট এসব জায়গায় সেলফি কিংবা ছবি তোলার জন্য কোনো পর্যটক ভিড় করতে বা অপেক্ষা করতে পারবেন না। ছবি তুললে জরিমানা গুনতে হবে।