রামসেতু নিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের আবেগ চিরকালীন। যুক্তি-তর্ক ও ঝগড়া-বিবাদ পেরিয়েও এই সেতু মানুষের ঐতিহ্য-র জায়গা। তাই এবার এই চিরপরিচিত আবেগের সুত্র ধরে প্রশ্নের উত্তর দিল ইসরোর বিজ্ঞানীরা। নাসার আইসিইস্যাট-২ স্যাটেলাইট ব্যবহার করে রামসেতুর জলে নিমজ্জিত থাকা অংশের একটি মানচিত্র তৈরি করেছে তারা।
Highlights:
১। ইসরোর মানচিত্রে কী রয়েছে?
২। এতবছর ধরে রামসেতুর অস্তিত্ব কীভাবে রয়েছে?
৩। কীভাবে এই মানচিত্র তৈরি হয়েছে?
রামসেতু কী?
ভারতীয়রা যা রামসেতু বলে উল্লেখ করে, তার পোশাকি নাম হল অ্যাডামস ব্রিজ। এটি শ্রীলঙ্কার মান্নার ও তামিলরনাড়ুর রামেশ্বরণ বা পামবান দ্বীপের মধ্যে অবস্থিত। জলে নিমজ্জিত এই অংশটি একটি স্থল সেতু ছিল, যা ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে যুক্ত করতে সাহায্য করত। পারস্য নাবিকরা এটিকে ‘সেতু বান্ধাই’ নামে চিহ্নিত করত। যার অর্থ, সমুদ্রের উপর একটি সেতু।
ইসরোর মানচিত্রে কী রয়েছে?
এই মানচিত্র তৈরি করার জন্য স্যাটেলাইটের ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। ইসরোর যোধপুর এবং হায়দ্রাবাদ ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টারের গবেষকরা এই মানচিত্র তৈরি করেছে।
এই মানচিত্রে দেখা যাচ্ছে রাম সেতুর প্রায় সম্পূর্ণ অংশই অগভীর এবং অতিগভীর জলে ডুবে থাকে। ৯৯.৯৮ শতাংশ অংশ জলের তলায়। মাত্র ০.০২ শতাংশ অংশ দেখতে পাওয়া যায়।
বিজ্ঞানীদের মতে, এই সেতু ধনুশকোডি থেকে শ্রীলঙ্কার তালাইমান্নার দ্বীপ পর্যন্ত সমুদ্রের নীচে স্থলভাগের ধারাবাহিকতা।
এতবছর ধরে রামসেতুর অস্তিত্ব কীভাবে রয়েছে?
লোকমুখে জানা যায়, রাম সেতু আদতে একটি প্রাকৃতিক স্ট্রাকচার। তবে বিজ্ঞানীদের মত অনুযায়ী, রাম সেতুর কাঠামো বরাবর প্রায় ১১টি সংকীর্ণ চ্যানেল রয়েছে। যেগুলির মধ্যে থেকে জল প্রবাহিত হয়। এই চ্যানেল গুলোই অন্যতম কারণ যা এই সেতুকে রক্ষা করেছে সমুদ্রের ঢেউ থেকে।
কীভাবে এই মানচিত্র তৈরি হয়েছে?
ICESat-2 -এর সবুজ লেজার ব্যবহার করেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা, যা প্রায় ৪০ মিটার গভীর পর্যন্ত সমুদ্রের তল সনাক্ত করতে পারে। এছাড়াও আইসিইস্যাট-২ স্যাটেলাইট এই কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।