মায়াপুরের ইসকন মন্দিরে ফ্ল্যাগ হোস্টিং সহ বিশেষ পুজোর সাথে আয়োজন করল গৌড় পূর্ণিমা মহোৎসব উপলক্ষ। সারা বছর ধরে সমস্তরকম ধর্মীয় উৎসব কিংবা অনুষ্ঠান আয়োজন করে ইসকন মায়াপুর। তারই মধ্যেই অন্যতম এবং গুরুত্বপূর্ণ হল এই গৌড় পূর্ণিমা মহোৎসব। এই উৎসবের সাক্ষী থাকতেই মন্দিরে উপস্থিত হয়েছেন দেশ বিদেশ থেকে আসা বহু ভক্ত।
তবে, সকল উৎসব পালন করা হয়না। এই উৎসব একেবারে ভিন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই অনুষ্ঠানটি যুগাবতার শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর শুভ আবির্ভাব তিথি অনুষ্ঠান হিসেবেই পালন করা হয়। এই বছর ৭ মার্চ, ৫৩৮ তম বর্ষে পা দিল এই উৎসবটি।
ইসকনের তরফ থেকে জানা গিয়েছে যে প্রত্যেক বছর এই অনুষ্ঠানটিকে অন্যান্য সকল অনুষ্ঠানের থেকে আলাদা রকমের ভাবনায় আয়োজন করা হয়।
ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে এই বছর এই অনুষ্ঠানটি চলবে মোট ৩৫ দিন ধরে। এটি শুরু হয়েছিল গত ২২ ফেব্রুয়ারি এবং অনুষ্ঠানটি চলবে ২৭ মার্চ পর্যন্ত।
তিনি আরও জানিয়েছেন যে এই সময় ইসকন মায়াপুরে চিরাচরিত নিয়ম ও প্রথা মেনে ফ্ল্যাগ হোস্টিং, সহ বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। এই দিনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই অর্থাৎ ৭ মার্চ ইস্কনের উদ্যোগে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর ৫৩৮ তম শুভ আবির্ভাব তিথি উৎসব তথা গৌড় পূর্ণিমা মহোৎসবের অফিসিয়াল শুভ সূচনা করা হল।
এদিন এই অনুষ্ঠানে অসংখ্য ভক্তরা তো উপস্থিত ছিলেনই। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইসকনের বিভিন্ন মহারাজ সহ একধিক বিভাগের আধিকারিকেরা। ইসকন সুত্রে আরও জানা গিয়েছে যে এই উৎসবে প্রতিদিন মায়াপুর ইসকন মন্দিরে কির্ত্তন মেলা সহ অধিবাস, বিভিন্ন ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ ও ধর্মীয় আলোচনা অনুষ্ঠিত করা হচ্ছে।
এছাড়াও জানা গিয়েছে যে আগামী ১২ মার্চ অর্থাৎ মঙ্গলবার এইখানেই অনুষ্ঠিত শুরু হবে নবদ্বীপ মন্ডল পরিক্রমা। সেখানে প্রায় ২০ হাজার ভক্ত অংশ নেয় এবং মোট ৭২ কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করা হবে। ‘নবদ্বীপ’ অর্থাৎ কী জানেন? ‘নবদ্বীপ’ অর্থাৎ নয়টি দ্বীপ। ফলে, এই অনুষ্ঠানে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর স্মৃতি বিজারিত বিভিন্ন স্থানগুলোতে এই পরিক্রমা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বাংলা সহ বিভিন্ন দেশ বিদেশের ভাষায় শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর বানী সহ বিভিন্ন ধর্মীয় আলোচনাও করা হবে।
অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই এখন ইসকন মায়াপুর মন্দির ও সেই এলাকা জুড়ে সেজে উঠেছে ও আলোকময় হয়ে উঠেছে। বহু ভক্তের সমাগম ঘটতেই মেতে উঠেছে গোটা মায়াপুর অঞ্চল।