বিলুপ্তির পথে দুই কুঁজের উট

পড়তে গিয়ে হোঁচট খেলো ছোট্ট মুকুল। ভাবলো এমনটা আবার হয় নাকি! সঙ্গে সঙ্গে WhatsApp এ ফোন ফেলুদাকে। ফেলুদা শোনালো তাঁদের গল্প। পৃথিবীর অন্যান্য বাস্তুতন্ত্র এক জায়গায়। মরুভূমির বাস্তুতন্ত্র আরেক জায়গায়। সূর্য সেখানে কঠিন, রুক্ষ। সূর্যের ভয়াবহতা সহ্য করার ক্ষমতা আর কোন প্রাণীরই বা আছে! তবে হ্যাঁ সব মরুভূমির ভাগ্যেই আবার সারা বছর উত্তাপ জোটেনি। কিছু মরুভূমি বেঁচে বেরিয়েছে সেই তালিকা থেকে। আর সেখানেই এঁদের বাস।

মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি। শীতে সাইবেরিয়ার ঠান্ডা হাওয়া এখানে তুষারপাত ডেকে আনে। গরমে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি ছুঁয়ে যায়। আর শীতে? মাইনাস চল্লিশ। তাপমাত্রা ওঠানামার খেলায় এরা জয়ী। আর এখানেই ঘুরে বেড়াচ্ছে তাঁরা।ব্যাকট্রিয়ান উট। বৈশিষ্ট্যে অন্যদের চেয়ে আলাদা। শুধু একটা অতিরিক্ত কুঁজের জন্য। গোবি নিজ বৈশিষ্ট্যে রুক্ষ বলা যেতে পারে। কারণ তাপমাত্রা ওঠানামা করার ক্ষেত্রে আলাদা। অন্যান্য মরুভূমির তুলনায়। কিন্তু সেখানেই এঁদের ঘর।

প্রাণীদের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি সহ্য ক্ষমতা সম্পন্ন। জীবন যাপন মোটের উপর ভালো কাটলেও সমস্যায় পড়তে হয় শীতে। জল তখন বরফ। আর আজব ব্যাপার এখানকার বরফ কখনও গলে না। হাওয়াও শুষ্ক। বরফ না গলে পরিণত হয় বাষ্পে। কাজেই এই সময় জলের ভরসা বলতে বরফ। ভাবছেন কীভাবে? ওই বরফ গিলেই। সরাসরি বরফ গিলে ফেলে। স্বাভাবিক নিয়ম ও চাহিদায় দুশো লিটার পর্যন্ত জল খেতে পারে। কিন্তু প্রয়োজনে মানুষকে যেমন বদলাতে হয়েছে, বদলেছে তারাও।

আর বুদ্ধিও এঁদের হাঁটুতে না, কুঁজে আছে। বোঝে যে একেবারে বেশি জল মানে বরফ গিলে খাওয়াও বিপজ্জনক। তাই প্রতিদিন দশ লিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। ওই কষ্ট করে চালিয়ে নিচ্ছে আর কী! কিন্তু শীতকালের বরফে কিছু ভালো দিক আছে বটে। গরমে জলের কাছাকাছি থাকতে হত়। শীতে অনেকটা এলাকা জুড়ে ঘুরতে পারছে। কারণ চারিদিকে শুধু বরফ আর বরফ। সংখ্যায় এরা খুব বেশি নয়। ঐখানেই এক হাজারের কাছাকাছি। স্বভাবে নম্র সভ্য ব্যাকট্রিয়ান দের গৃহ পালিত করে নেওয়ার কারণেই কমে যাচ্ছে সংখ্যা। স্বাধীন থাকতে পারছেনা।

দুই কুঁজওয়ালা এই একেকটি উট ১৮০ কেজি থেকে ২২০ কেজি পর্যন্ত ভার বহন করতে পারে।তাই কাজেও লাগাচ্ছে মানুষ। সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ভারতে দুই কুঁজওয়ালা উটদের দেখা গিয়েছে লাদাখের নুব্রা উপত্যকায়। এখানে তারা সীমানা রক্ষী। ভারত চীন সীমান্তে। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার কাশ্মীরের গবেষণাকেন্দ্র ডিফেন্স ইনস্টিটিউট অব হাই অলটিচুড রিসার্চ পুরো বিষয়টার তদারকি চালিয়েছে। প্রায় ২০০ উট ভলানটিয়ারিং করেছে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...