নিশিরাতে জলের গ্লাস

জলের অপর নাম জীবন। সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমান জল না খেলে যেমন তৈরী হয় নানা সমস্যাটি তেমনই অতিরিক্ত জল খাওয়াবার ফলেও ঘটে নানা বিপদ। আচ্ছা, সারাদিনে প্রচুর জল খাওয়ার পরেও কি আপনার মাঝরাতে বারবার গলা শুকিয়ে যায়? মনে হয় জলের বোতলটা সাথে নিয়ে সুখে ভালো হয়? অনেকের সাথেই এই ঘটনাটি ঘটে থাকে। কারোর ক্ষেত্রে এই অনুভূতি হয় একদিন কি দুদিন আর কারোর কারোর ক্ষেত্রে প্রতিদিন এই ঘটনা ঘটতে থাকে। একদিন বা দুদিনের ব্যাপার হলে সমস্যা নেই কারণ অনেকসময় হজমের গন্ডগোলের কারণে বা বিশেষ কোনও ধরনের খাবার থেকে এই সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু এই অভ্যেসটি যদি প্রতিদিনের অভ্যেস হয়ে গিয়ে দাঁড়ায় বিপদ ঘনায় সেখানেই।

ঘুমের মধ্যে বারবার তৃষ্ণার্ত অনুভব করা বিভিন্ন বড় রোগের মধ্যে একটির প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। সাধারণত ডিহাইড্রেশনের ফলে শরীরে যখন জলের পরিমান তলাটিতে গিয়ে ঠেকে তখন বারবার জল তেষ্টা পাওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত ডিহাইড্রেশন কিন্তু মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় সেটা অগ্রাহ্য করা মোটেও উচিত নয়। এছাড়াও হজমের সমস্যা, পেট খারাপ, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া এইসব কারণেও রাতে গলা শুকিয়ে যেতে পারে। চলুন এই নিয়েই আজ বিশদে আলোচনা করা যাক......

১) প্রথমেই মনে রাখা দরকার, ডিহাইড্রেশন যদি হয় তখন অতিরিক্ত তৃষ্ণা অনুভূত হতে পারে। ডিহাইড্রেশনের অন্যান্য প্রাথমিক লক্ষণগুলি হলো, ঘন এবং ডার্ক রঙের ইউরিন, বেশিবার মূত্রত্যাগের ইচ্ছে প্রকাশ না করা, শুষ্ক ত্বক ও মুখ, মাথার যন্ত্রনা, ক্লান্তিভাব প্রভৃতি।

২) রক্তে যদি শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় এবং তা নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থাও না করা হয় তাহলে ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে এই তৃষ্ণাভাব দেখা দিতে পারে।চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে  বলা হয় পলিডিপশিয়া। তাই তৃষ্ণার্তভাবের সাথে যদি চোখে অস্পষ্ট দেখা, অতিরিক্ত খিদে পাওয়া, অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা এইসব লক্ষণ দেখতে পান তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৩) সেপসিসের মতো এক ভয়ংকর রোগের একটি উপসর্গ হলো এটি। সেপসিস এমন এক রোগ যাতে শরীরে আক্রমণ ঘটানো জীবাণু ইনফেকশন সৃষ্টি করে এবং তার ফলেই গলা শুকিয়ে যায়।

৪) হার্ট, লিভার, কিডনি প্রভৃতি মূল্যবান অঙ্গের যখন কার্যক্ষমতা কমে আসে তখনও এইসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

৫) যারা ডিপ্রেশনে ভোগেন তাদের ক্ষেত্রেও এই রাতে বারবার জল খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।

এইসব কারণে রাতে অতিরিক্ত জল খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিছুক্ষেত্রে তা অন্য কোনো রোগের প্রভাবে হলেও অনেকক্ষেত্রেই তা নেহাত সাধারণ কারণের ফলে হয়ে থাকে। তাই তৃষ্ণার্ত অনুভব করার সাথে সাথে যদি উপরোক্ত কারণগুলি দেখতে পান তাহলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।     

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...