রক্তে শর্করার মাত্রা যত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তত স্বাস্থ্য সচেতন বাঙালি মিষ্টির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু কিছুকাল আগেও এরকম একটা রীতি প্রচলিত ছিল যে যাই খাবার খান না কেন শেষ পাতের মিষ্টির উপস্থিতি কিন্তু বাধ্যতামূলক। সে বিয়েবাড়ি হোক বা অন্নপ্রাশন বাড়ি, সাধারণ পার্টি হোক বা বাচ্চার জন্মদিন, অতিথিরা কিন্তু অপেক্ষা করে থাকে শেষ পাতে কোন মিষ্টি রয়েছে তা জানার জন্য। আমাদের দাদু ঠাকুমারা গল্প করতেন, তাঁদের আমলে অনেকে ছিলেন যাঁরা অনেক খাবার খেতেন না শুধু শেষ পাতে মিষ্টি খাওয়ার জন্য। সেই প্রথা এখন অনেকটা কমলেও সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়নি। আজও নিমন্ত্রণ বাড়িতে গেলে বাঙালির শেষ পাতে রসগোল্লা কিন্তু চাই-ই চাই। এছাড়াও অনেকে আছেন, যাঁরা বাড়িতেও রোজ রাতে মিষ্টি খান। ফ্রিজ থেকে চুরি করে খাওয়ার মজাই আলাদা কিন্তু এইভাবে রোজ মিষ্টি খাওয়ার অভ্যেস কি আদৌ ভালো নাকি এর ফলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে কোনো মারাত্মক রোগ চলুন জেনে নিই।
অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার পরিমান বাড়ার কথা সকলেরই জানা। কিন্তু এটি ছাড়াও কি কি অসুবিধা হতে পারে তা কি জানা আছে? রাতে অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে কিন্তু মাঝরাতে বারবার ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার সমস্যা দেখা দিয়ে পারে। ঘুম যদিও পুরোপুরি না ভাঙে তাও ভাঙা ভাঙা ঘুমের কারণে পরের দিন সারাদিন ক্লান্তিভাব অনুভূত হয়। শুধু রাতে নয় সারাদিন যদি অধিক পরিমান চিনি ঢোকে শরীরে তাহলে হঠাৎ এনার্জি ক্র্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত চিনি ওরেক্সিন কোষের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। এর ফলে বেশ ঘুমঘুম ভাব অনুভূত হতে থাকে। এছাড়াও মিষ্টি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার অতিরিক্ত পরিমানে খেলে শরীরে মেদ জমার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শরীরে মেদ জমে পরবর্তীকালে আরও বড় কোনো রোগ হতে পারে। তাই বলে, বাঙালিরা মিষ্টি খাওয়া ছেড়ে দেবে তা তো হতে পারে না। তাই পরিমান বুঝে মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় জিনিস খান।