আমিষ প্রেমীদের কাছে স্বর্গের অনুভূতি জাগাতে সক্ষম যেকোন ধরণের মাংস। বিশেষ করে চিকেন বা মাটন, সেরার তালিকায় নাম লেখাতে এদের জুড়ি মেলা ভার। মুরগির ডানা থেকে শুরু করে পা, খাদ্যরসিক মানুষের পাত থেকে বাদ যায়না কিছুই। উপকারিতার নিরিখে চিকেনের থেকে আবার মাটন রয়েছে এগিয়ে। পাঁঠার যকৃৎ এতটাই উপকারী যে চিকিৎসকেরাও শিশুদের পাঁঠার যকৃৎ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু সেই দিক থেকে মুরগির যকৃৎ বা লিভার ঠিক কতটা উপকারী? কতটাই বা ক্ষতিকর? চলুন আজ জানা যাক.....
মাংসের মেটে একটি প্রাকৃতিক সুপারফুড হিসেবে আগেই নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছে। শুধু মুরগির মেটে নয় অর্থাৎ মুরগির ছাড়াও অন্য প্রাণীদের লিভারও একইভাবে উপকারী। তবে জনপ্রিয়তার নিরিখে সেই এগিয়ে রয়েছে মুরগি আর পাঁঠা। কি কি উপকার পাওয়া যায় মুরগির মেটে খেলে চলুন তা জানা যাক...
১) মাংসের মেটে যে শুধুমাত্র ভিটামিনের এক সম্পূর্ণ আধার তাই নয়, মেটের মধ্যে ভিটামিন এ, এবং বি এর সাথে সাথেই থাকে প্রচুর পরিমান আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি। এছাড়াও ভিটামিন বি ১২ এর পরিমানও বেশি থাকে মেটেতে। ভিটামিন বি ১২ লোহিত রক্তকণিকার ফর্মেশনে সাহায্য করে। তাই ভিটামিন বি ১২ এর অভাব রয়েছে যাদের শরীরে তাদের মুরগির মেটে খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
২) ভিটামিন-এ এর এক অফুরন্ত আধার হলো মেটে| পালং শাক বা অন্যান্য যেসব খাবার থেকে শরীরে ভিটামিন-এ এর সংশ্লেষ ঘটে তার থেকেও বেশি কাজে আসে এই মেটে। মেটেতে ভিটামিন এ এর অ্যাকটিভ ফর্মটি পাওয়া যায় যা রেটিনল নাম পরিচিত। ভিটামিন এ যেহেতু অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের কাজ করে তাই ইনফ্লেমেশন কমাতে এই ভিটামিনের জুড়ি মেলা ভার।
৩) আগেই উল্লেখ করা হয়েছে মেটেতে থাকে প্রচুর পরিমানে আয়রন| মেটেতে থাকে একটি বিশেষ সমতাযুক্ত আয়রন, ফোলেট এবং ভিটামিন ১২| তাই যাদের রক্তাল্পতায় ভোগার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের চিকিৎসকেরা মুরগির মেটে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন| মুরগির মেটে খাওয়ার ফলে প্রাকৃতিকভাবে শরীরে লোহিত রক্তকনিকার পরিমান এবং হিমোগ্লোবিনের পরিমান বৃদ্ধি পেতে থাকে।
৪) মুরগির মেটেতে রয়েছে বিশেষ পরিমানে দস্তা যা জ্বর, সর্দি, কাশি ছাড়াও টনসিলাইটিস সারাতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। মেটেতে থাকে প্রচুর পরিমানে কোলাজেন যা শিরা উপশিরার মধ্যে দিয়ে রক্ত পরিবহনে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় যদি মুরগির মেটে খাওয়া যায় তাহলে ওই সময়ের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের অনেকটাই পাওয়া যায়। এছাড়াও ডায়াবেটিসে ভুগছেন যারা যাদের জন্য মুরগির মেটে খুবই উপকারী। তবে হার্টের রোগ থাকলে এই মেটে একটু এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ, মেটেতে থাকে প্রচুর পরিমানে কোলেস্টেরল।
শিশুদেরও মুরগির মেটে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ দীর্ঘদিন ধরে মেটে খাওয়ার ফলে শিশুদের কৃমি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।