করোনা ভাইরাস মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অন্যতম হাতিয়ার হলো হ্যান্ড স্যানিটাইজার। কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক নয় করোনাকে আটকাতে আমাদের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ভরসার জিনিস। রাস্তাঘাটে বা জলছাড়া হাত পরিষ্কার করতে এর জুড়ি মেলা ভার। তবে করোনাকে আটকাতে বা জীবাণুনাশক হিসেবে যার জনপ্রিয়তা কার্যকর উপায় হিসাবে রয়ে গেছে তার আবিষ্কার হয়েছে মাত্র পঞ্চাশ বছর আগেই । তাও একজন নার্সিং-এর ছাত্রীর হাত ধরে।
১৯৬৬ সালে, ক্যালিফোর্নিয়ার বেকারসফিল্ডের শিক্ষার্থী নার্স ছিলেন লুপে হার্নান্দেজ। যিনি একজন লাতিন। রোগীদের সংস্পর্শে আসার আগে চিকিৎসকদের ও তাদের সহায়তাকারীদের জন্য জল ও সাবান ব্যবহারের পরিবর্তে অন্য কিছু ব্যবহার করার কথা চিন্তা করেছিলেন। কারণ সব পরিস্থিতিতে জল ও সাবান মেলে না। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন জেল আকারে অ্যালকোহলকে ব্যবহারের করলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। ভাবা যেই অমনি তিনি এই পদ্ধতি তিনি দ্রুত শিখেছিলেন এবং একে বাণিজ্যিক সাফল্যেও পরিণত করেছিলেন। তিনি এর পেটেন্টের আবেদন করেছিলেন বলে জানা যায় ।
তবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার- এর আবিষ্কর্তা হিসেবে লুপে হার্নান্দেজ-এর বিষয়ে নেট দুনিয়ায় খুব বেশি তথ্য মেলেনি । এমনকি উইকিপিডিয়াতে নেই কোনো তথ্য । তবে ১৩ ই মার্চ, ২০১২ এ দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল । তবে করোনা করোনভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পর লুপে হার্নান্দেজকে নিয়ে বহু প্রতিবেদন বেরিয়েছে গত ১৫ দিনে । দ্য গার্ডিয়ান বলছে , পেশাদার নার্সিং এবং নেতৃত্ব সম্পর্কিত একটি বই গ্রোথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফ নার্স লিডার্স-এর ২০১৯ দ্বিতীয় সংস্করণে ল্যাটিন নার্স লুপে হার্নান্দেজ-এর উল্লেখ করা হয়েছে । দেরিতে হলেও এটি স্বীকৃতি পেয়েছে । সেখান থেকেই উল্লেখ করেছে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা। তবে লুপের এই আবিষ্কারের ব্যবহার প্রথমে ডাক্তার ও হাসপাতালগুলিতেই সীমাবদ্ধ ছিল । ১৯৮৮ সালের পর এর বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হয়।
আবিষ্কারের প্রায় ৫০ বছর পর বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নেটিজেনদের অনেকেই তাঁকে আন্তরিক শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।