সধবার একাদশী নাটকের পরিচালকের সাক্ষাৎকার

নট -রঙ্গের নবতম প্রযোজনা 'সধবার একাদশী' নাটকের মহড়ায় উপস্থিত ছিল জিয়ো বাংলার সাংবাদিক। সধবার একাদশী নাটকের নির্দেশক সোহান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের নতুন নাটকের সম্পর্কে কিছু কথা ভাগ করে নিলেন জিয়ো বাংলার সাথে।ছিল সাক্ষাৎকার ভিত্তিক কথোপকথন।

 

সাংবাদিক: এটি নট-রঙ্গের কত তম প্রযোজনা ?

নির্দেশক: প্রযোজনার সংখ্যা হিসাব করতে বলতে গেলে পঞ্চাশের কাছাকাছি।                                                                আমাদের দল ৪৭ বছরের দল। বহু প্রযোজনা  আমাদের আছে সেই জন্য এটা  বোধ হয় গোটা পঞ্চাশেক নম্বরের হবে আমার ঠিক exact মনে নেই কত।

সাংবাদিক: এই নাটকটিকেই বাছলেন কেন ?

নির্দেশক : এই নাটকটি বাছার একটি বিশেষ কারণ আছে। এটি নট -রঙ্গ আগে প্রযোজনা করেনি তা নয়। ৭০ এর দশকে আমার বাবা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এই নাটকটি করেছিলেন। তারপর মধ্য ৮০ তে নীলকণ্ঠ সেনগুপ্ত কলকাতায় করেন। এই নাটকটি হচ্ছে বাংলার একদম নিজস্ব মৌলিক নাটক এবং mother of all bengalitheater বলা যেতে পারে। কারণ নাটকটি লেখা হয়েছিল ১৮৬৬ সালেপ্রথম অভিনীত হয় ১৮৬৮ সালে বাগবাজারের প্রাণকৃষ্ণ হালদারের বাড়িতে সপ্তমীর রাত্রে। সেইটাতে অভিনয় করেছিলেন গিরিশ ঘোষ ,অর্ধেন্দু মুস্তাফি, রাধামাধব কর, নগেন  ব্যানার্জি -র মত বিখ্যাত অভিনেতারা। তখন তাদের দলটার নাম ছিল 'বাগবাজার অ্যামেচার থিয়েটার'। এই সধবার একাদশী নাটক থেকেই কিন্তু গিরিশ চন্দ্র ঘোষ, গিরিশ চন্দ্র হয়েছিলেন। তো নাটকটির ১৫০ বছর পূর্তি। প্রথম অভিনয়ের ১৫০ বছর পূর্তি, সেইটাকে সম্মান জানানোর জন্যে মূলতঃ এই নাটকটি চয়ন করা। আর আমার মনে হয়েছিল এটা আমার কাছে একটা চ্যালেঞ্জ, এবং এই নাটকটার  বিনির্মাণ করার একটা ইচ্ছা ছিল এটা  প্রমান করার জন্য যে নাটকটা আজকের দিনেও সমাজে কতটা relevant। দেড়শো বছর আগে দীনবন্ধু মিত্র যে নাটক লিখে গেছেন সেটা আজও কতখানি প্রাসঙ্গিক সেটা তুলে ধরাও আমার উদ্দেশ্য সেই জন্যই আমি নাটকটা কে বেছে নিয়েছি।         

 

সাংবাদিক :এই সময়ে দাঁড়িয়ে নাটকটা কী সমসাময়িক ?

নির্দেশক :একদম। কারণ সমাজের অবক্ষয়ের  চিত্রটা দেড়শো বছর আগেও যা ছিল আজও তাই আছে। তখন বাবু culture এর period তখন সাহেবরা এসেছে, সাহেব হয়ে যাওয়ার জন্য বাঙালিরা সবাই লাফালাফি করতো। এবং করতে গিয়ে নিজের সংস্কৃতি, নিজের রুচি, নিজের value system  সমস্ত কিছু  বিসর্জন দিয়ে একটা দরকচা মারা আধখেচরা সমাজ তৈরী হচ্ছিল অথচ সেই সমাজে কিন্তু মধুসূদন দত্তের মত ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের মত মানুষজনও ছিলেন অসম্ভব প্রতিভাধররাও  ছিলেন। আজকের দিনে দাঁড়িয়েও দেখুন ইন্টারনেট এর  যুগেও  মানুষের চিন্তাধারা সেই একই রয়ে গেছে। আমরা তো প্রগতির কথা বলছি। ইন্টারনেট মানেই তো প্রগতি, আমরা তো বলছি আমরা প্রচুর এগোচ্ছি অথচ আমাদের অন্ধকার দিকগুলো ঠিক ততটাই রয়ে গেছে তার মানে সমাজটা কিন্তু দেড়শো বছরে  বিশেষ এগোয়নি।  সেই জন্য আমার কাছে যেটা আমার কাছে সবথেকে interesting point মনে হয়েছে, যে দীনবন্ধু মিত্র দেড়শো বছর আগে সমাজের যে অন্ধকার গুলো কে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তুলে মানুষের সামনে তুলে ধরেছিলেন এবং বলেছিলেন  'This is not a right way to things'- সেটাই দেড়শো  বছর পর আজ ও ততোটাই প্রাসঙ্গিক।                                               

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...