এক ছিল মোটা কেঁদো বাঘ,
গায়ে তার কালো কালো দাগ।
গরগরে রাগী সে। ভয়-ডর-সাহস যা কিছু সব তাকে নিয়েই। গদ্য-পদ্য-গান-গল্প-উপমা সবেতেই আছে সে। কে আবার! আমাদের বাঘবাহাদুর। আদর করে বাঘমামা।
ছোট্টবেলায় কুট্টি কুট্টি থাবা আর উল নরম রোঁয়ায় বেজায় মিষ্টি বাঘছানা সে। ‘দ্যাখো আমি বাড়ছি মাম্মি’ বলে, যেই না হালুম করতে শিখল অমনি শার্দুল শৌর্যে কেঁপে উঠল জঙ্গল।
গতি মন্থর, কিন্তু যখন ঝাঁপিয়ে পড়ে শিকারের ওপর তখন দূর থেকেই দুরুদুরু বুক। ভয়ে হাত-পা পেটের ভিতর সেঁধয়।
বাঘ। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।
পশুকুলে সৌন্দর্যের শেষ কথা। বিস্তীর্ণ বনভূমি তার রাজত্ব। কিন্তু সেই জঙ্গলেই ক্রমশ সংখ্যালঘু হয়ে উঠেছিল বাঘ প্রজাতি। শুধু ভারতে নয়। পৃথিবীর সব দেশেই।
অরণ্যধ্বংস, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, চোরা শিকারীদের দৌরাত্ম্য, আর সাধারণ মানুষের ভয়- প্রধান অনুঘটক হয়ে উঠেছিল বাঘের অস্তিত্ব সংকটের সমস্যায়।
বাঘের প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা এবং বাঘ সংরক্ষণের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে প্রতি বছরের ২৯ জুলাই দিনটি আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। দিনটির সূচনা ২০১০ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গে। সেই বছর নভেম্বরে প্রথম বাঘ দিবস উদযাপিত হয়।
আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবসের ২০২১-এর থিম - 'তাদের বেঁচে থাকা আমাদের হাতে’।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ১৫০ বছরে গোটা বিশ্বে বাঘের সংখ্যা ৯৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তারপরই বিশ্বজুড়ে বাঘ সচেতনতা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এশিয়া মহাদেশে ইতিবাচক সাড়াও মিলেছে। গোটা বিশ্বে এই মুহুর্তে মোট বাঘের ৩৯০০। ভারতে তিন হাজার।
২০২২-এ সংখ্যাকে দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সেই উদ্দ্যেশ্যেই বাঘের নিরাপদ আবাসের ব্যবস্থা করা আর বাঘকে ইকো-সিস্টেমের মধ্যে প্রতিপালন করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে ভারত।