টিফিন বক্সেও চাই মায়ের শিল্পকলা

 

সময়টা পাল্টেছে। স্কুলের লেখাপড়ার ধরনে যেমন এসেছে বদল,  তেমনি টিফিন বক্স-এর ব্যাপারেও বিভিন্ন স্কুলে শুরু হয়েছে হাজারো ইফস অ্যান্ড বাটস’। অনেক স্কুলই সপ্তাহের কোন দিন কোন খাবার পাঠাতে হবে তার চার্ট বানিয়ে দিচ্ছে আজকাল। ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এহেন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এখন সমস্যা হল, সবাই তো আর সব খাবার খেতে চায় না। তা ছাড়া একঘেয়ে খাবারে অনীহা দেখা দেয় অনেকেরই। তাই টিফিন বক্স স্কুলের ব্যাগে যেমনটি যায় তেমনটি গুছিয়ে ফেরত চলে আসে বাড়িতে। আর সেই টিফিন বক্সের প্রতিনিধিদের জায়গা হয় ডাস্টবিন। এ ভাবে চলতে থাকলে ওদের শরীরের কী হাল হবে ভাবুন তো? তা হলে এখন উপায়?

ওদের টিফিন বক্সে দিতে হবে এমন কিছু যা দেখলেই ওরা চমকে উঠবে। আর অবশ্যই সেটা হতে হবে স্বাস্থ্যকর এবং লোভনীয়। খাবারের প্রতি ওদের আগ্রহ আনতে কারসাজি করতে হবে মা’কেই। কয়েকটা উপায় রইল এই কলমে। 

১) প্রতিদিন রুটি-তরকারি আলাদা আলাদা ভাবে না দিয়ে রুটির ভিতরে সবজি ভরে দিলেই হয়ে যাবে ভেজিটেবিল রোল বা চাপাটি র‍্যাপস। টিফিন বক্স খুলে খাবারের অন্য কায়দা দেখে চমকে গিয়ে ওরা খেতে আগ্রহী হবে।

২) ডিমের হার্ড বয়েল, পাস্তা, নুডলস, স্টাফড পরোটা, হাংকার্ড স্যান্ডুইচ, ভেজিটেবল টোস্ট, ক্যারট কেক শিশুদের পছন্দের খাবার। তাই ওগুলিও স্কুলে দেওয়ার অনুমতি থাকলে দেওয়া যেতে পারে নিশ্চিন্তে। টিফিন বক্সটি খালিই আসবে সেদিন।

৩) স্যান্ডুইচের ভিতরে কোনওদিন ডিম, কোনওদিন চিকেন তো কোনওদিন ভেজিটেবল দিতে হবে। অনেকেই শুকনো স্যান্ডুইচ খেতে পারে না। তাই মাখনের পরিমাণটা একটু বেশি দিতে হবে। স্যান্ডুইচের আকারেও থাকতে হবে বিভিন্নতা। স্যান্ডুইচ হতে হবে চৌকো, ত্রিকোণা, গোল, বরফি আকারের। এক এক দিন এক এক রকমের শেপ বানিয়ে পাঠাতে হবে। তা হলে টিফিন বক্স খুলে মায়ের এমন সব কাণ্ডকারখানা দেখে ওরা মজা পাবে। আর তাড়াতাড়ি সাবাড় করবে সবটা।

৪) টিফিন বক্সের ডিজাইনেও থাকতে হবে চাকচিক্যভাব। তথাকথিত স্টিলের চৌকো বা গোল টিফিন বক্স না দিয়ে ওদেরকে দিতে হবে মোটু-পাতলু, ভীম, কালিয়া, ছুটকি, ডোরেমন বা গোপাল ভাঁড়ের ছবিওয়ালা টিফিন বক্স। অন্যরকমও চলতে পারে। সবটাই পকেট সামলে।

৫) অনেক্ষণ পেট ভর্তি থাকবে বলে এক গাদা খাবার দিলে চলবে না। টিফিন পিরিয়ডের মধ্যে সব খাবার শেষ করতে না পারলে ওরা বুদ্ধি করে বাড়িতে মায়ের বকুনির ভয়ে খাবার স্কুলের ডাস্টবিনে ফেলে চলে আসে। তাতে আখেরে কোনও লাভ হয় না। তাই অহেতুক টিফিন বক্স ভর্তি করে খাবার না দিলেও চলবে।

৬) খাবারের স্বাদ বাড়াতে গিয়ে প্রচুর তেলমশলা সমৃদ্ধ খাবার ওদের পাঠালে চলবে না। তাতে শরীরেরও কষ্ট আর ব্যাগও হয়ে যেতে পারে তেল চিটচিটে।

৭) ফ্রিজে জমিয়ে রাখা কাটা ফল, মিষ্টি ওদের দেবেন না। একইভাবে আগের দিন রান্না করে রাখা চাউমিন, পাস্তাও পাঠাবেন না টিফিন বক্সে।

৮) বাড়িতে বানানো কেক দিনের পর দিন টিফিন বক্সে দেওয়া চলবে না। কারণ বাড়িতে বানানো কেকে প্রিজারভেটিভ দেওয়া থাকে না। তাই দু’দিনের পরে আর সেই কেক খাওয়া উচিত নয়।

৯) রসালো মিষ্টি টিফিন বক্সে না দেওয়াই ভাল শিশুদের।

১০) শিশুদের ঘন ঘন পেট খারাপ হয়। তাই রোজ রোজ পাস্তা, নুডলস দেওয়া চলবে না

গরমকালে ওদের ব্যাগে ভরে দিতে হবে নুন-চিনির মিশ্রণে তৈরি জল। আর সুযোগ পেলেই স্কুলে থাকাকালীন জল খেতে বলতে হবে ওদের। কারণ নিজের উদ্যোগে জল খাওয়ার অভ্যাস খুব কম শিশুরই থাকে।   

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...