দক্ষিণ ভারত তথা সমগ্র দেশের প্রাচীনমন্দির গুলির মধ্যে একটি হল শবরীমালা মন্দির। ঐতিহাসিকদের ধারণা প্রায় আনুমানিক ১২০০ খিষ্টাব্দ নাগাদ এই মন্দিরটি তৈরী করা হয়েছিল। প্রাচীন কথায় আছে, বিষ্ণুর সপ্তম অবতার রামচন্দ্রের ভক্ত শবরীর নামেই এই মন্দিরের নাম রাখা হয়েছিল। অমৃত মন্থনের সময় অসুরদের হাতে অমৃত না দেওয়ার জন্য ভগবান বিষ্ণু মোহিনী নামক এক সুন্দরী কন্যার রূপ ধারণ করেছিল। সেই মোহিনী ও শিবের পুত্রের নাম আয়াপ্পা। এই আয়াপ্পার পুজোর জন্য শবরীমালায় তাঁর মূর্তি স্থাপন করেছিলেন পরশুরাম। তবে শুধু হিন্দু ধর্মেই নয় আয়াপ্পার পুজো করেন বৌদ্ধরাও। আয়াপ্পা ধর্মশাস্তা নামে পরিচিত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে। এছাড়াও তামিলনাড়ুতে আইয়ানা রূপে পূজিত হন তিনি।
ভগবান আয়াপ্পা চিরকাল ছিলেন ব্রক্ষচারী। হিন্দুদের বিশ্বাস বিশ্বাস, প্রাচীনকালে এক অসুরকে পরাজিত করেছিলেন। তারপরে জানা গেছিল যে ঐ অসুর আসলে এক সুন্দরী তরুণী। অভিশাপের ফলে তিনি অসুরে পরিণত হয়েছিলেন। তাই আয়াপ্পা তাকে সেই অভিশাপ থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। কিন্তু নিজের রূপ ফিরে পাওয়ার যখন ঐ তরুণী আয়াপ্পাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল তখন তিনি রাজি হননি। আয়াপ্পা বলেছিলেন, যখন ভক্তরা তাঁর মন্দিরে আসা বন্ধ করবেন, তখন তিনি ঐ তরুণীকে বিয়ে করবেন। তাই আয়াপ্পার অপেক্ষা করতে থাকেন ঐ তরুণী। সেই প্রাচীন কাহিনির সূত্রেই শবরীমালা মন্দিরে স্ত্রীলোকের প্রবেশে মানা ছিল।
প্রত্যেক দিন প্রায় ১ লক্ষ ভক্ত শবরীমালা মন্দিরে আসেন ভগবান আয়াপ্পার দর্শন করতে। যদি বিমান পথে এই মন্দির দর্শণে যান তাহলে কোচি ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ১৬০ কিলোমিটার। রেলপথে যদি এই মন্দিরে যান তাহলে ক্যায়ামকুলাম জংশন থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ১০২ কিলোমিটার। এছাড়াও সড়ক পথে বাসের ব্যবস্থা রয়েছে এই মন্দির দর্শনের জন্য। ভক্তরা প্রত্যেক বছর এই পথ ধরেই ভগবান আয়াপ্পার দর্শন করতে যান।