নুন-হলুদ জারানো আম। লবণ মাখানো কুল কিংবা তেঁতুল, গায়ে রোদ লাগাচ্ছে দেখলেই মনটা খুশি খুশি হয়ে যায়।
চিনি কিংবা গুড় যাতেই পাক হোক নাম তো সেই একটাই- আচার।
আচার মানেই এক নিমেষে জিভের ‘তার’ বদলে যাওয়া। খেতে ইচ্ছে করছে না, মন খারাপ, রুচি নেই সব কিছুর একটাই ওষুধ আচার।
আচার ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ। দেশের প্রায় সবকটি প্রদেশে জনপ্রিয় প্রান্ত পদ।
আচার কিন্তু পৃথিবীর প্রাচীনতম পদের একটি। টক, ঝাল, মিষ্টি, নোনতা- নানা রকম তার স্বাদ।
মূলত, ফলমুল, সব্জিসহ বিভিন্ন খাবার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার জন্য এই খাবারটির উদ্ভব ঘটে পৃথিবীতে।
আজ থেকে ২৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রাচীন মেসপটেমিয়ান সভ্যতার সময় থেকে মানুষ আচার খাওয়া শুরু করে।
ইতিহাস মোটামুটি ৪,০০০ বছরের পুরাতন।
শোনা যায়, রাণী ক্লিওপেট্রা আচার খেতেন এবং তিনি বিশ্বাস করতেন, আচার তার সৌন্দর্য রক্ষায় সহায়তা করে।
দক্ষিণ এশিয়ার বাংলা, হিন্দী, উর্দূ, পাঞ্জাবীসহ বিভিন্ন ভাষায় এটি আচার নামেই পরিচিত।
দক্ষিণ এশিয়ায় সবচাইতে বেশি এবং বিভিন্ন ধরণের আচার তৈরি হয় যে ফলটি দিয়ে সোট হচ্ছে আম।
এর পরেই আছে লেবু, আমড়া, জলপাই, আমলকি, তেঁতুল, বড়ই/ কুল, চালতা, আনারস, কামরাঙ্গা ইত্যাদি টক জাতীয় ফল।
সব্জির মধ্যে শসা, গাজর, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, বেগুন, টমেট, বরবটি ইত্যাদি অন্যতম।
শুধু ফল কিংবা সব্জি নয়। বিভিন্ন ধরণের মাংস, মাছ চীনে ডিমের আচার, স্ক্যান্ডেনেভিয়ান দেশগুলোতে হাঙ্গরের মাংস দীর্ঘদিন পরে খাওয়া হয় মূলত আচার বানিয়ে।
১৪৯২ সালের আমেরিকা অভিযানে কলম্বাস তাঁর নাবিকদের রেশন হিসেবে আচার দিতেন।
আচার শুধু মুখের স্বাদ ফেরায় না স্বাস্থ্যও ফেরায়। ভিটামিন সি থাকে আচারে। এছাড়া একাধিক মশলাত ব্যবহার করা হয়। দৈনন্দিন অসুস্থতা এবং মরসুমি রোগ থেকে বাঁচাতে আচারের জুড়ি মেলা ভার।