সালটা ২০১৭। ফেব্রুয়ারী। জম্মু-কাশ্মীরে বসন্তের হাওয়া তখনও কিছুটা দূরে। শোপিয়েনে সেনা বাহিনীর পেট্রোলিং চলছে রোজকার মতো। কিন্তু সেদিন আচমকাই ধেয়ে এল জঙ্গীদের গুলি। ভারতীয় সেনাবাহিনীও ছেড়ে কথা বলন না। চলল পাল্টা আক্রমণ। হিজবুল মুজাহিদীন গোষ্ঠীর আক্রমণে তিন ভারতীয় জওয়ান নিহত হন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত পাঁচ জওয়ান। তাদের মধ্যে অন্যতম বছর ৩৮-এর মেজর অমরদীপ সিং। মস্তিষ্ক আর যকৃতে মারাত্মকভাবে আঘাত লেগেছিল। চিকিৎসকদের সব ধরনের চেষ্টা সত্বেও কোমাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু লড়াই তাঁর অভ্যাস, সেই লড়াই বজায় রাখেন রোগ শয্যাতেও।
চারবছর ধরে যুদ্ধ চলল। চিকিৎসক আর মেজর অমরদীপ সিং-এর, প্রতিপক্ষ জখম শরীর। শেষ পর্যন্ত জিত হয়েছিল তাঁরই। হুইলচেয়ার তাঁর অস্ত্র।
মেজর অমরদীপ সিং সুস্থ হয়ে উঠে আবার আবার যোগ দিয়েছিলেন সেনা বাহিনীর কাজেই। জীবন আগের মতো নেই জেনেও তিনি থমকে যাননি। কখনও হতাশা আসেনি। তিনি শুধু জানতেন তাঁকে আবার ফিরতে হবে পুরনো জায়গায়। মেজর অমরদীপ সিং-এর লেক্যুটেন্যান্ট কোলোনেল পদে পদন্নতি হয়।
কোমা থেকে ফিরে আসা সহজ নয়। সুস্থ হয়ে সেনাবাহিনীতে ফিরে আসা আরও কঠিন। এই গোটা যুদ্ধ তাঁর সঙ্গী আর প্রধান স্তম্ভ ছিলেন তাঁর স্ত্রী মেজর শীলা এবং তাঁর বাবা সিনিয়র মিলিটারি অফিসার কল. দেহাল।
নিজে সীমান্ত রক্ষা করে গিয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছেন। ইচ্ছে করলে বেছে নিতেই পারতেন অন্য কেরিয়ার, কিন্তু রণাঙ্গন ছাড়তে তিনি নারাজ। মেজর অমরদীপ সিং নতুন প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণা, তাঁর ফিরে আসার লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীও।
জীবন আর বেঁচে থাকাটাকে যাদের কাছে প্রতিদিনের লড়াই মনে করে তাদের প্রতি মেজর অমরদীপ সিং-এর বার্তা, “তোমার ভিতরের শক্তিই তোমার জোর, জীবনে কোনও দিন আশা ছেড় না”