সারা পৃথিবী জুড়েই এক চরম অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে ধর্মের নামে। ধর্মকে ভিত্তি করে একের পর এক ধ্বংসলীলায় মেতেছে তথাকথিত অতি সভ্য মানব সম্প্রদায়। এমনকি ভারত সেই তালিকা বহির্ভূত তা বলা যায় না। আর এমন পরিস্থিতিতেই খানিক শান্তির বার্তা দিতেই বা বলা যায় শান্তি, ধর্মীয় সহিষ্ণুতার নির্দশন স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা নিলো আবু ধাবি। আবার তাও বিশ্বের মধ্যেই প্রথম কোনো দেশে এমন নিদর্শন দেখা যাবে। কিন্তু সেই অত্যাশ্চর্য সহিষ্ণুতার নিদর্শন ঠিক কি ???? আজ সেই কথাই বলবো।
এখানেই প্রথম তিন ধর্মের প্রার্থনার স্থান গড়ে উঠছে তাও পাশাপাশি। একটি মসজিদ, গির্জা এবং সিনাগগ (ইহুদীদের ধর্মস্থান)। এই তিনটি উপাসনালয় পাশাপাশি গড়ে তোলা হবে আব্রাহাম ফ্যামিলি হাউজে। মূলতঃ, এই তিন ধর্মেই আব্রাহামকে ঈশ্বর রূপে মান্য করা হয়। কিন্তু হঠাৎ এই সৃষ্টির পরিকল্পনা হয় নি। দীর্ঘদিনের অশান্তির পরিস্থিতির অনুধাবনের পর খানিক শান্তির বার্তা বহন করতেই পোপ ফ্রান্সিস ও আল আজহারের বড় ইমাম আহমেদ-এল-তায়েবের উদ্যোগেই এমন সমন্বয় গড়ে উঠছে। ২০২২ সালে এই উদ্যোগটি সম্পন্ন হবে। ইতিমধ্যেই দুবাইয়ের শাসক সই করে সহমত পোষণ করেছেন এবং কাজ শুরু হয়ে গেছে।
স্বাভাবিকভাবেই এই তিন স্থাপত্যের আকার ভিন্ন , তবে প্রশান্তি ও বৈচিত্র আনতেই প্রত্যেকটির চারদিকে রয়েছে একটি বাগান। এছাড়া সেখানে থাকবে একটি এডুকেশন সেন্টার ও মিউজিয়াম। কিন্তু স্থাপত্যের মধ্যেও মেলবন্ধন ঘটানোর পরিকল্পনাটিও বেশ অভিনব - প্রত্যেকটির নকশা ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও, ৩ উপাসনালয়ের সদর দরজা একই রকম রাখা হবে। আবার তিন উপাসনালয় সঠিক দিক নির্দেশ করেই নির্মিতও হবে - মসজিদের মুখ মক্কার দিকে, গির্জাটি সূর্যের দিকে এবং সিনাগগটি জেরুজালেমের দিকে মুখ করে বানানো হবে। আবার এমন ভাবে এই ৩ উপাসনা ক্ষেত্রের নির্মাণ হচ্ছে যাতে তিন স্থানে আলাদা আলাদা ভাবে প্রবেশ করা গেলেও একটি পোডিয়ামে এসে মিলিত হতে পারবেন সব ধর্মাবলম্বী মানুষ। আর সেখান থেকে দেখা যাবে এই তিনটি স্থানই। বিষয়টি বেশ অন্যরকম এবং শান্তি ক্ষেত্র হবে তা অনুমান করে যায়।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে ইসলাম ধর্মের পাশাপাশি অনান্য ধর্মের প্রতি সহনশীল হয়েছে সরকার। এই মুহূর্তে যেখানে পৃথিবী জুড়ে অশান্তি, ধর্মের কারণে বিভাজন বাড়ছে , খানিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আছে তার পশ্চাতে। সে যাই হোক পরিস্থিতি উন্নয়নে, সহিষ্ণুতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আবুধাবির মতো উন্নত শহর ও সেখানকার শাসকের ভূমিকা সত্যি প্রশংসার দাবিদার। বলতে দ্বিধা নেই এই উদ্যোগ কিছুটা হলেও ধর্মীয় সমন্বয়ের বার্তা বাহি।