ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটি অফ বাংলাদেশ সম্প্রতি ঋত্বিক ঘটকের জন্মভিটা সংরক্ষণ এবং হেরিটেজ ঘোষণার দাবীতে মানববন্ধন করে।
ঢাকার জাতীয় সংগ্রহশালার সামনে থেকে শুরু হয় মানববন্ধন। চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব, লেখক, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতি জগত থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। শুধু মাত্র ঋত্বিক ঘটক নন, সত্যজিৎ রায় এবং মৃণাল সেনের পৈতৃক ভিটেও হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণার দাবী তোলেন তাঁরা। তাঁদের দাবি এই তিনটি স্থানকে হেরিটেজ সম্মান দিয়ে ফিল্ম সেন্টার, সংগ্রহশালা হিসেবে গড়ে তোলা হোক এই তিন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের নামে।
বাংলাদেশের তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের কাছে একটি স্মারক লিপি দেওয়া হয় এ ব্যাপারে।
রাজশাহীর মিঞাপাড়ায় ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়ি। এই বাড়িতেই ঋত্বিক ঘটক, মহাশ্বেতা দেবীর ছোটবেলা কেটেছিল। ঋত্বিক ঘটকের স্মৃতি বিজড়িত কয়েকটি ঘর এখনও অবশিষ্ট আছে। সম্প্রতি সেই বাড়িটি ভেঙে ফেলছে রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সাইকেল রাখার জন্য গ্যারেজ তৈরি করতে বাড়ির একটি অংশ ভেঙে তার ইট, সিমেন্ট ও সুরকি এনে রাখা হয়েছিল। বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে সর্বস্তরের মানুষ। তার পরেই দাবী ওঠে এই তিন বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের বাড়ি হেরিটেজ ঘোষণার।
সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক বাড়ি কিশোর গঞ্জের মসূয়া গ্রাম। পিতা সুকুমার রায় এবং প্রপিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী এই বাড়িতেই জন্মেছিলেন। তাঁদের বেড়ে ওঠাও এই বাড়িতেই।
ফরিদ পুরের ঝিলটুলি মহল্লায় মৃণাল সেনের পৈতৃক বাড়ি। ফরিদপুর উচ্চবিদ্যালয় এবং রাজেন্দ্র কলেজে পড়াশোনা করেছেন। সম্প্রতি রাজশাহী ফিল্ম সোসাইটি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র সাংসদের সভ্যরা মৃণাল সেনের পৈতৃকবাড়ি সংরক্ষণের দাবী তুলেছেন। ১৯২৩ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ফরিদপুরের ঝিলটুলীর বাড়িতে জন্ম নেন মৃণাল সেন। মাধ্যমিকের পড়াশুনা শেষে তার বাবা বাড়িটি বিক্রি করে কলকাতায় পাড়ি জমান।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মৃণাল সেনের পুত্র কুনাল সেন জানিয়েছেন, “ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের মানবন্ধনের খবর শুনে ভালো লেগেছে। কিন্তু বাবার বাড়ির থেকে ছবি সংরক্ষণ অনেক বেশি জরুরী”।
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে এই তিন ব্যক্তিত্বের পৈতৃক বাড়ি গুরুত্বপূর্ণ ‘ল্যান্ডমার্ক’। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিজেদের মাতৃভাষা এবং সংস্কৃতির গৌরব সম্বন্ধে সচেতন করে তোলার জন্য এই সংরক্ষণের দাবীর উদ্দ্যেশ্য।