প্রয়াত হলেন ভারতের প্রথম মহিলা ডিজিপি (ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ) কাঞ্চন চৌধুরী ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর, সোমাবার রাতে, মুম্বইতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। অসুস্থতার কারণেই এই মৃত্যু বলে মনে করা হচ্ছে। ২০০৪ সালে উত্তরাখণ্ডের ডিজিপি’র পদে আসীন হওয়ার পর দেশ জুড়ে বিপুল প্রতিক্রিয়া তৈরী হয় তা নিয়ে, তিনিই দেশের প্রথম মহিলা যিনি প্রথম এই পদের অধিকারী হয়েছেন।
দেশের প্রথম মহিলা ডিজিপি’র পদ অধিকার করার পাশাপাশি তিনি ছিলেন দেশের দ্বিতীয় মহিলা আইপিএস অফিসার, প্রথম জন ছিলেন কিরণ বেদি। পুলিশ অফিসার হিসেবে দীর্ঘকাল নিজের দায়িত্ব পালন করার পর ২০০৭ সালের ৩১শে অক্টোবর কর্মজীবন থেকে অব্যাহতির উদ্দেশ্যে তিনি তার পদত্যাগ পত্রটি জমা দেন। তার ফেয়ারওয়েল প্যারেডে উত্তরাখন্ড পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গার্ড অফ অনার’ সন্মান প্রদান করা হয় তাঁকে।
পাঞ্জাবের অমৃতসরের বাসিন্দা কাঞ্চন, ছেলেবেলা থেকেই পুলিশ অফিসার হওয়ার ইচ্ছে পোষণ করতেন, বয়সের সাথে সাথে সেই ইচ্ছে পূর্নাঙ্গ রূপ পায়। রাজ্যের প্রথম মহিলা ডিজিপি হিসেবে মহিলাদের উপর অত্যাচারের বিরূদ্ধে সরব হন কাঞ্চন। কর্তব্যরত কালে সবসময়ই মহিলাদের হয়ে লড়ে গেছেন ১৯৭৩-এর এই ব্যাচ অফিসার। তার উদ্যোগেই প্রথম শহরের ট্র্যাফিক পয়েন্টগুলিতে হোমগার্ড হিসেবে মহিলাদের নিযুক্ত করার কাজ শুরু হয়।
সাফল্যের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেছিলেন, “আমার মনে হয় একজন পুলিশকর্মীর আসল কর্তব্য আমি পালন করেছি। সবসময়ই আমি দুর্বলদের পাশে দাঁড়িয়েছি।“
পরে ছোটো বোন কবিতা চৌধুরী ‘উড়ান’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে ছোটো পর্দায় তাঁর কৃতিত্বকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন। ডিজিপি কাঞ্চনকেও ছোটো পর্দার এই ধারাবাহিক অনুষ্ঠানটিতে স্বল্প সময়ের জন্য দেখা গিয়েছিল।
অবসরের পর, রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন কাঞ্চন। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির হয়ে নির্বাচনে অংশ নিলে ব্যর্থতার মুখ দেখতে হয় তাঁকে।
মৃত্যুর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ আইপিএস অ্যাসোসিয়েশন একটি বিবৃতিতে শোকপ্রকাশ করে জানিয়েছেন, “আমাদের অন্যতম একজন আইকন, ভারতের প্রথম মহিলা ডিজিপি ও দ্বিতীয় মহিলা আইপিএস অফিসার কাঞ্চন চৌধুরী ভট্টাচার্য্যের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকজ্ঞাপন করছি। তিনি ছিলেন উচ্চগুণসম্পন্ন চিন্তাভাবনা ও হৃদয়ের একজন অফিসার, উজ্জ্বল কর্মজীবন ছিল তার। অসংখ্য পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন সারা জীবন।“