মাঝে মাঝেই দূরপাল্লার ট্রেনের কামরায় দেখা যেত যে যে জল ফুরিয়ে গেছে। নির্দিষ্ট স্টেশনে পাইপ জুড়ে দেওয়ার পরেও বিরতির সময়টুকুর মধ্যে জলের ট্যাঙ্ক ঠিকমতো ভর্তি হয় না। মাঝপথে জল ফুরিয়ে গিয়ে যাত্রীদের বিপাকের মুখে পড়তে হয়। ফলে, প্রায়শই তাঁরা এই নিয়ে অভিযোগ করতো রেলকে। তবে, এবার ওই সমস্যাকে দূর করতেই নতুন এক ব্যবস্থা শুরু করতে চলেছে রেল।
জানা গিয়েছে এই সমস্যাকে এড়াতে সেন্সর নির্ভর ‘রিয়েল টাইম ইন্ডিকেটর’ ব্যবহার করবে রেল। সেখানে ট্রেনের প্রতিটা কোচে কতটা জল আছে, সেটা বুঝতে পারবে তাঁরা। এমনই এক নতুন ব্যবস্থা করতে চলেছে রেল।
আরও জানা গিয়েছে যে একাধিক ব্যবস্থার সাথে যুক্ত করে তৈরি আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) নির্ভর প্রযুক্তি। এর দ্বারা কোন কোচে কতটা জল রয়েছে তা আলোর সংকেত থেকে জানা যাবে। এছাড়া যদি জলের সঞ্চয় নির্দিষ্ট মাত্রার নীচে নেমে যায়, তাহলে এসএমএস মারফত তার সংকেত পৌঁছবে কাছাকাছি স্টেশনে ট্রেনের কামরায় জল ভরার দায়িত্বে থাকা নির্দিষ্ট ব্যক্তি এবং ব্যবস্থার কাছে। ফলে, একসঙ্গে সমস্ত কামরায় জল ভরার পরিবর্তে যখন যেমন প্রয়োজন, ঠিক তেমনভাবেই জল ভরা যাবে। রেল কর্তারা মনে করছেন যে এই ব্যবস্থার জন্যই সময় থেকে শুরু করে জল ও বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে।
এই ব্যবস্থা শুরু করার আগে রেলের কামরায় জল ভরার ব্যবস্থাটিকে উন্নত করতে বিভিন্ন স্টেশনে আধুনিক পাম্প এবং ‘সুপার ভাইসারি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজিসন’ সিস্টেম (স্কাডা) চালু করা হয়েছিল। বহু গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে শক্তিশালী পাম্প দিয়ে ওই প্রযুক্তিতে জল ভরার কাজ চলছে বর্তমানে। তবে, এই ব্যবস্থা করা হলেও সমস্যা পুরোপুরি মিটে যায়নি।
তাই এবার ভারতের সমস্ত জায়গায় আইওটি নির্ভর প্রযুক্তির ট্রায়াল বা মহড়া দিতে চলেছে রেল। জানা গিয়েছে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ এবং হাওড়া ডিপোকে এই পরীক্ষার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে, ওই দুই ডিভিশনের বহু দূরপাল্লার আপ এবং ডাউন ট্রেনের একটি করে কোচে ওই প্রযুক্তি বসিয়ে টানা তিন মাস ধরে পরীক্ষা চলবে। এরপর সেই পরীক্ষার ফলাফল খতিয়ে দেখে ওই যন্ত্রটি ট্রেনের বিভিন্ন কোচে বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে।