জাদুঘরের বাইরে কলকাতাতেই ২০টি নতুন গ্যালারি করতে চলেছে ভারতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ

জাদুঘরে স্থানাভাব। ভারতীয় জাদুঘরে যত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আছে তার পুরোটা দর্শকের সামনে কর্তৃপক্ষ তুলে ধরতে পারে না। তাই আলিপুর ন্যাশনাল লাইব্রেরির বেলভেডিয়ার হাউস এবং ডালহৌসির কারেন্সী বিল্ডিং-এ আলাদা গ্যালারি করতে চলেছে ভারতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। এই দু'জায়গায় মোট ২০টি গ্যালারি হবে। এর মধ্যে ১৩টি হবে ন্যাশনাল লাইব্রেরির বেলভেডিয়ার হাউসে, বাকি ৭টি হবে ডালহৌসির কারেন্সী বিল্ডিং-এ। ভারতীয় জাদুঘরের ডিরেক্টর রাজেশ পুরোহিত এই কথা জানিয়েছেন।

                         ২০৬ বছরে পড়লো ভারতীয় জাদুঘর। এখানে ১.৮ লক্ষ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। রাজেশ পুরোহিত জানান, "১.৮ লক্ষ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে আমরা মাত্র ৫ শতাংশ দর্শকদের সামনে তুলে ধরতে পারি। এর মূল কারণ স্থানাভাব। এখানে বিপুল পরিমান প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিস রয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের জাদুঘরের জিনিসপত্র আদানপ্রদান হয়। আমরা যখন কোনো জিনিস বিদেশে পাঠাই, তখন তাকে বিশেষ ভাবে জীবাণুমুক্ত করে পাঠাই, তার পর সেগুলো যখন আবার আমাদের জাদুঘরে ফিরে আসে তখন আমরা আবার সেই জিনিসগুলোকে জীবাণুমুক্ত করে তার পর প্রদর্শনীর জন্য দর্শকদের সামনে তুলে ধরি। এই প্রক্রিয়া সারা বছর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চলতে থাকে। আবার একই ভাবে অন্য দেশ থেকেও আমাদের জাদুঘরে নানান জিনিস আসে প্রদর্শনীর জন্য। তাই এত বিপুল পরিমান প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিস ঠিকভাবে রাখার ও প্রদর্শনীর জন্য দর্শকদের সামনে তুলে ধরার ক্ষেত্রে স্থানাভাব এখন আমাদের বড় সমস্যা। তাই আমরা ঠিক করেছি ন্যাশনাল লাইব্রেরির বেলভেডিয়ার  হাউস এবং ডালহৌসির কারেন্সী বিল্ডিং-এ মোট ২০টি নতুন গ্যালারি করব।"

                     কি থাকবে এই দুটি গ্যালারিতে? উত্তরে রাজেশ পুরোহিত জানালেন, " ন্যাশনাল লাইব্রেরির বেলভেডিয়ার হাউস একটি হেরিটেজ ভবন। কারেন্সী বিল্ডিংটিও প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণের অধীনে আছে। বেলভেডিয়ার হাউসে দেবদেবীর বিভিন্ন রকমের চিত্র ও ভাস্কর্য রাখা হবে, তার পাশাপাশি থাকবে নানান উদ্ভিদ ও প্রাণীর ছবি। এই গ্যালারির মাধ্যমে আমরা প্রকৃতিকে দর্শকের সামনে তুলে ধরব। আর কারেন্সী বিল্ডিং-এর গ্যালারিতে থাকবে দুটো ভাগ, একটিতে থাকবে ভারতীয় শিল্পকলায় নারীর ভূমিকা, আর একটি ভাগে থাকবে সময় ধরে ভারতীয় বয়ন শিল্পের নানান নিদর্শন। এ ছাড়াও তিব্বত, বর্মা, চীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন শিল্প সামগ্রীও এখানে দর্শকদের জন্য প্রদর্শিত হবে। আমরা আশা করছি দুটো গ্যালারিই পর্যটকদের আকর্ষণের দিক থেকে প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকবে। তাছাড়া যাঁরা ভারতীয় শিল্পকর্মে নারীর ভূমিকা এবং ভারতের বয়ন শিল্প নিয়ে গবেষণা করেন, তাঁরাও এই দুটো গ্যালারি থেকে গবেষণার অনেক উপাদান পাবেন।"

                  ভারতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, এই দুটো গ্যালারির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আগামী ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে গালারিদুটো দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়ার দিকে লক্ষ্য রেখে এখন জোর কদমে কাজ চলছে ।

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...