যুদ্ধক্ষেত্রের মাটিতে প্রতিপক্ষকে হারানোর পাশাপাশি এবার দুরন্ত গতিতে ছুটে আসা শত্রুপক্ষের গুলি থেকে সেনা তাঁর মাথাকেও বাঁচাতে পারবেন। আর এটা সম্ভব হয়েছে ভারতীয় সেনা মেজর অনুপ মিশ্রের জন্য। এর আগে ভারতীয় বাহিনীর হাতে ফুল বডি জ্যাকেট তো ছিলই। এবার ভারতীয় সেনা পাচ্ছে অত্যাধুনিক বুলেটপ্রুফ হেলমেট। তাই একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, ভারতীয় সেনা আত্মরক্ষার জন্য মোক্ষম অস্ত্র পেল।
জানা যাচ্ছে যে, একে-৪৭ থেকে ছুটে আসা গুলিকে খুব সহজেই রুখে দিতে পারবে এই বিশেষ হেলমেট। সেনা সূত্রে বলা হয়েছে যে, ১০ মিটার দূর থেকে একে-৪৭ এর গুলি রুখতে পারবে এই বুলেটপ্রুফ হেলমেট। শুধু তাই নয়, সেনা সূত্রে আরও খবর, এই হেলমেট সেনার মাথায় থাকলে যত আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই গুলি চালানো হোক না কেন, তাঁর মাথা সুরক্ষিতই থাকবে। এর থেকে আনন্দের এবং গর্বের বিষয় হল যে, বিশ্বে এই প্রথম এমন আধুনিক প্রযুক্তির হেলমেট বানালেন একজন ভারতীয় সেনা মেজর।
এই অত্যাধুনিক হেলমেট আবিষ্কারক সেনা মেজর মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর এই ধরনের আবিষ্কার এই প্রথমবার নয়, এর আগে বিশেষ ধরনের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট বানিয়ে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। সাধারণ বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটের সঙ্গে তাঁর বানানো জ্যাকেট অনেকটাই আলাদা। আলাদা এই কারণে যে, মেজর অনুপ মিশ্রের বানানো জ্যাকেট জওয়ানের গোটা শরীরকেই মুড়ে রাখবে বর্মের মতো। এই জ্যাকেট বানানো হয়েছিল পুনের কলেজ অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। জানা যাচ্ছে যে, সেই জ্যাকেট পড়ে সন্ত্রাসদমন অভিযানে জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইও করেছিলেন জওয়ানরা।
২০১৬-১৭ সালে সেনা মেজর অনুপ মিশ্রের তত্ত্বাবধানে পুনের ওই মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ৫০ হাজার এই ধরনের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট বানানো হয়েছিল। এরপর এই ধরনের হেলমেটের চাহিদা এবং জনপ্রিয়তা এতটাই বাড়ে যে, ২০১৮ সালে এই জ্যাকেট তৈরির পরিমাণ একলাফে ৫০ হাজার থেকে দেড় লক্ষেরও বেশি দাঁড়ায়। পাশাপাশি এই ধরনের জ্যাকেট বানানোর জন্য পুনের কলেজের সঙ্গে চুক্তিও করে ফেলে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতীয় সেনা বাহিনীর আত্মরক্ষার জন্য এমন অস্ত্র বানানোর স্বীকৃতিস্বরূপ আর্মি ডিজাইন ব্যুরো এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-এ সম্মানিত হয়েছেন মেজর অনুপ মিশ্র।
তাঁর এই কৃতিত্বকে কুর্নিশ জানাতেই হয়। এখন ভারতীয় জওয়ানরা যেকোনো স্থানে জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে বা যুদ্ধের ময়দানে অনেকটাই যে সুরক্ষিত সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আর তার সব কৃতিত্ব এই সেনা মেজর অনুপ মিশ্রের। তাঁর আবিষ্কার আগামীদিনে অনেক জওয়ানের মৃত্যু আটকাতে সক্ষম হবে, এই আশা করাই যায়।