কোভিডের সেই ভয়াবহ মহামারীর ক্ষত এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্বের বহু মানুষ। তার মধ্যেই আবার হানা দিচ্ছে আরও এক আতঙ্ক। সেই আতঙ্কের তাড়া খেয়েছিল এক ভারতীয় নাগরিক।
জানা গিয়েছে যে ভারতে প্রথমবার করোনাভাইরাসের নতুন শনাক্ত সাবভ্যারিয়েন্ট জেএন ১ মিলল। এবার সেই ভাইরাসের আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল কেরলে। সেখানেই নজরদারি চালাচ্ছে (India SARS-CoV-2 Genomics Consortium) বা (INSACOG)।
গত শনিবার এই বিষয়ে সমস্ত কথা জানালেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR)-এর ডিরেক্টর জেনারেল ড. রাজীব বহেল। তিনি জানিয়েছেন যে চলতি বছরের গত ৮ ডিসেম্বর কেরলের তিরুবনন্তপুরম জেলার কারাকুলাম থেকে একটি (RT-PCR) পজিটিভ নমুনায় আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
জানা যাচ্ছে যে রোগীটি একজন ৭৯ বছরের মহিলা। তাঁর হালকা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। টেস্ট করতেই পজিটিভ বেরিয়েছে। তবে এখন চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে সেই রোগিটি তিনি এখন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
জেএন ১ কোভিড-১৯ ভ্যারিয়েন্টটি সারা বিশ্বে ছেয়ে যাচ্ছে। ফের এক নতুন অতিমারির কবলে পড়তে পারে গোটা বিশ্ব। বিশেষজ্ঞদের সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে এই ধরনের ভ্যারিয়েন্টে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হালকা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে সকলের মধ্যে এবং তাদের বেশিরভাগই রোগীরাই কড়া ওষুধ ছাড়াই সেরে উঠতে পারছে।
তবে, এই জেএন ১ কোভিড-১৯ ভ্যারিয়েন্টটিকে সম্পূর্ণ ভাবে ভুলে গেলে চলবে। এর সম্পর্কে সমস্ত রকম তথ্য জানা দরকার।
আজ এই জেএন ১ ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপারে সমস্ত বিষয় জানানো হবে —
জানা গিয়েছে যে এই ভ্যারিয়েন্টটি সারা বিশ্বে ফের ছড়িয়ে পড়ছে। এই জেএন ১ সাব ভ্যারিয়েন্টি পিরোলা প্রজাতির (BA.2.86) বংশের।
এর আগে সিঙ্গাপুরে ভারতীয় এক পর্যটকের মধ্যে এই সাব- ভ্যারিয়েন্টটি ধরা পড়েছিল। তাই প্রশাসনের স্বাস্থ্য বিভাগকে সতর্ক করে তুলছে এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে। তবে, এই জেএন১ ভারতের প্রথম নয়, লুক্সেমবার্গে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তারপরেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকায় প্রথম আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল। এরপর এই মাসের ১৫ই ডিসেম্বর চিন দেশে এই সাব-ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ৭ জনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। এখনও পর্যন্ত আমেরিকা ও চিন ছাড়া ইংল্যান্ড, আইসল্যান্ড, স্পেন, পর্তুগাল এবং নেদারল্যান্ডের মতো দেশেও জেএন১ আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এবার ভারতও সেই তালিকায় নাম লেখাল।
তবে, BA.2.86 প্রজাতির হলেও এই জেএন ১ ভ্যারিয়েন্টটি একটি জায়গায় পুরোপুরি আলাদা। সিডিসি-র দাবি যে করোনা ভাইরাসের টিকা সাধারণত ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনকে নষ্ট করার চেষ্টা করে। তাঁরা আশা করছে যে সেই ভ্যাকসিনটি এই দুই ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধেই কাজ করবে। তবে এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের ব্যতিক্রমী চরিত্র হল যে এটি স্পাইক প্রোটিনের মাধ্যমে মিউটেশন অর্থাৎ বংশবৃদ্ধি করার শক্তিটা রয়েছে।
কিকরে বুঝবেন আপনি জেএন ১ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত?
জানা গিয়েছে যে জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা, এবং ছোটখাটো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলি জেএন ১-এর সাধারণ লক্ষণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃদু উপসর্গ দেখা যায় এই রোগে, তাই রোগীরা প্রায় কোনও চিকিৎসা ছাড়াই বাড়িতে বসেই সুস্থ হয়ে উঠছেন।