হাত থেকে হঠাৎ ছিটকে পড়ল মোবাইলটা। মূহুর্তে চুরমার নতুন স্মার্টফোনখানা। স্ক্রিন চুরচুর। কে বলবে সপ্তাহখানেক আগে কেনা ফোন! কিংবা ল্যাপটপের কথাই ধরুন না, তাড়াহুড়োর কাজের মাঝে গ্যাজেট নিয়ে এমন ঝামেলায় আখচার পড়তে হয়।
এবার এই সমস্যার সমাধানে একটু নতুন আইন আনার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র সরকার। গ্যেজেটের ক্ষেত্রে উপভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় ‘রাইট টু রিপেয়ার’ আইন প্রণয়ন করার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই ফ্রেমওয়ার্ক শুরু হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকে।
প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে, কৃষি সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি, মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট, অটোমোবাইল, অটোমোবাইল যন্ত্রাংশ, এবং আর কোন কোন ক্ষেত্র বিষয়ে ‘রাইট টু রিপেয়ার’ অধিকারের মধ্যে পড়বে তা স্থির করবে কমিটি।
শুধু তাই নয়, গ্যেজেটে সমস্যা দেখা দিলে সংস্থার অনুমোদিত নির্দিষ্ট সার্ভিস সেন্টার নয়, যে কোনও জায়গা থেকেই সারানো যাবে। সেই ক্ষেত্রে কোম্পানি অনুমোদিত দোকানে না নিয়ে যাওয়ার জন্য শেষ হবে না ওয়ারেন্টি। যন্ত্রাংশ বা গ্যেজেটে ত্রুটি দেখা দিলে তা বাতিল করে নতুন পণ্য কেনার চেয়ে সেই ত্রুটি সারিয়ে নেওয়ার ঝোঁকই বেশি দেখা যায়। এই পরিস্থিতির সুযোগ নেয় বিভিন্ন সংস্থা। হয় তারা অত্যাধিক মূল্য চায়, নাহলে ক্রেতাদের বাধ্য করে নতুন পণ্য ক্রয় করতে। এমনকি সংস্থাগুলি যন্ত্রে ঠিক কী সমস্যা হয়েছে সে বিষয়ে যথাযথ তথ্যও জানায় না। ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে তৃতীয়পক্ষ চলে আসে। কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন নিয়ম অনুসারে, এখন উত্পাদনকারী সংস্থাগুলিকে তাদের পণ্যগুলির সব তথ্য গ্রাহকদের দিতে হবে।
মন্ত্রক মনে করছে নতুন এই নিয়ম কার্যকর হলে সুবিধা পাবেন ক্রেতা বা উপভোক্তারা। নতুন নীতিতে ইলেকট্রনিক বর্জ্য কমানোর চেষ্টা করছে সরকার। সংস্থাগুলিকে প্রোডাক্ট ম্যানুয়াল প্রকাশ আবশ্যিক করবে সরকার। এখন ব্যয় কমাতে গিয়ে বেশিরভাগ সংস্থাই ম্যানুয়াল তৈরি করে না। ফলে গ্যাজেট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে না ক্রেতা। তাই যন্ত্র খারাপ হলে সারাই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানা যায় না। নির্ভর করতে হয় সংস্থার কর্মীদের ওপর।
এই ধরনের সমস্যাগুলি সমাধানের উদ্দ্যেশ্যেই প্রস্তাবিত নীতির পরিকল্পনা।