শনিবার ২২ অক্টোবর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হচ্ছে অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। মূলপর্বের যোগ্যতা নির্ধারক ম্যাচ শুরু হলেও গ্ৰুপ পর্বের প্রথম ম্যাচ শনিবার। মূলপর্বের ১২ টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এবছরে। মূল পর্বের একটি গ্ৰুপে ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ এবং অন্য গ্ৰুপে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তান ইতিমধ্যে অবস্থান করছে। এশিয়া চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকেও মূলপর্বের জন্য লড়তে হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপের তোড়জোড় এখন শেষলগ্নে। চড়েছে উত্তেজনার পারদও। ইতিমধ্যেই আইসিসির তরফে আসন্ন বিশ্বকাপের পুরস্কারমূল্য ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর আইসিসির তরফে বিশ্বকাপে কোন পর্যায়ে পৌঁছলে কোন দল কত টাকা পাবে, তার পুরোটাই ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে।
সিডনিতে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরদুই ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড "ট্রান্স-তাসম্যান" দ্বৈরথ দিয়ে সুপার ১২'র উদ্বোধন। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসল উন্মাদনা টের পাওয়াযাবে মেলবোর্নের বিমানবন্দরে। গোটা শহরটাই সেজে উঠেছে বিরাটদের হোডিং ব্যানারে। মেলবোর্ন বিমানবন্দর থেকে এমসিজির দিকে এগোলে রাস্তার দু'দিকে চোখে পড়বে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যানার।
মেলবোর্নে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের মুখোমুখি ভারত। দুইদলের এই বিশ্বকপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ এটাই। স্বাভাবিক ভাবে উন্মাদনা কোন পর্যায়ে তা এখানে বসেও কিছুটা আন্দাজ করা যাচ্ছে। ট্রাম-বাস সর্বত্র যাত্রীদের মধ্যে এই ম্যাচ নিয়েই আলোচনা। আট থেকে আশি উন্মাদনায় ফুটছে সবাই। শুধুমাত্র স্টেডিয়ামে বসে ভারত পাক ম্যাচ দেখার আকুতি প্রায় সবারই। একমাস আগেই ম্যাচের সব টিকিট ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। শেষ পিচ তৈরির কাজ।
বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষের ভিড় জমছে এখন শেন ওয়ার্নের শহরে। হোটেল মালিকরাও ব্যবসায় লাভ করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না। কানাডা, আমেরিকা, ইউরোপ থেকে আসা ক্রিকেটপ্রেমীদের থাকতে তো হবে। স্টেডিয়াম লাগোয়া বা তার কাছে পিঠে হোটেলের রুম ভাড়া এখন বাড়তি। মেলবোর্নে ক্রিকেটপ্রেমীদের ভিড় এতটাই যে হোটেলেও নাকি রুম নেই। সমস্ত হোটেল বুকড।
বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে সব সময়ই উত্তেজনা থাকে। তাছাড়া বর্তমানে আইসিসি টুর্নামেন্ট ছাড়া ভারত পাকিস্তান ম্যাচ আর কোথাও হয় না। তাই বিশ্বের সমস্ত ক্রিকেটপ্রেমী মুখিয়ে থাকে এই ম্যাচ নিয়ে।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছিল বাবর আজমের পাকিস্তান। তার আগে কখনও বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতকে পরাস্ত করতে পারেনি পাকিস্তান। এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাই দুই দলের লড়াই নিয়ে বাড়তি উত্তেজনা রয়েছে। সপ্তাহ কয়েক আগেই মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের (এমসিজি) টুইটারে পিচ প্রস্তুতির ছবি পোস্ট করা হয়। সেখানে লেখা, 'ক্রিকেটের প্রস্তুতি চলছে।'
এই বছর ইতিমধ্যেই দু'বার রোহিত এবং বাবরের দল মুখোমুখি হয়েছে। এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে হারালেও সুপার ফোরে বাবরদের বিরুদ্ধে হেরে যায় ভারত। গ্রুপ পর্বে ভুবনেশ্বর কুমার, হার্দিক পাণ্ড্যদের দাপটে ম্যাচ জেতে ভারত। সুপার ফোরে প্রথমে ব্যাট করে ভারত ১৮১ রান তুললেও শেষ ওভারে গিয়ে ম্যাচ হারে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে দুই দলই ব্যস্ত ঘরের মাঠে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় খেলতে। অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়ে ভারত প্রস্তুতি নিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নামার। পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ড সিরিজ় ২-২। বাকি আরও তিনটি ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সেরে ফেলতে চাইছে তারা।
কিন্তু এত অপেক্ষার বাদ সাধতে পারে বৃষ্টি। রবিবার মেলবোর্নে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়া জুড়ে লা নিনার প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। রবিবার মেলবোর্নে সারা দিন ধরে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মৌসম ভবন। ২৪ ঘণ্টায় ১০ থেকে ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। খেলা হবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা যাচ্ছে। তেমনটা হলে হয়তো মাঠেই নামতে পারবেন না রোহিত শর্মা, বাবর আজমরা।
বুধবার ব্রিসবেনে বৃষ্টির জন্য পরিতক্ত হয় ভারত বনাম নিউজিল্যান্ডের প্রস্তুতি ম্যাচ। সুখবর এটাই, মেলবোর্নে ক্রিকেট গ্রাউন্ডের ড্রেনেজ এতটাই উন্নত যে, গ্রাউন্ড ম্যানদের ভেজা মাঠ শুকিয়ে খেলার আদৰ্শ করতে সময় লাগে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট। টি-টোয়েন্টিতে দু'টি দলকে অন্তত পাঁচ ওভার করে খেলতে হয়। গ্রুপ পর্বে কোনও অতিরিক্ত দিন নেই। অর্থাৎ, যদি পাঁচ ওভার করে খেলা না হয় তা হলে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে।
মানুষের মন তো! একবার দুশ্চিন্তা ঢুকলে আর রেহাই আছে? তাই স্থানীয় মানুষ, ছাত্র-ছাত্রীরা ধন্দে ভুগছেন, সাংবাদিকদের দেখলেই তাদের প্রশ্ন, ম্যাচটা বৃষ্টিতে ভেস্তে যাবেনা তো! সব মিলিয়ে মেলবোর্ন শুধুই ভারত-পাক ম্যাচ নয়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়েই প্রচণ্ড উচ্ছসিত। শুধু ভারত-পাকিস্তান নয়, শনিবার অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচেও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সে দিন সিডনিতে ৮০ শতাংশ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মৌসম ভবন।
২০১১-র পর থেকে অধরা বিশ্বকাপ। তারমধ্যে যশপ্রীত বুমরার ছিটকে যাওয়া বড় ধাক্ক। এই বিষয়ে ভারতের প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট ও প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী জানান, "বড় ধাক্কা। খুবই বড় ধাক্কা তো বটেই। সব ধরনের ক্রিকেটেই বুমরা কত বড় ম্যাচউইনার, তা তো সবাই দেখেছে।"
সৌরভ আরো বলেন, "বুমরার না থাকা নিশ্চয়ই ধাক্কা। কিন্তু ওর জায়গায় যে-ই যাক...মহম্মদ শামি বা অন্য কেউ, সে-ও খারাপ হবে না। ভারতের ফাস্ট বোলিংয়ে এখন অনেক গভীরতা তৈরি হয়ে গিয়েছে, তাই প্রচুর বিকল্পও রয়েছে। শামির অভিজ্ঞতা রয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় খেলেছে অনেক, সাফল্যও রয়েছে। নির্বাচকেরা ঠিক করবেন, টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক করবে বুমরার বিকল্প কে হবে। আমি আরও একটা কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। ১৯৯২-এর বিশ্বকাপ জিতেছিল পাকিস্তান। প্রতিযোগিতা শুরুর ঠিক আগে চোটের জন্য ছিটকে গিয়েছিল ওয়াকার ইউনিস। তাই সকলে যদি ভাল খেলতে পারে, তা হলে বুমরার অভাব নিশ্চয়ই ঢেকে দেওয়া সম্ভব।"
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২০০১-এর সেই ঐতিহাসিক সিরিজে স্টিভ ওয়ের বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগে ছিটকে গিয়েছিলেন অনিল কুম্বলে। একথা মনে করিয়ে সৌরভ বলেন, "বোলিংয়ে প্রায় কেউ-ই ছিল না। ধাক্কা তো বটেই। কিন্তু শুধু ধাক্কা ভেবে বসে থাকলে তো চলবে না। যা হাতে আছে তাই নিয়েই বিশ্বাস রেখে এগোতে হবে। তা ছাড়া আমি মনে করি, এক জন খেলোয়াড় কখনও বিশ্বকাপ জেতাতে পারে না। এটা টিম স্পোর্ট, তাই দলগত ভাবে ভাল খেলতে হয়। তবেই ট্রফি জেতা যায়। বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে তো সকলে ভাল না করলে আরওই জেতা সম্ভব নয়। বুমরা যদি থাকতও আর দারুণ বোলিং করত আর বাকি দশ জন ভাল না খেলত, তা হলে বিশ্বকাপ জেতা যেত না। কিন্তু বুমরা না থেকেও যদি সকলে ভাল খেলে, বিশ্বকাপ জেতা সম্ভব।"
যশপ্রীত বুমরার জায়গায় দলে ঢুকেছেন শামি। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে শামি ভারতীয় দলের হয়ে কুড়ি ওভারের ক্রিকেট খেলেননি। করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে খেলতে পারেননি তিনি। এ বারের বিশ্বকাপেও তাঁর জায়গা হত না। বুমরা চোট পাওয়ায় যেন পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতো সুযোগ পেয়েছেন। বাংলার জোরে বোলার প্রস্তুতি ম্যাচের মাত্র এক ওভারেই বুঝিয়ে দিলেন, সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করবেন। সোমবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে শেষ ওভারে জ্বলে উঠে শামি নিজের জাত চেনালেন। ওই ওভারের শেষ চার বলে চার উইকেট পায় ভারত।
শেষ ওভারে বল হাতে চমক দিয়ে চার উইকেট তুলে অস্ট্রেলিয়াকে একা হাতে হারিয়েছেন মহম্মদ শামি। কিন্তু বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁর কি নামার কথাই ছিল না! অন্তত রোহিত শর্মাদের টিম লিস্ট সে কথাই বলছে। দলের ১৫ জন ক্রিকেটারের মধ্যে শামির নাম ছিল ১৩ নম্বরে।
শেষ ওভারে শামিকে বল করতে পাঠিয়ে তাঁকে একটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন রোহিত। ম্যাচের পরে সেটা নিজেই জানিয়েছিলেন তিনি। রোহিত বলেছিলেন, ''সত্যি বলতে, শামি অনেক দিন পর ক্রিকেটে ফিরেছে। তাই ওকে একটা ওভারই দিতে চেয়েছিলাম। নতুন বলে ও কতটা ভয়ঙ্কর সেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এই ম্যাচে ওকে একটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিতে চেয়েছিলাম। দেখতে চেয়েছিলাম, শামি ডেথ ওভারে কেমন বল করে? ফলাফল কী, সেটা তো সবাই চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি।''
বুমরা ও শামি সম্পর্কে মুখ খুলেছেন সচিনও। মাস্টারব্লাস্টার বলেছেন, "বুমরার না থাকা বড় ক্ষতি। ভারতের প্রধান স্ট্রাইক বোলার ও। সত্যিকারের এক জন জোরে বোলার, যে ব্যাটারদের উপর দাপট দেখিয়ে উইকেট পেতে পারে। তবে শামি প্রমাণ করে দিয়েছে ও বুমরার আদর্শ পরিবর্ত হতে পারে।"
রোহিতের উদ্দেশে পরামর্শ দিতে গিয়ে সচিন জানিয়েছেন, কোন মাঠে খেলতে হচ্ছে এবং পরিবেশ কী রকম, তা বিচার করে তবেই প্রথম একাদশে স্পিনার রাখা উচিত ভারত অধিনায়কের। সচিনের মতে, অস্ট্রেলিয়ার মাঠ বড় হওয়ার কারণে স্পিনারদের বিরুদ্ধে মারা খুবই শক্ত। বলেছেন, "বল যে দিকে ঘুরছে, সে দিকে মারার একটা প্রবণতা দেখা যায়। খুব কমই ব্যাটার রয়েছে যারা ক্রমাগত স্পিনারদের বিরুদ্ধে চালিয়ে খেলতে পারে। সাধারণত বাউন্ডারির দৈর্ঘ্য কতটা তার উপর নির্ভর করে কোন স্পিনারকে খেলানো দরকার সেটা ঠিক করা উচিত। কোন দিকে হাওয়া বইছে সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।"
বিশ্বকাপে প্রথম একাদশে ঋষভ পন্থের থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। সচিন অবশ্য নাম না করেও পন্থকে খেলানোর পক্ষে। বলেছেন, "যে কোনও দলেই বাঁ হাতি ব্যাটাররা আলাদা মাত্রা যোগ করে। বিপক্ষের বোলার এবং ফিল্ডারদের অন্য ভাবে মানিয়ে নিতে হয়। যদি ডান হাতি এবং বাঁ হাতি ব্যাটার ক্রমাগত খুচরো রান নিতে থাকে, তা হলে বিপক্ষ দল সমস্যায় পড়বেই। দলের প্রথম দু'-তিন জন ব্যাটারকে নিয়ে আলাদা করে কিছু বলতে চাই না। তবে গোটা দলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে খেলতে হবে এবং দলের জন্যে যেটা ভাল সেটাই করতে হবে।"
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় পেয়েছে ভারত। তাই রোহিত শর্মারা ব্যর্থ হলে কোনও অজুহাতই দেওয়া উচিত নয় তাঁদের। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে ভারতকে এ ভাবেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন ভারতের আরেক প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার।
এক কলামে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক লিখেছেন, "একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। যদি ভারতীয় দল বিশ্বকাপে ব্যর্থ হয়, তা হলে প্রস্তুতির অভাব ছিল এমন অভিযোগ কোনও ভাবেই তোলা যাবে না। প্রথম ম্যাচের তিন সপ্তাহ আগে ওরা সে দেশে গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ভাল দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। এত দিনে ওদের তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা।"
গাভাস্কার আরও লিখেছেন, "পুরনো দিনের একটা কথা আছে— 'যদি প্রস্তুতি নিতে ব্যর্থ হও তা হলে ব্যর্থ হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকো।' ভারতের ক্ষেত্রে এই প্রবাদ খাটবে না। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে ওরা দেশে ছ'টা ম্যাচ খেলেছে। তার মধ্যে চারটে জিতেছে। বড় একটা প্রতিযোগিতার আগে ওরা ছন্দেই রয়েছে।"
দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় জিতলেও বহুদেশিক প্রতিযোগিতায় ভারতের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ভাল নয়। তবে এ বার ছবিটা বদলাতে পারে বলে মনে করেন গাওস্কর। লিখেছেন, "এই দলে তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার সুন্দর ভারসাম্য রয়েছে। ভারত যে ট্রফি জিততে পারে, এই বিশ্বাস তৈরি হয়েছে।"
বিশ্বকাপ জয়ের বিষয়ে অবশ্য আশাবাদী সৌরভ গাঙ্গুলী। প্রিন্স অফ ক্যালকাটা বলেন, "খুবই আশাবাদী। আমাদের দলে কত দারুণ সব প্রতিভা রয়েছে! তাই কে না আশাবাদী হবে! এখন পুরো ব্যাপারটাই হচ্ছে, মাঠে নেমে এই প্রতিভার সঠিক প্রতিফলন ঘটানো। আমাদের দলের দক্ষতা নিয়ে কোনও সন্দেহই থাকতে পারে না, বিশ্বের সেরা সব ক্রিকেটার রয়েছে। কিন্তু দিনের শেষে সব কিছু নির্ভর করে ওই একটা জিনিসের উপরে। মাঠে নেমে সেই যোগ্যতার ছাপ কতটা রাখতে পারলাম।" সৌরভের কথায়, "সব কিছু নির্ভর করবে মাঠে নেমে প্রতিভা কতটা কাজে লাগাতে পারলাম, তার উপরে। যে দলের ব্যাটিং লাইন-আপে রোহিত শর্মা, কে এল রাহুল, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পাণ্ড্য, ঋষভ পন্থ-রা রয়েছে, তাদের শক্তি বা দক্ষতা নিয়ে সংশয় থাকার কোনও জায়গাই নেই। এমন প্রতিভার গভীরতা আর কোন দলে রয়েছে? কিন্তু আসল হচ্ছে, প্রতিযোগিতায় কেমন খেলতে পারলাম।"
নিবন্ধকারঃ ঋদ্ধি রিত