সুখের আবার পরিমাপ হয় নাকি? সুখ তো একটা অনুভূতি, সে তো অধরা। একেকজন মানুষের কাছে একেক ভাবে সুখ অনুভূত হয়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে বলেছেন, “সুখে আছি সুখে আছি, সখা আপন মনে”| কবির এই লেখা থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায় আমি সুখী, যিনি বলছেন তাঁর কাছে তাঁর সুখের এক মানে, আবার তাঁর এই সুখের মানে অন্যের কাছে গ্রহণযোগ্যতা নাও পেতে পারে, এটাই স্বাভাবিক। তবে সার্বিকভাবে কোন দেশ কতটা সুখী তার একটা হিসেবে প্রতিবছর করে "ইপসোস" নামের একটি মার্কেট রিসার্চ সংস্থা। বিভিন্ন দেশের মানুষের ওপর সমীক্ষা করে একেকটি দেশের সার্বিক সুখের হিসেবে এরা কোনদেশ কতটা সুখী তা নির্ধারণ করে। এই সংস্থার বিচারে ২০১৯ সালে বিশ্বের ২৮টি দেশের মধ্যে ভারত নবম সুখী দেশের তকমা পেয়েছে। তবে এই সুখ পরিমাপের কিছু একক রয়েছে, তার বিচারেই ভারতের ভাগ্যে নবম সুখী দেশের শিরোপা জুটেছে। চলতি বছরের ২৪ মে থেকে ৭ জুন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী এই সমীক্ষাটি করেছে "ইপসোস" নামের এই সংস্থাটি। পুরো সমীক্ষাটিই হয়েছে অনলাইনে।
কি এই সুখ পরিমাপের একক? সংস্থাটির সমীক্ষাতে জানা গেছে, শরীর, স্বাস্থ্য, স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক, সন্তানের সঙ্গে বাবা-মায়ের সম্পর্ক, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই সুখী দেশ নির্বাচন করা হয়েছে। গত বছরের হিসেবে সারা বিশ্বের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সুখের পরিমান সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়াতে কিছুটা বেড়েছে। আবার এই হিসেব কমেছে মালয়েশিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন এর মতো দেশে। তবে সবকটি উপাদানের বিচারে ভারত নবম স্থানটি পেয়েছে।
শুক্রবার এই সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এই সমীক্ষা বলছে, যখন সুখের বিষয়ে কথা ওঠে তখন ভারতের মানুষ সুখী থাকার এক এবং একমাত্র একক হিসেবে তাঁদের আর্থিক অবস্থাকেই গুরুত্ব দিয়েছে। সমীক্ষা বলছে, ব্যক্তিগত সুরক্ষা, বন্ধু-বান্ধব, জীবনযাপন নিয়ন্ত্রনের ধারণার নিরিখে ভারতীয়দের সুখী থাকার বিষয়টি নির্ধারণ হয়েছে। এ ছাড়াও অন্যান্য নির্ধারকগুলোর মধ্যে ছিল আরামদায়ক জীবনযাপন, স্বাস্থ্য, সামাজিক পরিচিতি, শখ এবং আগ্রহের মতন বিষয়গুলিও।
এইসব নির্ধারকের উপর ভিত্তি করে অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা ৮৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে বিশ্বের সেরা সুখী দেশের তকমা পেয়েছে। তারপর চীন ৮৩ শতাংশ নম্বর নিয়ে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে, গ্রেট ব্রিটেন ৮২ শতাংশ নম্বর পেয়ে তৃতীয় স্থান পেয়েছে, চতুর্থ স্থান পেয়েছে ফ্রান্স, তার প্রাপ্ত নম্বর ৮০ শতাংশ। ৭৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে পঞ্চম স্থান পেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব। জার্মানি ৭৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে সপ্তম স্থান লাভ করেছে। আর ভারত ৭৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে নবম স্থান লাভ করেছে।