মহাকাশেও সাফল্য লাভ ভারতের

প্রধানমন্ত্রী গতকাল বেলা ১২টা নাগাদ ঘোষণা করলেন 'অ্যান্টি স্যাটালাইট মিসাইল' -এর অস্ত্রভাণ্ডারে যুক্ত হওয়ার কথা। মহাযুদ্ধের জন্য সব দিক থেকে প্রস্তুত প্রায় ভারত! আমেরিকা, রাশিয়া এবং চীনের পর গোটা বিশ্বে ভারত চতুর্থ দেশ হিসাবে আজ আত্মপ্রকাশ করেছে যাকে পরিভাষায় বলা হচ্ছে স্পেস ওয়ারিয়র! জানা গিয়েছে, দুপুর ১২ টা ১০ মিনিটে মহাকাশের লাইভ লো আর্থ অরবিট উপগ্রহকে নিখুঁত নিশানায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অ্যান্টি স্যাটেলাইট মিসাইল নিক্ষেপ করে ধ্বংস করে দেওয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র। ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরোর পক্ষ থেকে এই পরীক্ষা চালিয়ে ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বে আবর্তিত এক লো আর্থ অরবিট উপগ্রহকে ধ্বংস করা হয়। এই বিশেষ অভিযানটির নাম দেওয়া হয় মিশন শক্তি! তবে ভারতের কাছে এটি যে একটি ঐতিহাসিক দিন তা পরিষ্কার ভাবে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রথম ভারত মহাকাশ সুরক্ষা প্রকল্পে এতবড় একটি সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি আরও বলেন, তিনি বিশ্ববাসীকে জানাতে চান এই পরীক্ষা কোনও দেশকে চ্যালেঞ্জ করা নয়, কোন যুদ্ধ ঘোষণা নয়। শুধু মাত্র ভারতের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করতেই এই পদক্ষেপ। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এই শক্তি আমরা কারও বিরুদ্ধে বিনা প্ররোচনায় ব্যবহার করব না। বিজ্ঞানী তথা স্ট্র্যাটেজিক পরিভাষায় ভারত আজ যেটা করেছে তাকে বলা হয় স্পেস মিলিটারাইজেশন।তাই বলাই যায়, মহাকাশ সুরক্ষাতেও ভারতের প্রযুক্তিগত সেনা মোতায়েন রইল এখন থেকে।

তবে এই মিশন শক্তি কি?  চলুন জেনে নেওয়া যাক...

১) প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও)এবং মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র প্রকল্প। কক্ষপথের কৃত্রিম উপগ্রহকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ধ্বংসের প্রযুক্তি ও তার বাস্তবায়ন এর লক্ষ্য। ২০১০ সালে প্রথম এই প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়ে থাকে। যেহেতু প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ বিজ্ঞানের মত বিষয় জড়িত তাই কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়নি।

২) তবে বুধবার ওড়িশার চাঁদিপুরের কাছে আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে ‘ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স ইন্টারসেপ্টর’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে ৩০০ কিমি উচ্চতার কক্ষপথে থাকা,  ভারতেরই একটি বাতিল কৃত্রিম উপগ্রহকে ৩ মিনিটে ধ্বংস করা হয়।

৩) শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্র ছাড়াও ১০২টি কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে। এই প্রযুক্তি সেগুলিকে সুরক্ষিত করবে।

৪)১৯৬৭ সালের আন্তর্জাতিক ‘আউটার স্পেস’ চুক্তি অনুযায়ী, মহাকাশকে সামরিক ক্ষেত্র করা যাবে না। প্ৰধানমন্ত্ৰী জানিয়েছেন, এই প্রযুক্তির ভূমিকা সম্পূর্ণ রক্ষণাত্মক। এই প্রযুক্তির দিক থেকে ভারত বিশ্বে  চতুর্থ স্থান লাভ করল।

৫) তবে এই বিষয়ে আরো জানা যায়,‘জ্যামিং’ অর্থে প্রযুক্তির মাধ্যমে শত্রু উপগ্রহকে বিকল করা। ‘ফ্লাই বাই’ অর্থে বিমান বা ড্রোন ব্যবহার করে ধ্বংস করা হয়ে থাকে।

৬) উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সাফল্য নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পরেই এই বিশেষ পরীক্ষা করা হয়েছে।

 তবে এই বিশাল পরিকল্পনায় সাফল্য পেয়েই বিশ্বদরবারে নিজেদের মহাকাশ যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত করতে পেরেছে ভারত! এবার থেকে মহাকাশে যে কোনও শত্রু দেশের উপগ্রহ ধ্বংস করে তার যোগাযোগ ব্যবস্থার দফারফা করতে সক্ষম ভারত।

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...