অন্ধ দৃষ্টির দাপাদাপিতে হারিয়ে যায় স্বচ্ছ দৃষ্টির স্বাধীনতা।
আমরা বুঝতে পারি কি?
লক্ষ্মী যখন আসবে তখন কোথায় তারে দিবি রে ঠাঁই?
দেখ্ রে চেয়ে আপন-পানে, পদ্মটি নাই, পদ্মটি নাই ॥
ফিরছে কেঁদে প্রভাতবাতাস, আলোক যে তার ম্লান হতাশ,
মুখে চেয়ে আকাশ তোরে শুধায় আজি নীরবে তাই ॥
কত গোপন আশা নিয়ে কোন্ সে গহন রাত্রিশেষে
অগাধ জলের তলা হতে অমল কুঁড়ি উঠল ভেসে।
হল না তার ফুটে ওঠা, কখন ভেঙে পড়ল বোঁটা--
মর্ত্য-কাছে স্বর্গ যা চায় সেই মাধুরী কোথা রে পাই ॥
রবি ঠাকুর এই গান লিখেছিলেন যোগাযোগ উপন্যাস যখন নাটক হিসেবে মঞ্চে উপস্থাপিত হয় সেই সময়ে।
কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় এই গান যেন হু হু করে কেঁদে ওঠে। গানের শেষ দুই লাইন ডানায় তীর বেঁধা পাখির মতো মিশে যায় কানে।
নিজের কাছে নিজে প্রশ্ন করি স্বর্গের মাধুরী ঠিক কেমন?
মর্ত্যের কাছে স্বর্গ যে মাধুরী সে চায় কোথায় পাওয়া যাবে তার সন্ধান?
রাস্তা ঘাট, ঘর, বার যেদিকে তাকাই শুধুই অধরার খোঁজ।
মাঝে মাঝে কানে হাত চলে যায়। চোখ বন্ধ করে নিই। যে দিকে তাকাই কিছুই তো মেলে না!
মোটা দাগের মানুষ। যা অসুন্দর, স্থূল তারই আধিপত্য। তাকেই মেনে নেওয়ার দায় চাপিয়ে দেওয়া। লোহার হাতুড়ি ঠুকে ঠুকে মগজ ভরে দেওয়া, চোখের আলো মনের আলো বলে কিছু হয় না সবটা illusion. ভাবতে হবে আমাদের মত করে।
এক ছাঁদে বাঁচতে হবে। একই রঙ, এক ঢং, এক স্বপ্ন। এর বাইরে আর যা কিছু সবটাই ‘ফাঁকি’।
সাতমহলা দোর দালান বাতিল হয়ে ভেঙে পড়ে। তার বদলে চৌখুপি ঘর। বোধ গুলো বদলে যায়। ভাবের ঘরে চুরি করে ভালো থাকার অভ্যাস।
কোথাও কোনও ব্যাকরণ বই নেই, তবু অদৃশ্য নিয়ম কানুন, বাগধারা চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। উড়ে বেড়ায়। সেই নিয়মেই চলতে হবে তোমায়। যতই ব্যাথা বাজুক।
অমল কুঁড়ি এমনিই ঝরে যায়। ফুটে ওঠা তার আর হয় না।
অন্ধ দৃষ্টির দাপাদাপিতে হারিয়ে যায় স্বচ্ছ দৃষ্টির স্বাধীনতা।
আমরা বুঝতে পারি কি?