কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক মরণোত্তর অঙ্গদানের বিষয়, এমনই দাবি উঠলো আলোচনাচক্রে। মঙ্গলবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অনুষ্ঠিত কলেজ ফেস্টের অংশ হিসেবে একটি আলোচনা চক্র আয়োজন করা হয়েছিল। বিষয় ছিল মরণোত্তর অঙ্গদান। আলোচনায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা আগামী চিকিৎসকদের কাছে এর প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে জানতে চান।
স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজেন পান্ডে জানান, সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি কারিকুলাম স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করে না। মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া সেটা করে থাকে। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ফাউন্ডেশন কোর্সে এক ঘন্টা মরণোত্তর অঙ্গদান নিয়ে আলোচনা করতে বলা হয়েছে। প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজই সেই পরামর্শ মতো ফাউন্ডেশন কোর্স করছে।সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে সব মহলে তাঁরা কথা বলবেন।
আলোচনাচক্র চলাকালীন অডিটোরিয়ামে উপস্থিত পড়ুয়াদের কাছে সিএমআরআই ইনস্টিটিউট অফ ক্রিটিক্যাল কেয়ারের প্রধান অরিন্দম কর, কত জন মরণোত্তর অঙ্গদানে প্রস্তুত তা জানতে চাইলে পড়ুয়াদের কাছ থেকে প্রবল প্রতিক্রিয়া মেলে। প্রস্তাবে সায় দিয়ে হাত তোলেন অধিকাংশ পড়ুয়া। বাকি পড়ুয়ারা মনে করছেন অঙ্গদানে প্রস্তুত থাকলেও এ বিষয়ে পরিবারের অনুমতি নেওয়া বিশেষভাবে প্রয়োজন, তাই আগে পরিবারের সাথে কথা বলা দরকার।
পড়ুয়ারা প্রস্তুত থাকলেও অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় বসে থাকা গরীব রোগীদের সুরাহা কি আদৌ সম্ভব হবে, প্রশ্ন উঠছে এ নিয়ে। কারণ সরকারি পরিকাঠামোয় এখনও অবধি মাত্র দুটি মেডিক্যাল কলেজেই রয়েছে মরণোত্তর অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা। রোটোর নোডাল অফিসার স্বাস্থ্যদপ্তরের যুগ্ম সচিব তমালকান্তি ঘোষ এ দিন জানান, উত্তরবঙ্গে অঙ্গ প্রতিস্থাপন ব্যবস্থা নিয়ে আসার পরিকল্পনায় রয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজকে কিডনি প্রতিস্থাপনের ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজগুলিকেও অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোয় উন্নীত করার প্রচেষ্টায় রয়েছেন তাঁরা।
অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা কার্যকরী হলেও প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ কোথা থেকে আসবে সে বিষয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। মুম্বই বা কর্নাটকে এই খরচের জোগান দিয়ে থাকেন কিছু এনজিও সংস্থা। কিন্তু এ রাজ্যের দরিদ্র রোগীরা কিভাবে জোগাড় করবে এই খরচ তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে।