ভূত নিয়ে জ্যান্ত মহলের একটা বাড়তি আকর্ষন আছে - মানে জ্যান্ত মানুষদের কথা বলছি। শীতের রাতে লোডশেডিংয়ে মোমবাতিতে নিজের ছায়া দেখেও ভয় পায় না বা অন্ধকারে নিজের পায়ের শব্দ শুনে এক বিচিত্র অনুভূতি হয় নি, কিংবা রাতের অন্ধকারে চোখ খুললেই মনে হয় কেউ হয় দেখছে না হলে দাঁড়িয়ে আছে - এমন অনুভব করেন নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল। এতো গেলো মনে হওয়ার কথা। আর এতে খানিক ইন্ধন যোগান সাহিত্যিক কুল, তাতে সন্দেহ নেই। কে কতখানি ছম ছমে পরিবেশ তৈরী করে এই সব অবাস্তব গল্পকে বাস্তবিক করে তুলতে পারে তা নিয়ে রীতিমতো পাঠককুলের মধ্যেই তর্ক বেঁধে যায়। তেঁনারা আছেন ? না কি মনের ভুল এনিয়ে নানা বিতর্ক আছে তা শেষ হওয়ার নয়। কিন্তু এতদিন তা ওই সিনেমা , গল্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও ভারতে এই প্রথম ভূত বিদ্যা বিষয়ক পাঠ পড়াতে চলেছে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় - এখন থেকে ‘ভূতবিদ্যা’ নিয়ে পড়াশোনা করলে রীতিমতো মিলবে সার্টিফিকেট। এতো দিন নানা বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে সিলেবাসে। কিন্তু এহেন বিষয় যে এক্কেবারে নতুন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মূলত ভূত আছে না নেই সে বিতর্ক বাদ দিলে যারা বিষয়টিতে ভয় পান তারা অনেকসময় সাইকোস্যোমাটিক ডিসঅর্ডারের প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারও কারও মধ্যে সাইক্যোলজিকাল সমস্যাও শুরু হয়। আর এসবের চিকিৎসা ঠিক কীরকম হতে পারে, ছ’মাসের কোর্সে ডাক্তারদের সেসব শেখার সুযোগ করে দিচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। এই অজানা কারণটি যে ভূত কেন্দ্রিক বা তার অস্তিত্বের প্রতি এক তীব্র ভীতি তা আধুনিক যুগেও মানুষের বিশ্বাস এড়ায়নি। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলার এই কোর্সটি জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হয়েছে। এমবিবিএস, ব্যাচেলর অফ আয়ুর্বেদিক মেডিসিন এন্ড সার্জারির ডাক্তাররা এই বিষয়টি শিখতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ভূত সম্পর্কিত রোগ বা অসুস্থতার চিকিৎসা হবে আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে, এমনটিই জানিয়েছেন আয়ুর্বেদিক ফ্যাকাল্টির ডিন যামিনী ভূষণ ত্রিপাঠি। কোর্স শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সার্টিফিকেটও প্রদান করা হবে সমস্ত ডাক্তারদের। আসলে বিষয়টি মজার বা বই পর্যন্ত সীমাবদ্ধ হলে একরকম। কিন্তু যদি কারোর মানসিক সমস্যার কারণ হয় তাহলে তা সত্যি চিন্তার ও বাস্তবিক ভয়ের কারণ। বৈজ্ঞানিক যুক্তিতে এই ভূত বাবাজির অস্তিত্ব হয়তো নেই আবার সেই বিজ্ঞানকেই কাজে লাগিয়ে ভূত প্রেমীদের দাবি তিনি অবিনশ্বর। কিন্তু মানুষের ভীতি কাটাতে এবং সুস্থতা রক্ষায় সর্বোপরি সুস্থ সমাজ এর জন্য এই বিষয় এক্কেবারে অভিনব। এখন এর সাফল্য ঠিক কতটা বাস্তবিক ক্ষেত্রে কার্যকরী হয় সেই দেখার।