পুজোর অন্তিমপর্বে বিসর্জনের আগে আসে বরণ পর্ব। লাল পাড় শাড়ির সাবেকি সাজে বরণের থালা হাতে মাকে ব রণ করেন এয়োস্ত্রী মহিলারা। বিবাহিতা মহিলারাই কেবল মাত্র অংশ নিতে পারেন এই বরণ পর্বে। কিন্তু এই চেনা রেওয়াজ একেবারে অন্য ধারায় দেখা যায় ভদ্রেশ্বর তেতুঁলতলা জগদ্ধাত্রী পুজোয়।
এই পুজোতে বিদায় বেলায় প্রতিমাকে বরণ করেন সেখানকার পুরুষরা। পরণে শাড়ি, কপালে লাল টিপ, হাতে বরণের থালা নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে বরণ সম্পাদন করেন তাঁরা।
তেঁতুলতলার পুজোয় রীতিমতো জাঁকজমক হয়। স্থানীয় মতে, তেঁতুলতলার মা জগদ্ধাত্রী খুবই জাগ্রত। তেঁতুলতলা বারোয়ারি জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির এই পুজো ২৩০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে।পুজোয় পুরোহিত থাকেন প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন। ১৫০টির বেশি বেনারসি দিয়ে দেবীর বস্ত্র তৈরি হয়। দেবীর গায়ের রং ভোরের সূর্যের মতো লাল।
কীভাবে এই অদ্ভুত প্রথার উদ্ভব?
কীভাবে এই প্রথা শুরু হল তা নিয়ে একটি কাহিনি শোনা যায়।
কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান দাতারাম সুর গৌরহাটিতে বসবাস করতেন। তিনি রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের অনুমতি নিয়ে, দুই বিধবা কন্যার সহায়তায় বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো করেন। কালের নিয়মে বাড়ির সেই পুজো থমকে যায়। বরং তাঁর বাড়ির জগদ্ধাত্রী চলে আসে তেঁতুলতলা বারোয়ারিতে। কেউ কেউ বলেন, দাতারাম সুরের কন্যারা যে হেতু পুজো শুরু করেছিলেন, তাই তাঁদের স্মরণে পুজো বারোয়ারি হওয়ার পর থেকে এই ভাবে দেবীবরণ হয়।
আবার একটি মত বলে, সেই সময় ফরাসিরা এবং পরবর্তী কালে ইংরেজরা এই পুজো দেখতে আসতেন। বাড়ির মেয়েরা তাঁদের সামনে বেরোবেন না বলে পুজোর যাবতীয় কাজ করতেন পুরুষরা। সেই থেকেই এই প্রথার জন্ম।