রাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ে উন্নতি করার লক্ষ্যে সরকারি তরফে ৯২ জন চিকিৎসক এবং নার্স সিঙ্গাপুরে গিয়ে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের ব্যবস্থা কি করে আরও ভালো করা যায়, তার ট্রেনিং নিয়ে এলেন। জানুয়ারি থেকেই পেপারলেস প্রযুক্তিতে জুড়ল রাজ্যের ৬৭টি ক্রিটিক্যাল কেয়ার এবং হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট।
গ্লোবাল বিজনেস সামিট ২০১৫-য় রাজ্যের ক্রিটিক্যাল কেয়ার পরিষেবা আরও উন্নত করার লক্ষ্যে, স্বাস্থ্য দফতর সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সিংগ হেলথ-এর সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করেছিল। সেই অনুযায়ীই সিঙ্গাপুরের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞদের কাছে কাজ শিখেছেন-বলা ভালো প্রশিক্ষণ পেয়েছেন রাজ্যের চিকিৎসক-নার্সরা। প্রথম ধাপে রাজ্যে এসে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা ১৬জন চিকিৎসক ও ১৮০ জন নার্সকে ক্রিটিক্যাল কেয়ারের ট্রেনিং দেন। তারপর তাঁদের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে ২০ জন চিকিৎসক ও ৭২জন নার্সিং স্টাফকে স্বাস্থ্য বিভাগের সমস্ত ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এবং হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট থেকে বেছে নেন তাঁরা। বাছাই করা চিকিৎসক ও নার্সরা চার পর্যায়ে সিঙ্গাপুরে গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে এসেছেন। পরিচ্ছনতা বজায় রাখা থেকে ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীর পরিচর্যা-সব ওখানে গিয়ে হাতে-কলমে শিখেছেন তাঁরা। যা, কাজের জায়গায় ফিরে তাঁদের সমস্ত কাজ গুছিয়ে করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীন স্টাডিতেও প্রমান পাওয়া গেছে যে, বিদেশের ট্রেনিং যথেষ্ট কাজে এসেছে। স্বাস্থ্যদফতরের সচিব জানান, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে সংক্ৰমণ নিয়ন্ত্রণের হার অত্যন্ত ভালো হয়েছে, বেড টার্ন আউট বেড়েছে, রোগীদের রেফারেলের হার কমেছে। সর্বোপরি রাজ্যের সমস্ত ক্রিটিক্যাল কেয়ার এবং হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট এখন পেপারলেস প্রযুক্তিতে জুড়েছে। আগে বিভিন্ন রকম রেজিস্ট্রার মেইনটেইন করতে চিকিৎসক-নার্সদের যে সময় ব্যয় হত, এখন সেই সময়টা তারা রোগীর পরিচর্যায় ব্যবহার করতে পারছেন।
সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন রোগের জন্য বিভিন্ন রকম ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট রয়েছে। সপ্তাহে একদিন 'গ্রান্ড রাউন্ড' হয়। বিভিন্ন ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের খারাপ রোগীদের কেস স্টাডি আলোচনা করা হয়। কোন ম্যানেজমেন্টে কোথায় কি ভুল রয়েছে, তার বিচার করে একে অপরকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। এইভাবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে যে কোনো সমস্যার সমাধান সকলে মিলে করেন তাঁরা। এখানেও যদি এইভাবে চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে চিকিৎসার গোটা ধারনাটাই পাল্টে যাবে। যথেষ্ট ভালো চিকিৎসা পাব আমরা এটা বলাই যায়। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার বদলে রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী টেস্ট করানো, ক্লিনিক্যাল এক্জামিনেশনে জোর দেওয়া এবং একজন রোগীর শুশ্রূষায় দলগতভাবে যোগ দেওয়া- এগুলিও কিছুদিনের মধ্যেই শুরু করার পরিকল্পনা চলছে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগে।