বাজারে সৌন্দর্য্য ধরে রাখার জন্য অনেক ধরণের উপাদান পাওয়া যায়।কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই বাজারচলতি জিনিসের থেকে ভরসা রাখেন প্রাকৃতিক জিনিসের উপরেই। সেই ক্ষেত্রে বেসন থেকে শুরু করে, টকদই, মধু প্রভৃতি জিনিস আমরা ব্যবহার করে থাকি। চাল ধোয়া জলও যে ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী তা আমরা অনেকেই জানি।কিন্তু ভাত তৈরী হয়ে যাওয়ার পর সেই মাড়ও যে রূপচর্চার কাজে লাগে তা কি জানা আছে? চলুন আজ ভাতের মাড়ের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা যাক.........
১) রোদ থেকে অনেকের ত্বকেই জ্বালাভাব সৃষ্টি হতে পারে। সেই জ্বালাভাব কমানোর জন্য বরফ বা সেইজাতীয় কোনো জিনিস ব্যবহার করে থাকে বেশিরভাগ মানুষ।কিন্তু জানা গেছে, ভাতের মাড় মিশ্রিত জল দিয়ে যদি রোজ দুইবেলা করে স্নান করা যায় তাহলে ত্বকের জ্বালাভাব খুব সহজেই কমে যায়।
২) মুখের সৌন্দর্য্য এক নিমেষে নষ্ট করতে প্রয়োজন একটি মাত্র ব্রণর। আর সেই ব্রণ কমাতে গিয়েও কালঘাম ছুটে যায় সকলের।সেই ক্ষেত্রেও উপকার মিলতে পারে ভারের মাড়ের সাহায্যে।মাড় ঠান্ডা করে একটি তুলোর বলের মধ্যে করে নিয়ে ব্রণর উপরে লাগিয়ে নিন। দিনে অন্তত ২ থেকে ৩ বার এই পদ্ধতি ফলো করুন। ব্রণর সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে বাধ্য।
৩) তীব্র সূর্যালোকে বাইরে বেরোনোর ফলে ত্বকে ট্যান পড়ার সমস্যা আজকাল প্রায় সকলেরই হচ্ছে। এর জন্য পার্লারে গিয়ে হাজার হাজার টাকা খরচ করার প্রয়োজন পড়বে না। এর জন্য হাতের কাছে থাকা ভাতের মাড় উপকার করে থাকে।ভাতের মাড় ঠান্ডা করে একটি তুলোর সাহায্যে রোদে পোড়া জায়গাগুলিতে লাগিয়ে নিন।কিছুদিন এইভাবে ব্যবহার করার ফলে ট্যান খুব কম দিনেই উঠে যায়।
৪) ত্বকের কোনো জায়গায় হাইপার পিগমেন্টেশন থাকে তাহলে সেইসব জায়গাতেও ভাতের মাড় লাগিয়ে রেখে দেওয়া গেলে কালচে দাগ খুব সহজেই উঠিয়ে ফেলা যাবে।এর সাথে সাথে ভাতের মাড় ব্যবহারের ফলে ত্বকের উজ্জ্বলভাব বজায় থাকে। ত্বক বেশি ড্রাই হয়ে গেলেও ভাতের মাড় ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়া আনতে সাহায্য করে থাকে।
৫) চুলের নানা সমস্যা সমাধানের জন্য ভাতের মাড় খুবই উপকারী।ভাতের মাড় জল দিয়ে পাতলা করে নিয়ে শ্যাম্পু করার পর যদি চুলে দেওয়া যায় তাহলে চুল যেমন স্বাস্থ্যজ্বল হয় তেমনই দুইমুখ চুলের সমস্যাও নির্মূল হয়ে যায়।
৬) ত্বক যদি খুব বেশি ড্রাই হয়ে যায় তাহলে ভাতের মাড়ে তুলো ভিজিয়ে টোনারের মতো করে ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে ভাতের মাড়।
৭) ভাতের মাড় খেলে শরীর সুস্থ থাকে।ভাতের মাড়ে রয়েছে ৮ ধরণের এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড যা দেহের কোষ এবং পেশিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। এতে থাকা উচ্চ মাত্রায় শর্করা শরীরকে কর্মচঞ্চল করে তুলতেও সাহায্য করে থাকে।
৮) ত্বকে যেখানে চর্মরোগ হয়েছে সেইসব জায়গায় ঠান্ডা ভাতের মাড় লাগানো গেলে চর্মরোগ থেকে মুক্তি মেলে।ভাতের মাড়ে থাকা শ্বেতসার জাতীয় পদার্থ চর্টমোরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।
৯) ডায়ারিয়া হলে আমরা অনেকসময় কি খাবো আর কি খাবো না তা স্থির করতে পারি না। কিন্তু এইসময় যদি ভাতের মাড়ের সাথে এক চিমটি নুন মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে দ্রুত ডায়রিয়ার নিরাময় হয়ে থাকে।
ভাত রান্নার পরে ফ্যান বা মাড় ফেলে দেওয়াটাই আমাদের অভ্যেস। কিন্তু এইসব উপকারিতার কথা মাথায় রাখলে ভবিষ্যতে ভাত তৈরী করার পর ফ্যান ফেলে দেওয়ার কথা আর নিশ্চয়ই ভাববেন না।ভাত তো প্রায় সকলের বাড়িতেই হয়। ত্বকের বা চুলের কোনো সমস্যা হলে তা নিরাময় করার জন্য ভারের মাড়ের উপর ভরসা করতেই পারেন।